বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়ঃ স্লোগানের প্রচারে নৈহাটির বিধায়ক জানালেন- ঠিক এই কারণেই মানুষ মমতাকে চায়

রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: ফেব্রু ২২, ২০২১ @ ১৬:০১

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, নৈহাটি, ২২ ফেব্রুয়ারি:   সময়ের সাথে সাথে এখন বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু। ভোটের প্রচারেও এসেছে বাহারি চমক। প্রতিটি দলই ভোটের প্রচারে এমন কিছু করতে চাইছে যা নিয়ে মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়। মানুষকে আরও বেশি করে কাছে টেনে নেওয়া যায়।আর সেই প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবার বিধানসভা ভোটের প্রচারে নিয়ে এল নতুন স্লোগান-‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়।’ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন হঠাৎ কেন এমন স্লোগান দিতে হল- তার জবাবও দিয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। তিনি তুলে ধরেছেন এই কারণগুলি।

কারণ একঃ

“কারণ, বাংলার একজন ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি মহিলা যিনি নিজের জীবন সংগ্রাম অতিবাহিত করেছেন একটি টালির ঘরে সামান্য দামের শাড়ি পরে হাওয়াই চটি পরে। তিনি ৩৪ বছরের বাংলার বন্ধ্যাত্বকে কাটিয়েছন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সংগ্রামের প্রভাবও পরবর্তী ১০ বছর সরকার চালানোর ক্ষেত্রেও করেছেন। তিনি একজন গরিব মানুষ। নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষদের তাদের সমাজের সামনের সারিতে ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।”

কারণ দুইঃ

”কারণ, গৃহহীণদের কাছে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া, বয়স্ক মানুষদের কাছে ভাতা পৌঁছে দেওয়া, বিনা পয়াসায় রেশনের ব্যবস্থা করে দেওয়া, ১০০ দিনের কাজের সুবন্দোবস্ত করে দেওয়া, পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া, পরিযায়ী শ্রমিকদের রক্ষণাবেক্ষনের ব্যবস্থা করে দেওয়া, গ্রামের গরিব মানুষের হাতে সরকারের যে সাফল্য সেটা পৌঁছে দেওয়া।”

কারণ তিনঃ

“কারণ, ভারতবর্ষের ইতিহাস তথা বাংলার ইতিহাসেও সেই একই কথা বলে। বাংলার সব মেয়েরা সামাজিক ক্ষেত্র, রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের ক্ষেত্রে সবসময় এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। যদি সমাজ সংস্কারক হিসেবে দেখেন, তাহলে আপনি রানী রাসমণি কিংবা মা সারদা- তাদের আপনি অস্বীকার করতে পারবেন না। বাংলার যে ভাবধারায় পরিপুষ্ট। আপনি যদি স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলেন- আপনি দেখবেন মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়াদেদর, এরকম প্রভূত চরিত্র পাবেন যারা ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতা সংগ্রামকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল।”

সেকালে স্বামী বিবেকানন্দের সাথে যিনি সারা বাংলা তথা বিশ্বজুড়ে ধর্মপ্রচার করেছিলেন সিস্টার নিবেদিতা তাঁর যে ভূমি সেটাও ছিল এই বাংলা। আর আধুনিককালে আপনি যদি দেখেন মাদার টেরেসা তারও কাজের ক্ষেত্র ছিল কিন্তু বাংলা।বলেন বিধায়ক পার্থ ভৌমিক।

কারণ চারঃ

“কারণ, বাংলা সবসময় মেয়েদের আগে দেখতে পছন্দ করে। বাংলা সবসময় মেয়েদের সামনে রেখে কাজ করতে পছন্দ করে। তাই আমরা বলছি, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। আপনারা দেখেছেন এই পথ ধরে বাংলার মেয়েরা আজ মাথা উঁচু করে বলছে -আমি কন্যাশ্রী। তারা বলছে – আমাদের এখানে বাল্যবিবাহ কমে গেছে। কারণ, কন্যশ্রীর ফলে আমরা প্রত্যেকে পড়াশুনো করছি। ১৮ বছরের আগে আমরা কেউ বিয়ে করছি না।”

কারণ পাঁচঃ

কারণ, এর ফলে শিশুমৃত্যুর হারও বাংলায় অনেক কমে গেছে। আপনি যদি দেখেন নারী স্বাধীনতার ক্ষেত্রেও বাংলা এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আপনি যদি দেখেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে নারীর সম্ভ্রম রক্ষার ক্ষেত্রেও কলকাতা গত দু’বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্যের নিরীখে সবার প্রথম সারিতে আছে। এখানে মেয়েদের সুরক্ষা সবচাইতে বেশি।কারণ, এখানে একমাত্র রাজ্য বাংলা যেখানে আপনি ধর্মের বেড়াজাল ভেঙে আপনি মানুষে-মানুষে মেলবন্ধন ঘটাতে পারেন। তাই বাংলার মানুষ বলছে বাংলা নিজের মেয়েকে চায়।”

আজ নৈহাটির ঐকতান মঞ্চের সমরেশ বসু কক্ষে সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ এই প্রচারাভিযানের সূচনা করেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নৈহাটি শহর তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অশোক চ্যাটার্জি, ণৈহাটি শহর যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সনৎ দে প্রমুখ।

Published on: ফেব্রু ২২, ২০২১ @ ১৬:০১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

27 − 18 =