মণিপুর নিয়ে সরব সুগত বসু, ‘এটা কেন্দ্র-রাজ্য উভইয়েরই ব্যর্থতা’

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জুলা ২৪, ২০২৩ @ ০১:৪৩

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৩ জুলাই: মণিপুর নিয়ে এবার সরব হলেন ইতিহাসবিদ নেতাজী গবেষক ও হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সুগত বসু।রবিবার কলকাতায় টাউন হলে পাবলিক রিলেশন সোসাইটি অব ইন্ডিয়া আয়োজিত রামমোহন রায়ের ২৫১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন। সেখানে তিনি সোজাসুজি বলেন- প্রায় আড়াই মাস বাদে প্রধানমন্ত্রী মণিপুর নিয়ে একতা বাক্য ব্যয় করেছেন। উনি বলেছেন-এটা ভারতবর্ষের লজ্জা। আজ রামমোহন রায়ের পথ ধরে মহিলাদের অধিকার ও মর্যাদা দেওয়ার কথা বলতে হবে, দেশের লজ্জার কথা নয়। পাশাপাশি তিনি এদিন মণিপুরের ঘটনার জন্য কেন্দ্র ও মণিপুরের রাজ্য সরকার উভয়েরই ব্যর্থতাকেই দায়ী করেন।

মহিলাদের সমান অধিকার এবং মর্যাদার কথা বলতে হবে

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মণিপুর নিয়ে সরব হন অধ্যাপক সুগত বসু।প্রায় আড়াই মাস মৌন থাকার পরে অল্প একটি বাক্য খরচ করেছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। ‘এটা ভারতবর্ষের লজ্জা।‘ সেটা তো বতেই। কিন্তু শুধু লজ্জার কথা বললে হবে না, আমাদের যে ভাষায় কথা বলতে হবে সেটা হচ্ছে মহিলাদের সমান অধিকার এবং মর্যাদার কথা। দেশের লজ্জার কথা নয়। সেই কথাই কিন্তু আমাদের জোরালো ভাবে বলতে হবে।

কেন্দ্র সরকার ও মণিপুরের রাজ্য সরকারের উভয়েরই ব্যর্থতা

এরপরেই ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সুগত বসু মণিপুরের ঘটনায় সাফ বলেন- এটা কেন্দ্র সরকার ও মণিপুরের রাজ্য সরকারের উভয়েরই ব্যর্থতা। উভয় সরকারই ব্যর্থ। ‘এই মুহূর্তে চারিদিকে আমরা অন্যায় দেখছি। তবে তাও বলব, সাধারণ মানুষের মধ্যে কিন্তু শুভ বুদ্ধি থাকে। একটা শান্তির ইচ্ছা থাকে। তাই তাদের উপরেই আমি নির্ভর করে থাকব। তারা আবার এগিয়ে আসবে এবং ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্বে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারব।’

মণিপুরে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আজাদ হিন্দ ফৌজের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন

এর আগে তিনি মণিপুরের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন- “যে ভাষায় আলোচনা করছে রাজনীতি মহলে সেই ভাষায় তো আমি কথা বলতে পারবো না। তাই আপনারা প্রশ্ন করলেই আমার মনে হয়- কণ্ঠ আমার রুদ্ধ আজিকে। কি আর বলবো? তবে যখন জিজ্ঞাসা করেছেন তখন বলি- এই যে মণিপুর বা ময়রাণ যেখানে ১৯৪৪ সালে আজাদ হিন্দ ফৌজের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম হয়েছিল নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে।সেদিন মণিপুরে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ আজাদ হিন্দ ফৌজের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আপনারা আমার মা কৃষ্ণা বসুর একটা লেখা পড়তে পারেন, মণিপুরের যুদ্ধক্ষেত্র নিয়ে লিখেছিলেন। সেই ১৯৭২ সালে গিয়ে, যখন আজাদ হিন্দ ফৌজকে পিছু হঠতে হল। তখন মণীপুরের ১৭জন স্বাধীনতা সংগ্রামী তার মধ্যে মিলিটারি ছিলেন ১৫ জন পুরুষ দু’জন মহিলা ছিলেন, তারা এক সঙ্গে রিট্রিট করে রেঙ্গুন পর্যন্ত গিয়েছিলেন। ঠিক যেমন নাগাল্যান্ডে ফিজো আজাদ হিন্দ ফৌজের পাশে থেকে এক সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন ঠিক তেমনই রিট্রিট করে রেঙ্গুনে গিয়েছিলেন।”

“আমি এটুকুই বলব, সেই ঐতিহ্য যেন আমরা মনে রাখতে পারি। যাতে জাত্যাভিমানের ঊর্ধ্বে উঠে যদি মণিপুরের সমস্ত মানুষকে সমান অধিকার দিতে পারি তাহলে হয়তো এই সুন্দর রাজ্যে আনবার আমরা শান্তি ফিরে পাব।”

পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় হিংসা নিয়ে কথা বলতে চাইলেন না

অধ্যাপক সুগত বসুকে পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত ভোটে হিংসা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে খুব সুন্দরভাবে এড়িয়ে যান। শুধু বলেন- “আমি আশা করব আমরা বাংলায় শান্তি বজায় রাখতে পারব। আজ রামমোহন রায়ের অনুষ্ঠানে এসছি সেখানে আমি অন্য বিষয় নিয়ে কথা বলি, তাহলে রামমোহন রায়ের জীবন থেকে যে শিক্ষা নিতে হবে তার থেকে আমাদের চলে যেতে হবে। তাই তো কেন্দ্র সরকার চেষ্টা করছে, তাই আমাদের এখন মণিপুর নিয়েই আমাদের কথা বলা উচিত।”

“আমি আবার বলব- রামমোহন রায়ের জীবন থেকে শিক্ষা নিতে বলব। আর হচ্ছে মহিলাদের সমান অধিকার আর মর্যাদা এবং দ্বিতীয় হচ্ছে সংবাদ মাধ্যমের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা এবং তৃতীয় হচ্ছে প্রকৃত গণতন্ত্রের জন্য লড়াই। রামমোহন রায় বলেছিলেন- প্রাচীনকালেও যে পঞ্চা্যেত ছিল সেখানেও সমান অধিকার ছিল।” আশা করি, আমরা সেরকম পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে পারব। বলেন সুগত বসু।

Published on: জুলা ২৪, ২০২৩ @ ০১:৪৩


শেয়ার করুন