ভারতে বাঘের সংখ্যা 2967, শীর্ষে মধ্যপ্রদেশ, কর্ণাটক

Main দেশ বন্যপ্রাণ
শেয়ার করুন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার 2018 সালের বাঘ গণনার ফল প্রকাশ করেছেন।

রাজ্য পর্যায়ে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটক।

Published on: জুলা ২৯, ২০১৯ @ ২০:৩৫

এসপিটি নিউজ, নয়া দিল্লি, ২৯জুলাই: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার 2018 সালের বাঘ গণনার ফল প্রকাশ করেছেন। সেই সূত্র জানাচ্ছে, দেশে এই মুহূর্তে 2967 বাঘ আছে। মোদী সেই সঙ্গে জানিয়েছেন যে ভারত হল বিশ্বের মধ্যে বাঘেদের সবচেয়ের সুরক্ষিত ও নিরাপদ আশ্রয়স্থলের মধ্যে একটি। এর আগে 2014 সালে ব্যাঘ্র শুমারি অনুযায়ী দেশে বাঘের সংখ্যা ছিল 2226টি। ওয়াইল্ড লাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া গত বছর সারা দেশে টাইগার রিজার্ভ, ন্যাশনাল পার্ক, অভয়ারণ্য, ছট মাপের বনাঞ্চলের 28 প্যারামিটারে বাঘ গণনা করেছিল।

মোদি জানান যে 9 বছর আগে পিটসবার্গ সম্মেলনে 2022 পর্যন্ত বাঘের সংখ্যা দ্বিগুন করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা এটা মাত্র চার বছরেই করে ফেলেছি।দেশে বাঘ এবং সংরক্ষিত এলাকা বাড়ার ফল আয়ের উপরও পড়েছে।আমি এটা পড়ে জানতে পেরেছি যে রণথম্বোরে গত কয়েকদিনে বাঘ দেখার জন্য এক হজার পর্যটক ভিড় করেছে সেখানে। বাঘের জন্য সরকার পরিকাঠামো বাড়াচ্ছে।

পরিকাঠামোর সাথে দেশে বাঘের সংখ্যা বাড়ছে

ভারত আর্থিক এবং পরিবেশগত দিক থেকে এগিয়ে চলেছে। আমাদের দেশের রেল যোগাযোগ বেড়ে চলেছে, কিন্তু গাছের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে আগামী প্রজন্মের জন্য পরিকাঠামোর উপর কাজ হয়ে চলেছে। পরিবেশ এবং জঙ্গলকে বাঁচাতে পরিকল্পনাও তৈরি করার প্রক্রিয়া জারি আছে।তবে দেশের মধ্যে রাজ্য পর্যায়ে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। 2014 সালে যেখানে 308টি বাঘ ছিল সেখানে 2018 সালে বেড়ে হয়েছে 526টি। এরপরেই আশাতীত ভালো ফল করেছে কর্ণাটক। সেখানেও বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে 524টি। বাঘের সংখ্যা বেড়েছে উত্তরাখণ্ডেও-442, মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ুতেও।সেখানে সংখ্যা যথাক্রমে 312 ও 264।

দেশে বাঘের সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে

ওয়াইল্ড লাইফ প্রোটেকশন সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া-র সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া শাখার দাইরেক্টর নিতিন দেশাই জানান- ‘এর আগে 2006, 2010, 2014 বাঘ গণনা হয়েছিল। ওই তিন বারে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৮ সালে চতুর্থ বাঘ গণনায় ভারতে বাঘের সংখ্যা প্রত্যাশা পূরণ করেছে অনেকটাই।

বাঘেদের রাজধানী হয়েছে এখন উত্তরাখণ্ড

ভারতে বাঘেদের সংখ্যা বাড়তে থাকায় একথা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে এখানে বাঘ সংরক্ষন নিয়ে ভালো কাজ হচ্ছে। উত্তরাখণ্ড বাঘেদের রাজধানী হয়ে উঠেছে। উত্তরাখণ্ডের প্রতিটি জেলাতেই বাঘেদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। বন বিভাগের পাশাপাশি রাজ্য সরকারও এ ব্যাপারে বেশ উৎসাহী হয়ে উঠেছে। উত্তরাখণ্ডে 1995 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত বাঘেদের সংখ্যা সবেচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।

1973 সালে শুরু ব্যাঘ্র প্রকল্প

দেশে এক সময় বাঘের সংখ্যা 40 হাজারেরও বেশি ছিল। 1900 সালেজ মধ্যভাগে বাঘের শীকার বাড়তে থাকায় সংখ্যা তখন থেকে কমতে শুরু করে। এসব দেখার পর 1973 সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে ব্যাঘ্র প্রকল্প শুরু করেন। এর পর থেকেই দেশের মধ্যে বাঘ শিকার এবং তাদের সংরক্ষণে গতি আসে। এর মূল উদ্দেশ্য হল বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের সুরক্ষিত ঠিকানায় আশ্রয় দেওয়া।বাঘের বৈধ শিকার এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা।

বাঘ সংরক্ষণ থেকে হতে পারে লাভ

২০১৭ সালের জুলাই আই এফ রিপোর্টে বলা হয়েছে বাঘ সংরক্ষণে ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। বাঘ থেকে আসা এই আর্থিক সুবিধার উপর গবেষণা করতে গিয়ে ভোপালের ইনস্টিটিউট অফ ফরেস্ট ম্যানেজমেন্ট-এর অধ্যাপক মধু বর্মার পর্যালোচনায় ভারত-অস্ট্রেলিয়ার বৈজ্ঞানিক দল করেছেন। এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে যে বাঘ সংরক্ষণে আমাদের মঙ্গল মিশনের চেয়ে অধিক পুঁজিগত লাভ মিলতে পারে। সেখানে এমনটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে যদি সারা দেশের বাঘের আবাদি মেলানো যায় তবে ভারতীয় অর্থব্যবস্থায় বাঘ থেকে প্রতি বছরে৪ ৫.৭ লাখ কোটি টাকা ফায়দা হতে পারে।

অর্থব্যবস্থায় বাঘ কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

বাঘ থেকে উঠে আসা লাভের অঙ্ক দেখে অনেকের মনে এই প্রশ্ন হয়তো জাগছে কেন বাঘ এত গুরুত্বপূর্ণ? এটা বোঝার জন্য আমেরিকার এলো স্টোন ন্যাশনাল পার্কের একটা ঘটনা জানা খুব দরকার। আমেরিকা সরকার একবার পার্কের সমস্ত ভেড়িকে বুজিয়ে দিয়েছিল। এতে জঙ্গলের সমস্ত শাকাহারি প্রাণীর সংখ্যা দ্রুত বেড়ে গেছিল। তারা জঙ্গলের সমস্ত বনের গাছপালা খেয়ে শেষ করে দিয়েছিল। এর ফলে জঙ্গলের মাটি কম জোড় হয়ে পড়েছিল। জলের অভাবে বনস্পতি নষ্ট হতে বসেছিল।

জঙ্গলে চারা এবং জলের অভাব দেখা দেয়। জঙ্গলে পশু-পক্ষী, জীব-জন্তুর সংখ্যা কমতে শুরু করে। গাছপালা, জীব-জন্তুতে ভরা জঙ্গল তখন মরুভূমিতে পরিণত হয়। 1995 সালে এমনটা দেখে ফের সেখানে সরকার ভেড়ি স্থাপন করে। এখন সেখানে আগের মতো চেহারা নিয়েছে। ঠিক যেমন এলো স্টোন পার্কে ভেড়ির প্রয়োজনীয়তা আছে সেরকমই আমাদের দেশের জঙ্গলেও বাঘের প্রয়োজনীয়তা আছে।    য়তা আছে সেরকমই আমাদের দেশের জঙ্গলেও বাঘের প্রয়োজনীয়তা আছে।

Published on: জুলা ২৯, ২০১৯ @ ২০:৩৫


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

92 − = 90