প্রধানমন্ত্রী মোদি বললেন- বাংলার উন্নয়ন ততদিন সম্ভব নয় যতদিন এখানে সিন্ডিকেটরাজ থাকবে

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

“জলজীবন মিশন অভিযানে ভারত সরকার ১৭০০ কোটির চেয়েও বেশি টাকা এই তৃণমূল সরকারকে দিয়েছে।এর মধ্যে ৬০৯ কোটি রুপি এখানকার সরকার খরচ করেছে।বাকি টাকা খরচই করতে পারেনি”- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

Published on: ফেব্রু ২২, ২০২১ @ ২০:৪৯

এসপিটি নিউজ, হুগলি, ২২ ফেব্রুয়ারি:   আজ হুগলি জেলায় এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে বাংলার তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেন – এই সরকার বাংলাকে শুধু পিছিয়েই দিয়েছে। বাংলার উন্নয়ন ততদিন সম্ভব নয় যতদিন এখানে সিন্ডিকেটরাজ থাকবে। তাই এবার বাংলায় আসল পরিবর্তন চাই। আপনাদের মধ্যে এই যে এতো উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে তা বাংলা থেকে দিল্লি পর্যন্ত একটাই বড় বার্তা দিচ্ছে।

‘এখানকার শাসক দলই এখানকার পরিবেশকে নষ্ট করে রেখেছে’-মোদি

বাংলার উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধামন্ত্রী মোদি বলেন- “বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাংলার মানুষের উৎসাহের কমতি নেই। বরং এখানকার শাসক দলই এখানকার পরিবেশকে নষ্ট করে রেখেছে। বাংলাকে পিছিয়ে রেখেছে।অন্য রাজ্যের তুলনায় বাংলা অনেক এগিয়ে ছিল। কিন্তু বাংলাকে পিছিয়ে দিয়েছে মা-মাটি-মানুষের স্লোগান তোলা সরকার।আমি দুঃখিত যে, এর আগে যত সরকার বাংলায় এসেছে এই মহান পবিত্র জায়গাকে সেই একই জায়গায় রেখে দিয়েছে। এগিয়ে নিয়ে যায় নি।”

আর নয় অন্যায়, আমরা আসল পরিবর্তন চাই- আওয়াজ তুললেন মোদি

“বাংলায় উন্নয়ন ততদিন সম্ভব নয় যতদিন এখানে সিন্ডিকেট রাজ থাকবে। যতদিন এখানে তোলাবাজির রাজ থাকবে। যতদিন এখানে কাটমানির কালচার থাকবে। যতদিন এখানকার প্রশাসন গুন্ডাদের আশ্রয় দেবে। যতদিন এখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হবে। আর নয় অন্যায়। আমরা আসল পরিবর্তন চাই।” আওয়াজ তোলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

বন্দেমাতরম ভবনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন- “আমাকে বলা হয়েছে যে বন্দেমাতরম ভবন যেখানে বঙ্কিমচন্দ্র মহাশয় পাঁচ বছর ছিলেন। বলা হচ্ছে সেই জায়গা খুব বাজে অবস্থায় আছে। এটা সেই ভবন যেখানে তিনি বন্দেমাতরম রচনা করে তা প্রকাশ করেছিলেন। সেই বন্দেমাতরম যা স্বাধীনতার লড়াইতে নয়া প্রাণ সঞ্চার করেছিল। আমাদের বিপ্লবীদের নয়া উদ্যম মিলেছিল। মাতৃভূমিকে সুজলাং সুফলাং বানানোর জন্য সমস্ত দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। বন্দেমাতরম দাসত্বের নিরাশার মধ্যে দেশে নয়া উদ্যম এনেছিল। এমন গান রচনাকারীর স্থানকে অবহেলা করা বাংলার গৌরবের সাথে অনেক বড় অন্যায় হয়েছে। এই অন্যায়ের পিছনে অনেক বড় রাজনীতি আছে। এ সেই রাজনীতি যেখানে দেশভক্তির বদলে ভোটব্যাঙ্ক, সবকা বিকাশের পরিবর্তে স্বজনপোষণকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বাংলার মানুষ কখনো এসব ক্ষমা করবে না।”

আজ আমি বাংলার মানুষকে বলতে চাই- যেদিন বাংলায় বিজেপি শাসিত সরকার গঠন হবে সেদিন প্রত্যেক বাঙলাই তাদের সংস্কৃতিকে পূর্ণ শক্তি ও ক্ষমতা দিয়ে পালন করতে পারবেন। কেউ তাকে দমাতে পারবে না। কেউ আপনাদের রুখতে পারবে না। বিজেপি সোনার বাংলা নির্মাণের জন্য কাজ করে যাবে। যেখানে এখানকার সংস্কৃতি এখানকার ইতিহাস আরও বেশি মজবুত হবে। এমনই বাংলা যেখানে আস্থা , অধ্যাত্ম, উদ্যম সব কিছুর সম্মান হবে। এমন বাংলা যেখানে সবার উন্নয়ন হবে। স্বজন-পোষণ হবে না। এমন বাংলা যেখানে তোলাবাজি থেকে মুক্ত হবে। চাকরিতে যুক্ত হবে।

বাংলার উন্নয়নের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে

“স্বাধীনতার আগের বাংলা দেশের অন্য রাজ্যের চেয়ে অনেক এগিয়ে ছিল। কিন্তু যারা বাংলা শাসন করেছে তারা আজ বাংলাকে এই অবস্থায় পৌঁছে দিয়েছে। মা-মাটি-মানুষ নিয়ে কথা বলা লোক বাংলার উন্নয়নের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কেন্দ্র সরকার কৃষক ও গরিবকে পয়সা দিতে চায়।বাংলার লক্ষ কৃষক ‘কিষাণ সম্মান নিধি’ থেকে বঞ্চিত। এখানকার সরকারের নোংরা রাজনৈতিক মানসিকতার জন্য বাংলার কৃষকরা এই সুবিধা পায়নি।আয়ুষ্মান ভারত’থেকে বঞ্চিত বাংলা।” ভলেন মোদি।

জলজীবন মিশন অভিযান নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

জলজীবন মিশন অভিযান নিয়ে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন- “দেশের প্রতিটি গ্রামে সমস্ত পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সবরাহ করার জন্য জলজীবন মিশন অভিযান শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই- তা হল, আমাদের ঘরের মা-বোন-কন্যাদের জল আনার জন্য বেশি সময় যাতে ব্যয় না করতে হয়।তাদের যাতে কষ্ট না হয়। এছাড়াও তারা যাতে পরিস্রুত জল পান করে একাধিক রোগের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পারে। বাংলার মানুষের জন্য এই মিশন এজন্য গুরুত্বপূর্ণ যে এখানে দেড় থেকে পোনে দু’কোটি গ্রামীণ পরিবারে জল পৌঁছতে পারে। অথচ সেখানে মাত্র ন’লাখ পরিবার এই সুবিধা প্রাপ্ত হয়েছে।”

হিসেব তুলে ধরে মোদি বলতে থাকেন- “ইতিমধ্যে দেশে তিন কোটি ২০ লাখ পরিবারের কাছে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে ভারত সরকার এত জোড় দিয়েছে পয়সা ঢেলেছে পিছনে পড়েছে সেখানে দেড়-পোনে দু’কোটির মধ্যে মাত্র ন’লাখ পরিবারে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের সুবিধা দিতে পেরেছে এখানকার সরকার। এই সরকার যে ভাবে কাজ করছে তাতে এ রাজ্যের গ্রামের পরিবারগুলিতে পাইপের সাহায্যে জল সরবরাহের কাজ করতে না জানি আর কত বছর লাগাবে।”

“তৃণমূল সরকার গ্রামের পরিবারগুলিতে জল সরবরাহের ক্ষেত্রে কতটা সক্রিয় এর আরও একটা উদাহরণ আপনাদের দিচ্ছি। আমি আপনাদের উদাহরণ দিচ্ছি- প্রতি ঘরে জল পৌঁছনোর জন্য ভারত সরকার ১৭০০ কোটির চেয়েও বেশি টাকা এই তৃণমূল সরকারকে দিয়েছে।এর মধ্যে ৬০৯ কোটি রুপি এখানকার সরকার খরচ করেছে। বাকি ১১ কোটি টাকা এখানকার সরকার খরচই করতে পারেনি। এতে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে তৃণমূল সরকারের এখানে গরিব মানুষের জন্য কোনও চিন্তাভাবনাই নেই। এখানকার বাংলার কন্যারা জল পাচ্ছে না। বাংলার কন্যার সঙ্গে অন্যায় করছে তাদের কি ক্ষমা করা উচিত?” প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।

Published on: ফেব্রু ২২, ২০২১ @ ২০:৪৯


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

90 − 80 =