কোথায় গেল ইকা! পরিবারের ছোট্ট সদস্যকে দেখতে না পেয়ে ওরা যে আজ বড়ই অসহায়

Main বন্যপ্রাণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-কৃষ্ণা দাস

Published on: অক্টো ৩১, ২০১৮ @ ২৩:৩৯

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ৩১অক্টোবরঃ সেটা ছিল সিনেমা আর এটা একেবারে বাস্তব ঘটনা। সিনেমায় দুই ভাইয়ের শেষে দেখা হয়েছিল, ফিরে গেছিল তারা তাদের পুরনো আস্তানায়। এক্ষেত্রে সে সুযোগ আর পেল না ছোট্ট ইকা। সামান্য এক চোট তাকে চিরদিনের জন্য তার মা ও দুই দিদির কাছ থেকে চিরতরে সরিয়ে দিল। অবলা অসহায় বাঘিনী শিলা ছোট্ট মেয়েটিকে দেখতে না পেয়ে নিস্তেজ হয়ে রইল সারাটা দিন। ঠিক সেভাবেই বোনকে হারিয়ে দুই দিদিও খেলা বন্ধ করে মায়ের পাশেই পড়ে রইল।

২০০৪ সালে দুটি ব্যাঘ্র শাবককে ঘিরে এক অসাধারণ সিনেমা নির্মাণ হয়েছিল। জিন-জ্যাকুয়েস অ্যান্নয়েড-এর পরিচালনায় ‘টু ব্রাদার্স’ সিনেমাটিতে দেখানো হয়েছিল দুই ব্যাঘ্র ভাইয়ের জীবন বৃত্তান্ত। কিভাবে তাদের উপর অত্যাচার চলেছে। কত অসহায় ভাবে তাদের কাটাতে হয়েছে। শেষে দুই ভাই নিজেদের চিনতে যখন পারল তখন তারা ঠিক করল আবার তারা নিজেদের জায়গায় ফিরে যাবে। অর্থাৎ শেষে তারা জঙ্গলেই ফিরে যায়।

কিন্তু সেটা ছিল সিনেমা। আর এটা একেবারে বাস্তব ঘটনা। তাই এখানে তিন ব্যাঘ্র কন্যার মধ্যে সবচেয়ে ছোটটিকেই চিরদিনের জন্য চলে যেতে হল। আর এটা ঘটল শিলিগুড়ি বেঙ্গল সাফারি পার্কে।

সাফারি পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক অরুন মুখার্জি জানান, দিন সাতেক আগে খেলতে খেলতে পেছনের একটি পা’য়ে চোট পায় শাবকটি। তারপর থেকেই চিকিৎসা চলছিল তার। চারদিন আগে তার শারীরিক অবস্থার সামান্য উন্নতি হলেও পরের দিন থেকে ফের অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপর মঙ্গলবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

অরুন বাবু আরও জানান, ঘটনার কথা জানার পরই উত্তরবঙ্গে সফররত মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেন। তিনি বন্যপ্রাণী ভালবাসেন এবং যেহুতু তিনি শাবক তিনটির নামকরন করেছিলেন তাই শাবকের মৃত্যুতে তিনিও ভীষনই মর্মাহত।

একজন মানুষ তার প্রিয়জনকে হারালে নিজের ব্যাথা-বেদনা প্রকাশ করে কেঁদে কেঁদে। আর এখানে বাঘিনী শীলাকে দেখা গেল কয়েকবার গর্জন করে এক ধারে চুপচাপ বসে থাকতে। সবার ছোট ছিল ইকা। বড় আদরের কন্যা ছিল সে। মা ও দুই দিদি কিকা ও রিকার কাছে কাছেই থাকতে ভালবাসত। সকাল হতেই ছোট্ট ইকা নেই তাদের সঙ্গে। তারা জানতেও পারল না যে রাতেই তাদের পরিবারের ছোট্ট সদস্যটিকে দাহ করা হয়ে গেছে। পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেছে তাদের সকলের প্রিয় ছোট্ট সদস্যটির দেহ।

তাই আজ সকলেই একেবারে নিশ্চুপ হয়ে গেছে। দুই দিদিও আজ বোনের দেখা না পেয়ে কষ্ট চেপে মায়ের পাশে বসেছিল। মাঝেমধ্যে এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখেছে এই বুঝি বোন ছুটে এসে ওদের গায়ে লাফিয়ে উঠে পড়ল, কিন্তু তা যে আর কোনওদিনও হবার নয়- সে কি ওরা বুঝবে?

Published on: অক্টো ৩১, ২০১৮ @ ২৩:৩৯

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

56 + = 58