বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার দাওয়াই- বেশি বাড়াবাড়ি করতে এলে ডাল-ভাত রেঁধে খাইয়ে দেবেন, দয়া করে মাছ-মাংস দিতে যাবেন না

রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ৮, ২০১৮ @ ২১:২৭

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৮ মার্চঃ আগের দিন রীতিমতো অশালীন ভাষা প্রয়োগ করা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। রাজ্যের এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এত কুরুচিকর মন্তব্য করে রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এদিন অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বারের জন্য বিজেপির একজন নেতার নামও উচ্চারন করেননি সভায়।তিনি দলের মহিলাদের বিজেপির বিরুদ্ধে এক জোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আর কাউকে দরকার নেই, তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলারা দাঁড়ালেই বড় বড় কথার মুখ ভেঙে যাবে। একই সঙ্গে তিনি দলের মহিলাদের বলেন- বেশি বাড়াবাড়ি করতে আসলে একটু রান্না করে ডাল-ভাত খাইয়ে দেবেন। মাছ-মাংস দেবেন না দয়া করে। ডাল-ভাত দিয়ে দেবেন। মেয়োরোডের সভায় এভাবেই জবাব দেন তৃণমূল সুপ্রিমো।

মমতা বলেন, মা-বোনেরা এমনভাবে সংঘটিত হোন যেখানে আপনাদের দেখলেই বিজেপি ল্যাজ গুটিয়ে পালাবে। আর কাউকে দরকার নেই, তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলারা দাঁড়ালেই বড় বড় কথার মুখ ভেঙে যাবে। ছোটদের বলার দরকার নেই, অন্যদের বলার দরকার নেই, মেয়েরা দাঁড়িয়ে যান। বড় বড় কথা বেরিয়ে যাবে। দেখে নেব, হ্যান করেঙ্গা, ত্যান করেঙ্গা। বাংলাকে দেখে নেব। কয়েকটাকে বলতে দি বলে বলে।বলার তো কোনও শেষ নেই, বলুক না। ওটা গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু বলতে গিয়ে এমন এমন বলছে যেন মনে হচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসটা মরে গেছে। তৃণমূল কংগ্রেস জায়গা ছেড়ে চলে যাচ্ছে। আছে তো একটা গোবর্ধন সরকার। মানুষের ব্যাঙ্কের সব লোন নিয়ে নিচ্ছে। বিজেপি সরকার এখন বলছে তোমরা ব্যাঙ্কে গোবর রাখো। তাদের একটা সরকার চলছে। চোখ রাঙিয়ে রাঙিয়ে কথা বলছে। চোখ পাকিয়ে পাকিয়ে কথা বলছে। চোখ দেখিয়ে দেখিয়ে কথা বলছে। মিডিয়া তো ভয়ে সেঁদিয়ে গেছে। বাংলার কিছু মিডিয়া আছে তবু এরা ভয়-টয় পায় না। দিল্লির ন্যাশনাল মিডিয়া তো পুরো কিনে নিয়েছে।এজেন্সি গুলোকে পুরো কিনে নিয়েছে। ভাবছে এটাই চলবে।

আমি মা-বোনেদের বলবো-পঞ্চায়েতে আপনাদের ৫০ শতাংশ সংরক্ষন আছে। তপশিলিজাতি-উপজাতি, অনগ্রসর শ্রেণিদের। ভালো করে কাজ করবেন। পঞ্চায়েতের তৃণমূল স্তরে আরও ভালো করে কাজ করতে হবে। মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে। গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। গৃহহীনদের পাশে দাঁড়াতে হবে।মর্যাদার লড়াইয়ে সব মানুষকে পাশে নিয়ে লড়াই করতে হবে।আমি চাই আমার মেয়েদের নিয়ে গ্রামের মানুষ গর্ব করে বল্বে-ওরে, ওই মেয়েটা দারুন কাজ করছে। এ আমাদের গর্ব। এ আমার সমাজের গর্ব, এ আমার জেলার গর্ব। এ আমার রাজ্যের গর্ব। বলেন মমতা।

মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা স্লোগান তোলেন-আজ মহিলারা দিচ্ছে ডাক বিজেপি চলে যাক। ওরা তাড়াতাড়ি বিদায় নিক বাংলার মানুষ, ভারতবর্ষের মানুষ বেঁচে যাক। দু’হাজার ঊনিশ, বিজেপি হবে ফিনিশ। ঔদ্ধত্য হবে ফিনিশ। অহঙ্কার হবে ফিনিশ। দম্ভ হবে ফিনিশ।

তিনি বলতে থাকেন- মনে রাখবেন বাংলার মাটি এই লড়াইটা চিরকাল করেছে আর করবে। ভিয়েতনামে আন্দোলন হলে কলকাতায় স্লোগান উঠত-তোমার নাম আমার নাম ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম। সে রকম মনে রাখবেন ওপার বাংলায় যুদ্ধ হলে এপার বাংলা গান গাইতো। সেরকম মনে রাখবেন দেশে যখনই লড়াই এসছে বাংলা নেতৃত্ব দিয়েছে। বাংলার সবার সঙ্গে লিডারশিপ দিয়ে পিছনে থাকবে সামনে যাবে না। কিন্তু তোমাদের বিসর্জন তো দেবোই আমরা। নাগিনীরা চারিদিকে ফেলেতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস।

দলের কর্মীদের বলেন-জোট বাধুন আগামীদিন একটি ভোটও যেন বিজেপি না পায়।নো ছাড়োন-ছোড়ন। কোনও কম্প্রোমাইজ, কোনও আত্মসমর্পন নয়-আমরা চলি সমুখ পানে কে আমাদের বাঁধবে, রইল যারা পেছুর টানে কাঁদবে তারা কাঁদবে। যারা বড় বড় নাচুনি-ঝুকুনি করে বেড়াচ্ছে, আগামিদিন তাদের দু’চোখ দিয়ে জল বেরোবে। আর বলবে বাঁচাও-বাঁচাও। বাঁচিয়ে দেবো, চিন্তার কোনও কারণ নেই। আমরা বাঁচাবার জন্য সবসময় আছি। আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে কিন্তু আমরা চোখ রাঙানি সহ্য করি না। সুতরাং আমাদের মনে যে শক্তি ও আত্মবিশ্বাস আছে সেটাই বড় পরিচয়। বেশি বাড়াবাড়ি করতে আসলে একটু রান্না করে ডাল-ভাত খাইয়ে দেবেন। মাছ-মাংস দেবেন না দয়া করে। ডাল-ভাত দিয়ে দেবেন। ঠিক আছে!   ফাইল ছবি

Published on: মার্চ ৮, ২০১৮ @ ২১:২৭


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 80 = 90