কোদালিয়ায় নেতাজীর পৈত্রিক ভিটে সংস্কারের কাজ শুরু, সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে তোলার উদ্যোগ

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

Published on: জানু ২৩, ২০১৮ @ ২০:৩০

এসপিটি নিউজ, বারুইপুর, ২৩ জানুয়ারিঃ ভাল কাজে জটিলতা থাকবে না তা কি কখনও হয়েছে। তাই সোনারপুর-রাজপুর পুরসভা এলাকার কোদালিয়ার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর পৈতৃক ভিটের দেরীতে হলেও অবশেষে শুরু করা গেল। ১০ কাঠা জমির উপর দোতলা বাড়ির সংস্কারের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে জোর কদমে।রাজ্য সরকারের উদ্যোগে এই কাযে হাত দেওয়া হল।হেরিটেজ ভবন হিসেবে সংরক্ষিত করা হবে ভিটেটিকে।ব্যয় হবে ৭৬ লক্ষ টাকা।

আগামী এক বছরের মধ্যে এই ভবন সংস্কারের কাজ শেষ হবে। হেরিটেজ ভবন হিসাবে সংরক্ষিত করা হবে এই পৈত্রিক ভিটে। এমনকী এই পৈত্রিক ভিটেকে ঘিরে সার্কিট ট্যুরিজম গড়ে তোলারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, একথা জানান সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার চেয়ারম্যান ডঃ পল্লব দাস। নেতাজির ব্যবহৃত খাট, বিছানা, টেবিল-সহ আসবাবপত্র ঝেড়ে পুছে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হবে। সেই কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ঐতিহাসিক বাড়ির আদল একই রেখে ঘরের দেওয়াল থেকে শুরু করে কড়ি-বর্গা সব সংস্কার করা হবে।সংস্কার করা হবে ৩৫০ বছরের নেতাজির পৈত্রিক ভিটের ধানের গোলা।ভিটে লাগোয়া বসু পরিবারের পুকুরও সংস্কার করা হবে।

প্রসঙ্গত,২০১৩ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যানিং থেকে ফেরার পথে কোদালিয়ায় নেতাজির পৈত্রিক ভিটে পরিদর্শন করে জমি অধিগ্রহন ও ভগ্ন ভবনের হেরিটেজ করার ঘোষণা করে তা হেরিটেজ কমিশনের কাছে সুপারিশ করার কথা জানিয়েছিলেন।এর পর কমিশন থেকে ভিটেও পরিদর্শনে এসেছিল। এর পর সংস্কারের কাজও শুরু হয়েছিল।

সোনারপুর-রাজপুর পুরসভার পক্ষ থেকে ভিটে বাড়ির পাঁচিল সংস্কার করে নতুন করে গড়ে দেওয়া হয়। নতুন রঙ করা হয় বাড়িটিতে। কিন্তু শরিকি আপত্তিতে সেই কাজ থমকে যায়,বন্ধ হয়ে যায়। সোনারপুর-রাজপুর পুরপ্রধান পল্লব দাস নিজে উদ্যোগ নিয়ে ভিটেতে আসার রাস্তা সংস্কার করে ত্রিফলা আলোয় সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

এই প্রসঙ্গেই পুরপ্রধান ডঃ পল্লব দাস জানান, হেরিটেজ ভবন হিসাবে সংরক্ষিত করা হবে এই ভবন। বংশধরদের আপত্তিতে কাজ থমকে গিয়েছিল। এখন জটিলতা কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগে ভবন সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। পূর্ত দফতর জায়গা মাপজোক করেছে। বাড়ি,পুকুর এমনকী ধানের গোলা সব সংস্কার করা হবে। ভবনে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হবে। করা হবে শৌচালয়ও। দর্শনার্থীদের জন্য সব ব্যবস্থা থাকবে। নেতাজির অগ্রজ সুনীল বসু যে পোষ্ট অফিসে বসে কাজ করতেন তাও ভালোভাবে করা হবে। এই বাড়িকে ঘিরে পর্যটকদের মধ্যে আগ্রহ আছে।এই বাড়িকে ঘিরে তাই রাজ্য সরকার সার্কিট ট্যুরিজম গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে। বাড়ি আসবার রাস্তা সংস্কার করে নিকাশির ব্যবস্থা করা হব। সব মিলিয়ে সাজিয়ে তোলা হবে এই ভিটে।

নেতাজির ১২১ তম জন্ম দিনকে ঘিরে সারাদিন ধরে এই পৈত্রিক ভিটের কাছে নানা অনুষ্ঠান হয়। কিছু সময়ের জন্য দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই ভিটের দরজা। স্থানীয় স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভিড় জমায় একবার চাক্ষুস করতে। কেউ এই বাড়িকে স্মরণে রাখতে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সেলফিও তোলে বা আবার কেউ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তা ক্যামেরাবন্দি করে রাখে। স্কুল ছাত্র বিট্টু থেকে শুরু করে ছাত্রী তিয়াসা সবাই খুশি নেতাজির ব্যবহৃত খাট-টেবিল দেখে।

নেতাজি কৃষ্টি কেন্দ্রর পক্ষ থেকে মূর্তিতে মাল্যদান থেকে শুরু করে আঁকা প্রতিযোগিতা,আবৃতি সহকারে বর্ণময় অনুষ্ঠান পালিত হয় সকাল থেকেই। মিউজিয়াম খুলে দেওয়া হয় দর্শনার্থীদের জন্য। সন্ধ্যায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বাগতালক্ষী দাসগুপ্ত। সব মিলিয়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে কোদালিয়া বোসপাড়া।

Published on: জানু ২৩, ২০১৮ @ ২০:৩০


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 + 1 =