এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছিল তিনি আসছেন সক্রিয় রাজনীতিতে। অবশেষে সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশের কথা ঘোষণা করলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। মহাসচিব পদে তাঁকে নিয়ে এসে ভোটের আগে নয়া চমক দিল কংগ্রেস।তারা মনে করছে প্রিয়াঙ্কার মধ্যে তাঁর ঠাকুমার ছবি আছে যা রাজনীতিতে অনেকে কাজে দেবে। দলের হারানো ইমেজ ফিরে পেতে সাহায্য করবে।তবে শুধু কি এটাই একমাত্র কারণ? না প্রিয়াঙ্কার রাজনীতিতে প্রবেশের পিছনে জড়িয়ে আছে এই কারণগুলি। তাহলে আসুন জেনে নি কি সেই কারণগুলি-
১)ইন্দিরা গান্ধীর ছবি
প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে তাঁর ঠাকুমা তথা দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। প্রিয়াঙ্কার চেহারা, কথা বলার ধরন, শাড়ি পরার স্টাইল এবং হেয়ার স্টাইল সহ আরও অনেক কিছুই তাঁর ঠাকুমার সঙ্গে মিলে যায়।ইতিপূর্বেই প্রিয়াঙ্কা ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীর মতো শাড়ি পরে মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন। কংগ্রেস দল মনে করছে- প্রিয়াঙ্কার মধ্যে থাকা ইন্দিরা গান্ধীর এই ছবি রাজনীতিতে দারুনভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।
২) সোনিয়ার আসনে লড়ার উপযুক্ত প্রার্থী
উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলি আসনটি বরাবর কংগ্রেসের আসন বলে পরিচিত। এখনও এই আসনে জিতে সাংসদ রয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। যদিও তাঁর স্বাস্থ্য এখন ভাল নেই। মনে করা হচ্ছে এই আসনটিতে কংগ্রেস প্রিয়াঙ্কাকে দাঁড় করাতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রিয়াঙ্কাই হল সোনিয়ার আসনে উপযুক্ত প্রার্থী। এর ফলে ওই আসনটিও কংগ্রেসের হাতে থাকবে, সেই সঙ্গে দলও একজন যোগ্য নেত্রীকে খুঁজে পাবে। এসব দিক ভেবেই প্রিয়াঙ্কাকে পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।এতদিন সক্রিয় রাজনীতিতে না আসার কারণে প্রিয়ঙ্কা শুধুমাত্র অমেঠি ও রায়বেরিলি আসনের প্রচারেই নিজেকে ব্যস্ত রাখতেন।
৩)দলের নেতা ও কর্মীদের ভিতর প্রিয়াঙ্কার জনপ্রিয়তা
কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা এর আগে বহুবার প্রিয়াঙ্কাকে সক্রিয় রাজনীতিতে নিয়ে আসার কথা বলে এসেছেন।এও মানা হয় যে গান্ধী পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় এই প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তাই কংগ্রেস মনে করছে, প্রিয়াঙ্কার উপস্থিতিতে এবার উত্তরপ্রদেরশে হারানো জমি তারা আবার পুনরুদ্ধার করতে পারবে।
৪)মহাজোটের তাড়া
লোকসভা ভোটের মুখে দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী দলগুলি এক জোট হয়েছে। ইতিমধ্যে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি- বহুজন সমাজবাদী পার্টি আসন রফা করে নিজেদের মধ্যে জোট করে ফেলেছে। এ্ররই মধ্যে মায়াবতী আবার কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক মনোভাব দেখিয়েছেন। যা নিয়ে কংগ্রেস শিবিরে চিন্তার ভাঁজ পড়ে। এর মধ্যে আবার কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী ২২ দলকে একত্রিত করে ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার ডাক দেন। সেখানে কংগ্রেসের দুই প্রতিনিধি হাজির থাকলেও কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে খুব বেশি আগ্রহ দেখা যায়নি বাকিদের মধ্যে। অনেকেই কংগ্রেসকে ছাড়াই চলার পক্ষে মত দিয়েছে। মহাজোটের এই তাড়া খেয়ে কংগ্রেস মনে করছে এই মুহূর্তে কিছু একটা না করলে বিরোধী জোটের রাশ তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে এসে তারা সেই কাজটাই করতে চাইছে।
৫) রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয়তা আগে থেকেই ছিল
হতে পারে তিনি এখন সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন। কিন্তু এতদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী পর্দার আড়ালে থেকেই রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে এসেছেন। সেটা নিচু তলার কর্মীরা হয়তো জানেন না। তিনি সর্বদা দলের উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা হোক কিংবা পরিকল্পনা সবেতেই বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন। ভোটে না দাঁড়িয়েও কংগ্রেসের ভিতর এবং ভারতীয় রাজনীতিতে তাঁর সমকক্ষ নেতা খুব কমই আছে।
এই কারণগুলির জন্যই প্রিয়াঙ্কার সক্রিয় রাজনীতিতে প্রবেশ বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।ছবি-গুগল