BTF শুরু: পর্যটনপ্রেমীদের জন্য কলকাতায় সবচেয়ে বড় পর্যটন মেলার আয়োজনে ATSPB

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

ভারত সরকার পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রচার করছে ‘দেখো আপনা দেশ’- রোশনি সোনিয়া তিরকি
পর্যটন মেলার আয়োজনের মধ্য দিয়ে গোটা দেশে একটা বার্তা পৌঁছয় যে বাংলা ভারতের একটা শিরমোহর রাজ্য- হিংলাজ দন রতনু
এটিএসপিবি-র সভাপতি সৌরভ দত্ত-র গণমাধ্যমের কাছে আবেদন- বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্ট সম্পর্কে আমাদের প্রচারে সহায়তা করুন, যাতে আরও বেশি মানুষ আর্থিকভাবে উপকৃত হতে পারে
Published on: ফেব্রু ৮, ২০২৫ at ১০:৫২
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৭ ফেব্রুয়ারি: এবার আরও বড়। আরও জমজমাট বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্ট বা বিটিএফ। এই মুহূর্তে পর্যটনপ্রেমীদের জন্য কলকাতা তথা গোটা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বড় পর্যটন মেলা বলা যেতেই পারে। অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অফ বেঙ্গল গর্বের সাথে বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্টের নবম সংস্করণের আয়োজন করেছে। প্রতিবারের মতো এবারও সরকারি পর্যটন সংস্থা, বেসরকারি পর্যটন উদ্যোগ, সেইসাথে হোটেল এবং হোমস্টে কর্তৃপক্ষ তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে হাজির হয়েছে। এখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হল, সাধারণ পর্যটনপ্রেমীরা এখানে এসে তাদের বেড়ানোর নানা খুঁটিনাটি বিষয় জেনে নিতে পারবেন এবং পাশাপাশি বুকিংও করতে পারবেন লোভনীয় অফারের সাথে। একই সঙ্গে এটিএসপিবি এই পর্যটন মেলার মধ্য দিয়ে একাধিক ছোট-মাঝারি মাপের ট্যুর অপারেটর্স, ট্রাভেল এজেন্টস, ট্রাভেল কোম্পানি, হোমস্টে মালিকদের একটা সুন্দর প্ল্যাটফর্ম-এর জায়গা করে দিয়েছে। যা পর্যটনের প্রসারে ও উন্নতিতে দারুনভাবে কাজে লাগবে।

প্রদীপ জ্বালিয়ে মেলার সূচনা, উজ্জ্বল উপস্থিত যাদের

এদিন প্রদীপ জ্বালিয়ে পর্যটন মেলা বিটিএফ-এর নবম সংস্করণের সূচনা করা হয়। ছিলেন ভারত সরকারের পর্যযটন মন্ত্রকের পূর্ব ভারতের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রোশনি সোনিয়া তিরকি, ছিলেন রাজস্থান ট্যুরিজমের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর বিশাল মাথুর , ছিলেন রাজস্থান ট্যুরিজমের কলকাতার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক এবং রাজস্থান সরকারের কলকাতায় তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিংলাজ দন রতনু, কেরাল ট্যুরিজমের নিশার কে, তামিলনাড়ু ট্যুরিজমের পক্ষে থাঙ্গা সেলভারাজ, মুনিয়াপ্পান পি, উত্তরপ্রদেশ ট্যুরিজমের আধিকারিক, মধ্যপ্রদেশ ট্যুরিজমের কলকাতার আধিকারিক অভিজিৎ ধর, ত্রিপুরা ট্যুরজমের পক্ষে অতুল দেবনাথ ছাড়াও ছিলেন মেঘালয়, বোরোল্যান্ড ট্যুরজমের পক্ষে তাদের প্রতিনিধিরা। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক অশোক দেব।

বিটিএফ-এর প্রশংসায় ভারত পর্যটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রোশনি সোনিয়া তিরকি

অনুষ্ঠানের শুরুতে এদিন পর্যটন মন্ত্রকের পূর্ব ভারতের দায়িত্বপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর রোশনি সোনিয়া তিরকি আয়োজক এটিএসপিবি-কে এমন সুন্দর একটি পর্যটন মেলার আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে  বলেন- তারা সাফল্যের সঙ্গে এধরনের একটি বড় মাপের পর্যটন মেলার আয়োজন করেছে। এখানে শুধু রাজ্যের সংস্থাই নয় অংশ নিয়েছে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, কেরালা, তামিলনাড়ু পর্যটন সংস্থা। এটা একটা ভাল দিক। ভারত সরকার পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রচার করছে ‘দেখো আপনা দেশ’। বাঙালিরা ভ্রমণ সচেতন। তারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন। পর্যটন সম্পর্কে তারা খুবই সচেতন। এই প্ল্যাটফর্ম সবার জন্যই খুব সাহায্য করবে। এখানে উপস্থিত উত্তরপ্রদেশ ট্যুরিজমের আধিকারিকও আছেন দেখছি। এবার প্রয়াগরাজে যে মহাকুম্ভ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেখানে ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক প্রচার করছে। সমস্ত ব্যবস্থা করেছে। আমি বলব, আগে নিজের দেশকে দেখুন। তারপর বিদেশ ভ্রমণ করে সেই জায়গা দেখুন।“

ইকবালের লেখা সারে জাহাসে আচ্ছা…’ দিয়ে শুরু করলেন হিংলাজ দন রত্নু

এরপর রাজস্থান পর্যটনের পক্ষে অসাধারণ বক্তব্য রাখেন কলকাতায় রাজস্থান পর্যটনের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হিংলাজ দন রতনু। তিনি শুরু করেন ১৯০৪ সালে মহান কবি মহম্মদ ইকবালের লেখা –‘সারে জাহাসে আচ্ছা হিন্দস্তান হামারা / হাম বুল বুলে হ্যায় ইসকি ইয়ে গুলিস্তান হামারা‘ কবিতার পংক্তি দিয়ে।  বাংলায় এই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকার সৌভাগ্য করে দিয়েছে বিটিএফ অবশ্যই সমরদা (সমর ঘোষ্ম এটিএসপিবি-র প্রধান উপদেষ্টা) এবং তার পুরো টিম যা করছে তার জন্য আবারও ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে আমি রাজস্থান সরকারের পর্যটন মন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী দিয়া কুমারীজিকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এখানে আমাদের পুরো টিম সহ উপস্থিত আছি। এখানে রাজস্থান পর্যটনের পক্ষে বিশাল মাথুর সাহেবও আছেন। “

তিনি বলতে থাকেন-“আমি বলতে চাই যে বাংলায় এমন সুন্দর একটি পর্যটন মেলার আয়োজনের মধ্য দিয়ে গোটা দেশে একটা বার্তা পৌঁছয় যে বাংলা ভারতের একটা শিরমোহর রাজ্য। মোহরের যেমন একটা মূল্য আছে ঠিক তেমনই বাংলার মাটি খুবই পূজনীয়। এখানে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ জন্মেছেন। সত্যজিৎ রায়ের ভূমি, উত্তম কুমারের ভূমি। স্বামী বিবেকানন্দের ভূমি যার সঙ্গে রাজস্থানের পুরনো সম্পর্ক জড়িয়ে আছে। আজ এও মঞ্চ থেকে বলতে চাই যে বিবেকানন্দ রাজস্থানেরও একজন সুপুত্র। খেতড়ি ও আলমোড়ার মহারাজা ছিলেন বিবেকানন্দের খুব অন্তরঙ্গ বন্ধু। স্বামী বিবেকানন্দের মাথায় যে পাগড়ি আপনারা দেখেন তা রাজস্থানের থেকে দেওয়া। আমি ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের কলকাতার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টরকে অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে অভিনন্দন জানাই উত্তরপ্রদেশ সরকারের পক্ষে এখানে উপস্থিত আধিকারিককে। এবার প্রয়াগরাজে যে মহাকুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়েছে তা এই শতাব্দীর সবচেয়ে বড় মেলা। আর সেই মুহূর্তে  কলকাতায় এই পর্যটন মেলা পর্যটনের গড়িমা বৃদ্ধি করবে নিঃসন্দেহে। এখানে উপস্থিত সকল সরকারি পর্যটন সংস্থার আধিকারিকদের অভিনন্দন জানাই। বাংলার পুত্র হয়ে এখানে আমি ছয় বছর ধরে রয়েছি। খমাগরি, রাম রাম, জয় ভারত।“  ,

বিটিএফ-এ  ৯টি সরকারি পর্যটন বোর্ড এবং ৯১টি বেসরকারি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে

এটিএসপি বি-র যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপ ভট্টাচার্য ও তারক সাহা জানান, এই বছর, বিটিএফ-এ  ৯টি সরকারি পর্যটন বোর্ড এবং ৯১টি বেসরকারি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে। এই ধরনের অনুষ্ঠান সফল করতে সহায়তা ও সহযোগিতার জন্য আমরা অংশগ্রহণকারী সমস্ত পর্যটন সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞ। তৃণমূল স্তরের হোমস্টে মালিক এবং ভ্রমণ ব্যবসাকে সমর্থন করার জন্য, অ্যাসোসিয়েশন সাশ্রয়ী মূল্যে স্টল বরাদ্দ করেছে এবং শিল্পকে উৎসাহিত করতে সাহায্য করেছে। বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্ট ভ্রমণ ব্যবসায়ী এবং সাধারণ পর্যটকদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে।

ভ্রমণ বাণিজ্য মেলা ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি

আসন্ন গ্রীষ্মকালীন ছুটির কথা মাথায় রেখে, ভ্রমণ বাণিজ্য মেলা ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে কলকাতার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে সকাল ১১ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দর্শনার্থীরা ছাড়ের হারে একই ছাদের নীচে হোটেল, ট্যুর প্যাকেজ, ভিসা পরিষেবা এবং অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক উভয় গন্তব্যের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্রমণ তথ্য পেতে পারেন। এছাড়াও, পর্যটক এবং ভ্রমণ পেশাদাররা সরকারি পর্যটন বোর্ড থেকে মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি সংগ্রহ করতে পারেন, নতুন গন্তব্য আবিষ্কার করতে পারেন এবং বাংলা পর্যটন উৎসবে হোমস্টে বিকল্প অন্বেষণ করতে পারেন।

এটিএসপিবি-র সভাপতি সাগর গুহ-র আবেদন গণমাধ্যমের কাছে

এই অনুষ্ঠানটি কেবল পর্যটন পেশাদারদের জন্য নয়। অ্যাসোসিয়েশন অফ ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডারস অফ বেঙ্গল মেধাবী শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা এবং স্বাস্থ্য-সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পর্যটন পেশাদারদের পরিবারকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করে সমাজকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে। এই কথা জানিয়ে এটিএসপিবি-র সভাপতি সাগর গুহ বলেন- আমরা গণমাধ্যমের কাছে আবেদন করছি যে তারা বেঙ্গল ট্যুরিজম ফেস্ট সম্পর্কে আমাদের প্রচারে সহায়তা করুন, যাতে আরও বেশি মানুষ আর্থিকভাবে উপকৃত হতে পারে, স্ব-কর্মসংস্থান করতে পারে এবং পর্যটন শিল্পের বিকাশে অবদান রাখতে পারে।“

 

Published on: ফেব্রু ৮, ২০২৫ at ১০:৫২


শেয়ার করুন