বড় দিনে কুষ্ঠ রোগীদের পাশে সম্রাট তপাদার, তুলে দিলেন উপহার

Main রাজ্য স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান
শেয়ার করুন

Published on: ডিসে ২৫, ২০২০ @ ২০:৪৪

এসপিটি নিউজ, বারাকপুর, ২৫ ডিসেম্বর: সবাই যখন বড় দিনের পার্টিতে আনন্দে মেতেছে কেউ বা খাওয়া-দাওয়া, হই-হুল্লোড় নিয়ে ব্যস্ত থেকেছে তখন বারাকপুরের ঘরের ছেলে ‘সমাজবন্ধু’ সম্রাট তপাদার দিনের বেশিরভাগ সময়টাই কাটিয়েছে গান্ধিজি প্রেম নিবাস কুষ্ঠ কেন্দ্রে। সেখানে তিনি কুষ্ঠ রোগীদের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। তুলে দিয়েছেন নিজের সাধ্য মতো ক্ষুদ্র উপহার সামগ্রী। এই কেন্দ্রটি গড়ে তুলেছিলেন মাদার টেরেসা।

মাদারের অনুভূতি প্রকাশ

হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে তাঁকেও সইতে হচ্ছে অনেক কষ্ট। সেই অনুভূতি প্রকাশ পেয়েছে মাদারের লেখা এই লাইনগুলিতে- “ঈশ্বর চান যে, আমি এক বন্ধনমুক্ত সন্ন্যাসিনীই থাকি, ক্রুশ চিহ্নের দীনতা আমাকে আবৃত করে থাক। আজ একটা ভাল শিক্ষা পেলাম। গরিব লোকদের দারিদ্র্য কত কষ্টকর। যখন বাড়ি খুঁজে বেড়াচ্ছি, হেঁটে হেঁটে আমার গা-হাত-পা ব্যথা হয়ে যেত। আমি ভেবে দেখলাম, বাসস্থান, খাদ্য, সাহায্য কোথায় পাবে, তার চেষ্টাতেই গরিব মানুষদের দেহ এবং আত্মা কী যন্ত্রণা ভোগ করে। তখন প্রবল হয়ে উঠলো লোভ। লরেটোর প্রাসাদোপম গৃহগুলির কথা মনে উদয় হল। কে যেন আমায় লোভ দেখাতে লাগল, ‘একবার মুখ ফুটে চাইলেই, সে-সবই আবার ফিরে পাব।’ আমার প্রভু, নিজের ইচ্ছায়, তোমার প্রতি প্রেমে, আমি তাই করতে চাই, যা আমাকে দিয়ে তুমি করাতে চাও। এক বিন্দু অশ্রুও আমার চোখ থেকে আমি পড়তে দিলাম না।”

গান্ধিজি প্রেম নিবাস কুষ্ঠ কেন্দ্রের কিছু কথা

১৯৫৮ সালে একটি গাছের তলায় তিনি কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত মানুষদের নিয়ে এসে সেবা কশুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে ১৯৬০ সালে টিটাগড় পুরসভার আনুকূল্যে এক টুকরো জমিতে গড়ে তোলা হয়েছিল এই গান্ধিজি প্রেম নিবাস কুষ্ঠ কেন্দ্র। আজ সেখানে প্রায় এক হাজার মানুষ সেবা গ্রহণ করছে। অনেকেই সুস্থ হয়ে উঠছেন।সুস্থ হয়ে তারা তাঁতের কাজে নিযুক্ত হচ্ছেন। যেখান থেকে তারা নীল-সাদা শাড়ি তৈরি করছেন। গান্ধীজি প্রেম নিবাস ভারতের অন্যান্য হাসপাতালের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছে। এটি কেবলমাত্র এই কেন্দ্রের বাসিন্দা রোগীদেরই নয়, চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য কুষ্ঠরোগীদেরও চিকিৎসা সরবরাহ করে।

সম্রাট জানালেন তাঁর অনুভূতির কথা

সম্রাট তপাদার বারাকপুরের ভূমি-পুত্র। সারা বছর ধরেই তিনি নীরবে সমাজসেবামূলক কাজ করে যান। বর্তমানে তিনি রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। তবে তার সবেচেয়ে বড় পরিচয় হল – তিনি একজন প্রকৃত সমাজসেবী। কখনও বৃদ্ধাশ্রম, কখন রাস্তার ভবঘুরে, কখনওবা অসহায় মানুষ, কখনওবা অনাথ শিশু থেকে আরও কত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নীরবে-নিভৃতে তিনি করে চলেছেন মানুষের সেবা। সম্রাট তপাদার জানালেন-“আজ বড়দিন। মানুষ এই দিনটিকে যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিন বলেই জানে। এই দিনে বহু মানুষ কেক কাটে। আনন্দ করে। পিনিক করে। খাওয়া-দাওয়া করে। কিন্তু এই কুষ্ঠ আশ্রমে এসে দেখতে পেলাম কী নিদারুন কষ্ট এই মানুষগুলির। এক শক্ত রোগের সঙ্গে মানুষগুলি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। কথা বলার সময়ে অনেকেই কেঁদে ফেলেছেন। পরমেশ্বরের কাছে প্রার্থণা এই মানুষগুলি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।এদিন সম্রাটের সঙ্গে ছিলেন দেবজিৎ মুখোপাধ্যায়, রাজু ঘোষ, আবদুল মুশিদ সাহাজি, মৃণ্ময় রায় প্রমুখ।

Published on: ডিসে ২৫, ২০২০ @ ২০:৪৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

43 + = 47