‘ কারুর দালালি করছেন করুন, মনে রাখবেন মমতা ব্যানার্জি আপনাদের চাকর-বাকর নয় ‘

রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ৮, ২০১৮ @ ২১:৩৪

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৮ মার্চঃ একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে একদিকে যেমন রাজ্যের (সর্বাধিক বহুল প্রচারিত) এক সংবাদপত্রকে যেমন সবক শেখালেন ঠিক তেমনই নাম না করে বিজেপি নেতাদের বাংলা ভাষের প্রয়োগ নিয়েও বিশেষ পাঠ পড়ালেন। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মূর্তিতে কালি লাগানোর ঘটনার সংবাদ পরিবেশনে ঐ সংবাদপ্ত্রটি যেভাবে শিরোণামে “মমতার পাড়া……” সংবাদ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন তার তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন-সারা বাংলাই তাঁর পাড়া। এভাবে কাউকে অসম্মান করবেন না।কারুর দালালি করছেন এতে আমার কোনও আপত্তি নেই, তাই বলে মনে রাখবেন মমতা ব্যানার্জী আপনাদের চাকর-বাকর নয়। কথায় কথায় কিছু বোঝাতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জীকে টেনে আনছেন সব কথায়। মমতা ব্যানার্জীও কিন্তু অনেককে টেনে আনতে পারে। করি না বলে দুর্বল ভাববেন না। পাশাপাশি নাম না করে বুধবার বিজেপির নেতাদের অশালীন মন্তব্য প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ভাষার প্রয়োগ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের চিন্তা করা উচিত।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেয়োরোডের সভায় দাঁড়িয়ে বলেন, এই শক্তি আমরা চাই না যারা হিন্দু-মুসলমানের ভাগাভাগি করে। সাম্প্রদায়িকতার দল আমাদের বাংলায় নেই। সারা ভারতবর্ষে থাকবে না বলেই আমার বিশ্বাস।হিন্দু হোক মুসলমান হোক, খ্রিস্টান হোক, শিখ হোক পাঞ্জাব, গুজরাট, মারাঠা, দ্রাবিড়, উৎকলও বঙ্গ।আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে ভালোবাসি। সবাইকে নিয়ে চলাটাই তো আমাদের কাজ।যতদিন বাঁচব, এটাই আমরা করবো। ভাগাভাগি করি না। ভাগাভাগি করে সমাজে আমরা থাকতে পারি না।

তিনি বলেন, আর একটা কথা মনে রাখবেন, মানুষের মুখের ভাষা মানুষের পরিচয়। এক একটা মানুষ যা বক বক করছে আর তাদের মুখের যা ভাষা এই ভাষা শুনে লজ্জ্বা হয়। যে এরা কি বাংলার মানুষ! বাংলার মানুষ তো এ ভাষায় কথা বলে না। বাংলার মানুষ যখন কথা বলে তখন ভদ্র ভাষায় বলে। সুন্দর ভাষায় বলে।বাংলার মানুষ কিন্তু কুকথা-অকথা বলে না। কখনও কুকথা বললে টিভিতে হাততালি পাওয়া যায়, দুটো কর্মী হাততালি দেয়। কিন্তু মানুষের কাছে এর বার্তা যায়। ভাষার প্রয়োগ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের চিন্তা করা উচিত।

একটা ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরায়। বিজেপি শুরু করেছে। লেনিন মূর্তি ভাঙছে। আমাদের তো মতের পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু আমি কেন আর একজনকে অসম্মান করবো।কেউ হো চি মিনকে সমর্থন করতে পারে, কেউ কার্ল মার্কসকে করতে পারে, কেউ নজরুলকে করতে পারে, কেউ রবীন্দ্রনাথকে করতে পারে, কেউ গান্ধিজিকে করতে পারে, কেউ বিবেকানন্দকে করতে পারে, কেউ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিকে করতে পারে। মনে রাখবেন, মানুষে মানুষে ফারাক হতেই পারে। স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শ তার মতো, নজরুলের নজরুলের মতো, রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের মতো, বিবেকানন্দ বিবেকানন্দের জায়গায়। গান্ধিজি গান্দিজির জায়গায়, বাবা সাহেব আম্বেদকর আম্বেদকরের জায়গায়, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ তার জায়গায়, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জিও বাংলায় জন্মেছেন। আমরা তাকে সম্মান করি। তিনি অন্য দলের সমর্থক হতেই পারেন তাই বলে তার মূর্তিতে কালি মাখিয়ে দিয়ে আসব এটা আমাদের কালচার নয়। আমরা এগুলো কখনও পছন্দ করি না।জানান মমতা।

তারপরই তাঁর সংযোজন-কাগজে আমি দেখলাম অদ্ভুতভাবে যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের নিন্দা না করে যেন মমতা ব্যানার্জিকে নিন্দে করছে। লিখছে- “মমতার পাড়ায়” মমতার পাড়া তো সারা বাংলায়।কেওড়াতলাটা আমাদের পাড়া, কালীঘাটটা আমাদের পাড়া, মনে রাখবেন ধর্মতলাটাও আমার পাড়া, ডালহৌসিটাও আমার পাড়া, মনে রাখবেন গোবরাটাও আমার পাড়া, বেলেঘাটাটাও আমার পাড়া, হাওড়াটাও আমার পাড়া, হুগলিটাও আমার পাড়া, বর্ধমানটাও আমার পাড়া, দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ গোটাটাই আমার পাড়া। এটা মাথায় রাখতে হবে। আমি যখন কাজ করি সবার হয়েই করি। এভাবে অসম্মান করবেন না মানুষকে। প্রত্যেক পাড়ার মানুষের সম্মান আছে।

পাঁচটা মাওবাদী ছেলে এসে কি করল, তার জন্য গোটা এলাকাটাকে গালাগালি দিয়ে বেড়াবেন? এটা কোন রাজনীতি? কারুর দালালি করছেন এতে আমার কোনও আপত্তি নেই, তাই বলে মনে রাখবেন মমতা ব্যানার্জী আপনাদের চাকর-বাকর নয়। কথায় কথায় কিছু বোঝাতে গিয়ে মমতা ব্যানার্জীকে টেনে আনছেন সব কথায়। মমতা ব্যানার্জীও কিন্তু অনেককে টেনে আনতে পারে। করি না বলে দুর্বল ভাববেন না। কারণ, আপনারা আপনাদের কাজ করুন আমাকে আমাদের কাজ করতে দিন। আমি এই কথাগুলো বলতাম না যদি না আপনারা উদ্দেশপ্রনোদিতভাবে সমানে এই কাজগুলো না করতেন। যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রত্যককে কনডেম করা হয়েছে।ফাইল ছবি

Published on: মার্চ ৮, ২০১৮ @ ২১:৩৪

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 6 = 4