ফাঁসিদেওয়ায় ব্রিজ ভেঙে পড়তেই শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজায় জেরবার সাধারণ মানুষ

রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতাকৃষ্ণা দাস

Published on: সেপ্টে ৭, ২০১৮ @ ২২:২০

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ৭ সেপ্টেম্বরঃ ‘ব্রিজ তুমি কার?’ এখন এই প্রশ্নই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মাঝেরহাট ব্রিজ নিয়ে বলেছিলেন-ওটা কংগ্রেসের আমলে তৈরি, আমাদের কিছু করার নেই। আজ আবার যখন ফাঁসিদেওয়ায় ক্যানেল ব্রিজ ভেঙে পড়ল তখন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এর দায় পুরোপুরি চাপিয়ে দিলেন সিপিএম পরিচালিত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের উপর। বিজেপি আবার রাজ্যজুড়ে একের পর এক ব্রিজ ভেঙে পড়ার জন্য পূর্তমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করে বিক্ষোভ দেখাল।কিন্তু যা হল-তাতে কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ কমার পরিবর্তে আরও বেড়ে গেল।

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের নয়াহাট ও চটহাট মানগছের যোগাযোগ ব্যবস্থা।ব্রিজ ভাঙার খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তিনি বলেন, ” আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বহুবার সেতু দুর্বল হওয়া নিয়ে মহকুমা পরিষদের সভাধিপতিকে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি কোন কর্ণপাত করেন নি। সেইসঙ্গে দুর্বল সেতু হিসেবে কোন বোর্ডও লাগায় নি। ফলে আজ এই ঘটনা ঘটল। ওই সেতুর কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। সমস্ত কাগজপত্র নতুন করে তৈরি করার কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর। উত্তরবঙ্গের সমস্ত ভগ্ন সেতুকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।’’

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য ব্রিজের সমস্ত দায়ভার চাপিয়ে দেন মহকুমা পরিষদের ওপর৷ তিনি বলেন, ব্রিজটি তৈরি করেছিল মহকুমা পরিষদ। তাই ব্রিজের রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও মহকুমা পরিষদের ওপরই বর্তায়। তাঁর কথায়, “শিলিগুড়ির মহকুমা পরিষদ বোর্ড সিপিএম পরিচালিত। তারা রাজ্য সরকারের কোনও কথাই শুনতে চায় না।” তাঁর অভিযোগ, “প্রশাসনিক মিটিংয়ে শিলিগুড়ি মহকুমায় কতগুলি ব্রিজ আছে ও সে সব ব্রিজের হাল হকিকত জানতে চেয়েও কোনো সদুত্তর পাননি মহকুমা পরিষদ থেকে।” তবে ব্রিজটিকে ভেঙে নতুন করে তৈরি করার দায়িত্ব পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। পাশাপাশি দুটি গ্রামের যোগাযোগ যাতে সম্পুর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে না পড়ে সে কারণে পিছলা নদীর ওপর আপাতত দ্রুত একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলো এদিন জানান তিনি।

বিজেপি জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় চৌধুরী পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, শুধু রঙ করলেই উন্নয়ন হয় না। ঠিক মতো ইঞ্জিনিয়ার লাগিয়ে রক্ষনাবেক্ষন না করার ফলেই একের পর এক বিপর্যয় হয়ে চলেছে। তিনি জানান, কেন্দ্র সরকার থেকে সংস্কার কাজের জন্য বহু ফান্ড আসে। তার অভিযোগ, সংস্কারের নামে শুধু রঙ করার ফলেই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তিনি অবিলম্বে সমস্ত ব্রিজগুলো খতিয়ে দেখে তার মধ্যে যেগুলি  বিপজ্জনক তা সারাই করা আর না হলে ব্রিজগুলি বন্ধ করে দিতে বলেন।

প্রাক্তন নগোরন্নয়নমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য বলেন, উত্তরবঙ্গে বর্ষার সময় নদীর ওপরের বহু ব্রিজ ভেঙে পড়ে। এটা নতুন কিছু নয়। তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই নজরদারি দরকার বলে তার অভিমত। আর এই গ্রামীণ অঞ্চলের স্থানীয় প্রশাসন, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকার শিলিগুড়ি বাইরে থাকার জন্য তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

Published on: সেপ্টে ৭, ২০১৮ @ ২২:২০

 

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 41 = 47