আমরা রক্তপাত নয় রক্তদান করি, নৈহাটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের রক্তদান শিবিরে এসে বললেন পুরপ্রধান অশোক চ্যাটার্জী

Main এসপিটি এক্সক্লুসিভ দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • মানুষের কাছে মানুষের পাশে থাকার অন্যতম কর্মকান্ড হচ্ছে রক্তদান শিবির।জানালেন নৈহাটির পুরপ্রধান অশোক চ্যাটার্জী।
  • ‘রক্তের যতটা প্রয়োজন আমরা এখনও কিন্তু সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারিনি।’
  • ‘যারা ধর্মের নামে বিভাজন তৈরি করছেন আমরা সেইসব রাজনৈতিক কর্মীদের কাছে আবেদন রাখি- বন্ধু, রাজনীতি করা অপরাধ নয়।
  • ‘এই রক্ত যে দিল্লির হিংসার ঘটনায় আহতদের কাজে লাগবে না এটা আমি বলতে পারি না।’ বললেন নৈহাটি শহর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সনৎ দে।

  Published on: ফেব্রু ২৮, ২০২০ @ ০১:০৫

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ২৭ ফেব্রুয়ারি:  রক্তের চাহিদা মেটাতে তৎপর নৈহাটি তৃণমূল কংগ্রেস।আর তাই বৃহস্পতিবার নৈহাটি বাস টার্মিনাস চত্বরে এক রক্তদান শিবির ও অঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ১১ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেস কমিটি। সেখানে হাজির হয়ে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে দলের নেতা পুরপ্রধান অশোক চ্যাটার্জী ও কাউন্সিলর সনৎ দে জানালেন রক্তদান ও রাজনৈতিক বিচারধারা নিয়ে তাদের নিজস্ব মতামত।পুরপ্রধান অশোক চ্যাটার্জী বিজেপি-কে উদ্দেশ্য করে বলেই দিলেন- ‘আমরা রক্তপাত নয় রক্তদান করি।’ ছিলেন বিধায়ক পার্থ ভৌমিকও।

রক্তদান শিবির নিয়ে যা বললেন পুরপ্রধান অশোক চ্যাটার্জী

অশোক চ্যাটার্জী বলেন- “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময় বলেন- মানুষের কাছে থাকো, মানুষের পাশে থাকো, মানুষের সঙ্গে থাকো। মানুষের পাশে মানুষের সঙ্গে না থাকলে আমার মনে হয়, ভালো রাজনৈতিক কর্মী হওয়া যায় না। তাই মানুষের কাছে মানুষের পাশে থাকার অন্যতম কর্মকান্ড হচ্ছে রক্তদান শিবির। এই রক্তদান শিবির সনৎ বছরে তিনবার করে। আমি দু’বার করি। যখনই বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের প্রয়োজন হয় তখন তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমরা সেই মতো সেই সময় রক্তদান শিবির করে সেই মুহূর্তের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করি। কারণ, আমরা মনে করি, রক্তের ক্রাইসিস ছিল, আছে এবং তা থাকবে। কারণ, রক্তের যতটা প্রয়োজন আমরা এখনও কিন্তু সেই শূন্যস্থান পূরণ করতে পারিনি। তাই রাজনৈতিক মোকাবিলার করার সঙ্গে সঙ্গে আমরা রক্তদান শিবিরটা করি। আমরা রক্তপাত নয় আমরা রক্তদান করি। তার কারণ ২০১১ সালে পরিবর্তনের পর আমি নৈহাটির কথা বলতে পারি কারণ, নৈহাটিতে একটা রক্তপাত হয়নি।কিন্তু রক্তদান শিবির অনেকগুলো হয়েছে। কখনও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা দিবস, কখনও মনীষীদের প্রয়ান দিবসে আমরা রক্তদান শিবির করেছি।”

রামের রক্তে রহিম বাঁচে আবার রহিমের রক্তে রাম

“আমার মনে হয় যে দলটা আজকে ভারতে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, স্থিতিশীলতার বিঘ্ন ঘটিয়েছে, যে দলটা মানুষের মধ্যে ধর্মের নামে বিভাজন তৈরি করেছে- যে দলটা বলছ্‌ আমরা হিন্দু না মুসলমান আমি সেই দলের কাছে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে একটা বার্তা পৌঁছে দিতে চাই- বন্ধু, ধর্মের নামে তো বিভাজন তৈরি করেছেন; কিন্তু রক্তের নামে বিভাজন আপনারা কিভাবে তৈরি করবেন, বলতে পারেন? রক্তের গ্রুপ নির্ণয় হয়, রক্তের ধর্মের বিভাজন করা যায় না। তাই আপনারা এটাও জানেন যে রামের রক্তে রহিম বাঁচে আবার রহিমের রক্তে রাম। যারা ধর্মের নামে বিভাজন তৈরি করছেন আমরা সেইসব রাজনৈতিক কর্মীদের কাছে আবেদন রাখি- বন্ধু, রাজনীতি করা অপরাধ নয়। আমরাও ৩৩ বছর সিপিএমের বিরোধিতায় রাজনৈতিকভাবে ময়দানে ছিলাম। রক্তপাতের মাধ্যমে বিরোধিতা করিনি। আমরা বিরোধিতা করেছি উন্নয়নের কথা বলে, আমরা বিরোধিতা করেছি রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলে, আমরা বিরোধিতা করেছি রাজনৈতিক সৌজন্যতার কথা বলে। আমরা ঠিক এভাবেই রাস্তায় নেমে মানুষকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতা করেছি।” বলেন অশোকবাবু।

বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বললেন

তিনি এখানেই না থেমে বলতে থাকেন- “আমি ভারতীয় জনতা পার্টির কর্মীদের বলি- রাজনীতি করুন, বিরোধিতা করুন, রাজনৈতিক সৌজন্যতার কথা বলুন, উন্নয়নের কথা বলুন, উন্নয়নের বার্তা পৌঁছে দিন, গঠনমূলক বিরোধিতা করুন- তাতে কোনও আপত্তি নেই।কিন্তু যে ঘটনা আপনারা ঘটিয়েছিলেন ২৩ মে-র পর তা খুবই ভয়ঙ্কর ছিলো। আমার কাছে গতকাল রাতে ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কিছু বিজেপির কিছু ছেলে এসেছিলো। তারা আমার বাড়িতে গেছিলো রাত পোনে বারোটা নাগাদ। কথা বলে আমার সঙ্গে। তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য তারা অনুতপ্ত। তারা ক্ষমা চেয়েছে আমাদের কাছে। বলেছে- কাকা, আমরা অন্যায় করেছি, আমাদের ক্ষমা করে দাও। আমরা বুঝতে পারিনি যে মানুষ আমাদের এইভাবে পরিত্যাগ করবে। একদিন সিপিএমকেও মানুষ বাংলার মানুষ পরিত্যাগ করেছে। আজকে তাদের মাজা সোজা করে দাঁড়ানোর জায়গা রাখেনি।”

রক্তদান শিবিরের আয়োজকদের সাধুবাদ দিলেন কাউন্সিলর সনৎ দে

আর এক কাউন্সিলর সনৎ দে অনুষ্ঠানের আয়োজক ১১ নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কংগ্রেস কমিটির ভরত ঘোষ থেকে শুরু করে বাবুন, রাজা সকলকে শুভেচ্ছা জানান এমন একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার জন্য। তিনি এরপরই বলেন- “অনেকেই বিজেপি করেছে আবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল করেছে।নৈহাটিতে অনেকেই বিজেপি করতো, তাদের বিজেপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে নিয়েছি। তবে রাজনীতি করার তাগিদ যদি কারও থেকে থাকে তবে তা বাবুন, রাজাদের মধ্যে লক্ষ্য করি। নৈহাটিতে যতজন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসে রক্তদানের মতো শিবিরের আয়োজন করেছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। এই রক্তদানের শিবিরের রক্ত যে কোথায় লাগবে তা বলতে পারবো না। এই রক্ত যে দিল্লির হিংসার ঘটনায় আহতদের কাজে লাগবে না এটা আমি বলতে পারি না।”

পার্থ ভৌমিক অনেক কষ্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে টাকা আদায় করে এই বাস টার্মিনাসটা উদ্বোধন করা হয়েছিল। সেটাও ভেঙে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু জায়গায়। তবে তা কার্যকর হবে।

Published on: ফেব্রু ২৮, ২০২০ @ ০১:০৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

9 + 1 =