শিল্পীর শিল্প আজ সঙ্কটের মুখে, কি হবে ওই পরিবারগুলির

Main রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা– কৃষ্ণা দাস

Published on: অক্টো ৩১, ২০১৮ @ ২৩:১৫

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ৩১অক্টোবরঃ হাসতে তাদের মানা-এই কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। সব বয়সের মানুষের মুখে হাসি ফোটানো তাদের আনন্দ দান করেই তিনি তৃপ্ত। এভাবেই পেশা আর জীবনের মঞ্চে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে কসুর করেন না তিনি। কিন্তু সব কিছু তো নিজের ইচ্ছা তো হয় না- সময়, পরিস্থিতি, প্রেক্ষাপট বহু সময় তা জটিল করে তোলে আর তখন তা হয়ে ওঠে সঙ্কটময়। আজ তেমন পরিস্থিতির মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছেন উত্তরবঙ্গের প্রখ্যাত হাস্য কৌতুক শিল্পী জয়ন্ত সিংহ রায়। এর ফলে তাঁর উপর নির্ভরশীল বেশ কিছু পরিবারের সামনে নেমে এসেছে ঘোর দুর্দিন।

খালি হাসলে কিংবা হাসালে কি কারও পেট ভরে? শিল্পী জয়ন্তবাবুর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ফলে তাঁকে বেছে নিতে হয় আয়ের আরও এক পথ। যে পথে উপার্জনের পাশাপাশি আছে মানুষকে বিনোদন দেওয়ারও রসদ। সেই কথা ভেবে তিনি এক সময় আতসবাজির কারখানা খোলেন ফাঁসিদেওয়া লিউসিপুখিরিতে।

আর সেই কারখানায় কাজে নেন এলাকার প্রায় ১৫টি পরিবারের সদস্যদের। জয়ন্তবাবুর নিজের কথায় সরকারি সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই তিনি কারখানার কাজ শুরু করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে কারখানা ভালই চলছিল। কিন্তু চলতি বছরে পর্যাপ্ত সামগ্রীর যোগানের অভাবে ধুঁকছে তাঁর এই শিল্প। ফলে তাঁর এমন সঙ্কটে দীপাবলীর আগেই ওই পরিবারগুলির মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। কপালে ভাঁজ পড়েছে। এবার তাহলে কি হবে? কোথায় যাবে? কি ভাবেই বা চলবে তাদের ছাপোষা এক চিলতে সংসার। এসব ভাবনা আজ শিল্পী জয়ন্তবাবুকে অস্থির করে তুলেছে।

সম্পূর্ণ আইন মেনে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও বড় জলের ট্যাঙ্কের ব্যবস্থা রেখে রীতিমতো নিরাপত্তা ও সুরক্ষার রক্ষাকবজে মুড়ে কারখানাটি চালানো হয়। এমনটাই দাবি বাজি কারখানার কর্ণধার জয়ন্ত সিংহ রায়-এর। তিনি জানান, এখানে যাতে কোনওরকম আগুনের ছোঁয়া না লাগে সে কারণে ছেলেদের কাজে রাখা হয় না। তার মতে, ছেলেরা যেহেতু ধুম্রপান করে থাকে, তাই তাদের রাখা হয় নি।

খাদি ভিলেজ বোর্ডের সহায়তায় গড়ে তুলেছেন শিলিগুড়ির একমাত্র বাজি কারখানাটিকে। বিগত ২১ বছর ধরে শিলিগুড়ির পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও বাজি সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এখানে তুবড়ি ও রঙ মশলা জাতীয় নানা রঙের আলোর বাজি তৈরি করা হয়। শব্দ বাজি নয়। কিন্তু এত সবের পরেও পর্যাপ্ত সামগ্রীর যোগান না থাকায় এবছর চাহিদা মতো বাজি তৈরি করা যায়নি-হতাশার সুরে বলছিলেন জয়ন্তবাবু। ফলে এর প্রভাব যে কারখানার কারিগরদের উপর পড়বে তা ভেবেই অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েছেন তিনি। একজন শিল্পীর কাছে যদি তার সাধের প্রিয় শিল্পই সঙ্কটময় হয়ে ওঠে তাহলে কিভাবে যে সামাল দেবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না উত্তরবঙ্গের এই শিল্পী।কোনও উপায় কি আছে?

Published on: অক্টো ৩১, ২০১৮ @ ২৩:১৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 16 = 23