দীনমজুরের কাজ করেই স্বপ্নপূরণের লড়াইয়ে জয়ী হতে চায় মেধাবী স্বদেশ

এসপিটি এক্সক্লুসিভ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল                                               ছবি-বাপন ঘোষ

Published on: জুন ৬, ২০১৮ @ ২৩:১৯

এসপিটি নিউজ, সবং, ৬জুনঃ এটাই হয়। মেধা আছে। উচ্চশিক্ষার ইচ্ছা আছে। সু-ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নও আছে মনে। নেই কেবল অর্থ। দীনমজুরের ছেলে হয়ে সেই অর্থাভাবের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে।শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে মাধ্যমিকের কৃতী ছাত্র স্বদেশ সানা। ৫৮১ নম্বর পেয়ে সম্মানের সঙ্গে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার বাধা টপকে গেলেও এখন সে পড়েছে মহা দুশ্চিন্তায়। তবে কি মাঝপথেই থেমে যাবে তার পড়াশোনা! এমন দুর্ভাবনায় মুষড়ে পড়েছেন সবং-এর মালপাড় এলাকার স্বদেশ সানা।

বাবা শুকদেব সানা দীনমজুরের কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালান। মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রায় একপ্রকার বিনা পয়সায় ছেলের পড়ার সুযোগ হয়েছে। স্কুলের শিক্ষক থেকে বেশ কয়েকজন তাঁকে বই-খাতা দিয়ে সাহায্য করেছেন। স্বদেশ তাদের সাহায্যের মুল্য রেখেছে মাধ্যমিকে ৫৮১ নম্বর পেয়ে।

স্বদেশ বাংলায় পেয়েছে ৮২। ইংরাজিতে ৬৪, গণিতে ৮৬, ভৌতবিজ্ঞানে ৮০, ভূগোলে ৯১। কিন্তু এত ভালো ফল করার পর তার কি শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছা সফল হবে? কারণ, বাবা শুকদেব ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, অত টাকা তাঁর পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। পড়ার খরচও দেওয়া অসম্ভব। তাহলে কি হবে স্বদেশের? এই প্রশ্ন এখন তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে মেধাবী এই ছাত্রটিকে।

স্বদেশ স্বপ্ন দেখে জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক হওয়ার। কিন্তু তার জন্য তাকে তো অনেক দূর পর্যন্ত পড়াশুনো করতে হবে। পরিবার ‘নুন আনতে পান্তা ফুরনো’র মতো অবস্থা। চোখের সামনে দেখে আসছে বাবাকে কিভাবে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে তাদের মুখে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার যোগাড় করে চলেছেন। তাঁর কাছে এত টাকা দুঃস্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়।

তবু বাবার মনে ছেলেকে মানুষ করার ইচ্ছে তো থেকেই যায়। তাই তো কষ্টের কথা বলার সময় চোখের কোন ভিজে আসছিল তাঁর। বলছিলেন, “দীনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। ওকে একটা ভালো জামা-প্যান্ট পর্যন্ত কিনে দিতে পারিনি। এবার আরও অনেক টাকার ব্যাপার। কিভাবে ছেলেকে যে পড়াবো ভেবে কুল পাচ্ছিনা।”

তবে হাল ছাড়তে রাজী নন স্বদেশ। স্বদেশের মাটিতে থেকেই এই কষ্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হতে চায় স্বদেশ। এজন্য তাঁকে যদি দীনমজুরের কাজ করতে হয় তাও সে করতে প্রস্তুত আছে। কারণ, তাঁকে যে বড় হতেই হবে। শিক্ষক হওয়ার স্বপ্নপূরণ যে করতেই হবে। দূর করতে হবে বাবা-মায়ের চোখের জল।

Published on: জুন ৬, ২০১৮ @ ২৩:১৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

68 − = 67