শিল্প এবার পাহাড়মুখীঃ মমতাই মূল ভরসা, সেই টানেই তারা ছুটছেন-বলছেন শিল্পপতিরাই

রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ১২, ২০১৮ @ ১৭:২৮

এসপিটি নিউজ, দার্জিলিঙ, ১২ মার্চঃ গত এক বছরে পাহাড়ে কত কি না ঘটে গেল। একটা অংশ তো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যঙ্গ করে টিপ্পনি কেটে কত কি না বলেছিল- আর এখন তাদের মুখে কি জবাব আছে, তা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা। পাহাড়ের একটা অংশকে খেপিয়ে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রচার শুরু করলেও তা যে টিকল না সেটা এখন হাড়ে হাড়ে টের পেতে শুরু করেছে মমতা বিরোধীরা।যদিও এসব কিছুকে আমল দিতে রাজী নয় পাহাড়ের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।এই ব্যাপারটিকে এড়িয়ে চলছে পাহাড়ের মোর্চা সমর্থকরাও। কারণ, তারা যে এখন সকলেই প্রায় ব্ররতমান জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং-এর নেতৃত্বকেই মেনে নিয়েছেন।তারাও চাইছেন, পাহাড়ে যদি শিল্প স্থাপন হয় তাহলে লাভ তো তাদেরই।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গত মাসে পাহাড়ে গিয়ে জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং-এর সঙ্গে মিটিং করে বলে এসছিলেন পাহাড়ে শিল্প স্তাহপন করতে তিনি আগ্রহী।বিনয় তামাঙ্গরা যদি তাতে সহমত পোষণ করেন তবে তিন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেবেন।

সেই প্রস্তাবে ইতিবাচক জবাব দিয়ে বিনয় তামাংরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিয়েছিলেন, এটা খুব ভালো প্রস্তাব। তাঁরাও চান, কলকাতার পাশাপাশি দার্জিলিঙেও শিল্পপতিরা পাহাড়েও বিনিয়োগ করুক। পাহাড়ে অনেক সম্ভবান আছে। সেই সম্ভবনাকে কাজে লাগাতে পারলে দার্জিলিঙ আগামিদিনে এক নতুন দিশা হয়ে উঠবে সারা দেশের মধ্যে।

কি নেই এই দার্জিলিঙে। এখানে হেরিটেজ টয় ট্রেন আছে। আছে ইকো ট্যুরিজম, আছে হিল ট্যুরিজম, আছে ফরেস্ট ট্যুরিজম, আছে টি ট্যুরিজম। আরও কত কি! শিল্পপতিরা চাইলে এসব কিছুকে কাজে লাগাতে পারেন।

মুখ্যমন্ত্রী বরাবর বলে এসেছেন, বাম আমলে এই দার্জিলিঙ বরাবরের জন্য উপেক্ষিত হয়েছিল। সেইসময় কেউ এখানে ফিরেও তাকাত না। দার্জিলিঙ তখন শুধু গল্প-উপন্যাস আর সিনেমার পর্দায় বেঁচে থাকত। সবাই সেইসময় দার্জিলিঙকে ব্যবহার করে গেছে। কেউ ভাবেনি পাহাড়ের রানি দার্জিলিঙকে নিয়ে।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সব চেয়ে বড় দুটো চ্যালেঞ্জ ছিল-১)দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহল আর ২) উত্তরবঙ্গের দার্জিলিঙ।

জঙ্গলমহলকে তিনি অনেকটাই এগিয়ে দিতে পেরেছেন। এখন জঙ্গলমহল রীতিমতো দৌড়চ্ছে। সেখানে পর্যটন থেকে শুরু করে খেলাধুলো, শিক্ষা থেকে শুরু করে শিল্প স্থাপন হয়ে গেছে। শালবনীতে তো গত মাসেই উদ্বোধন করে এসেছেন জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার। যেখানে শিল্পপতি জিন্দল সাফ জানিয়ে দেন, একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্যই তাদের এখানে কারখানা গড়া সম্ভব হয়েছে।

মনে রাখতে হবে, ক্ষমতায় আসার পর থেকে সমানে মমতা বলে এসেছেন, কথায় কথায় বনধ, হ্রতাল, ধর্মঘট, অবরোধ এসব তার রাজ্যে চলবে না। এসব করলে কাজ হবে না। আর কাজ না হলে মানুষের রুটি-রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তিনি কোনওভাবেই সব বরদাস্ত করবেন না। সেটা যদি তার দল তৃণমূল কংগ্রেসও তাও তিনি বরদাস্ত করবেন না। এজন্য দলের কর্মী-সমর্থক-নেতাদের কড়া নির্দেশও দেন। এই বার্তাটা শিল্পপতিদের কাছে যাওয়ার পর তারা বুঝেছে শিল্পস্থাপনের একমাত্র ভরসার জায়গা যদি কোথাও থাকে সেটা হল একমাত্র পশ্চিমবঙ্গ।

এই ভরসাতেই আগামিকাল মঙ্গলবার থেকে দার্জিলিঙে শুরু হতে চলেছে হিল বিজনেস সামিট। যা নিয়ে দারুন উৎসাহী পাহাড়বাসী। নজর রাখছে পাহাড়ের সব কটি রাজনৈতিক দল। কারণ, তারাও বুঝেছে, আগুন, ভাঞ্চুর করে পাহাড়ের উন্নয়ন সম্ভব নয়, ইতিবাচক ভাবনা-চিন্তাই পারে পাহাড়কে বদলে দিতে। আর তাহলেই হবে সেটা পাহাড়বাসী থেকে সেখানকার রাজনৈতিক দলের কাছে সবচেয়ে বড় খুশির খবর।

ছবিঃ ফেসবুক   

Published on: মার্চ ১২, ২০১৮ @ ১৭:২৮


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 4 = 3