পর্যটনের রোমাঞ্চ বাড়াতে গাজলডোবায় শুরু হতে চলেছে সাইকেল ট্রেল ও ওয়াকিং ট্রেল

ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা– কৃষ্ণা দাস

Published on: সেপ্টে ২, ২০১৮ @ ১১:৫২

এসপিটি নিউজ, শিলিগুড়ি, ২ সেপ্টেম্বরঃ ব্রাজিল, আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপের মধ্যে ইংল্যান্ড, রিপাবলিক অফ আয়ার্ল্যান্ড এমন বহু দেশেই সাইকেল ট্রেল-এর চল আছে। বিশ্বের এমন আরও অনেক দেশেই এই সাইকেল ট্রেল কিংবা ওয়াকিং ট্রেল বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বলা যেতে পারে পর্যটনের ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও বেশ কিছু রাজ্যে এই ব্যবস্থা ইতিমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এতদিন পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন বলতে মানুষ জানত দিঘা কিংবা বকখালি অথবা দার্জিলিং-এর নাম। কিন্তু রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একান্ত নিজের চেষ্টা আর আন্তরিকতায় পর্যটনের প্রসার বাড়তে শুরু করেছে। তারই একটি ক্ষেত্র হল উত্তরবঙ্গের গাজলডোবা পর্যটন কেন্দ্র। এবার সেখানেই শুরু হতে চলেছে সাইকেল ট্রেল ও ওয়াকিং ট্রেল।সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই শুরু হয়ে যাবে এই পরিষেবা।

সাইকেল ট্রেলের ভাবনা

এতদিন এই পর্যটন কেন্দ্রের মুখ্য আকর্ষণ ছিল ঘন জঙ্গলের মাঝে তিস্তা ব্যারেজ দেখা ও নৌকোবিহারে পাখি দেখা কিংবা নদীর বুকে একটু সময় কাটানো। তবে ভোরের আলোয় দেখা বা উপভোগ করার মত তেমন রসদ মিলত না পর্যটকদের। তিস্তা ব্যারেজের একপাশে যেমন রয়েছে অথৈ জল, অন্য পাশে রয়েছে গহন অরন্য। এই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কিছুটা গেলে পড়বে সরস্বতীপুর চা বাগান। এই মনোরম পথকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেই সাইকেল ট্রেলের ভাবনা মাথায় আসে।

রোমঞ্চকর ১৮ কিমি মনোরম রাস্তা

ইতিমধ্যে গাজলডোবা থেকে জঙ্গলের ভিতর ১৮ কিলোমিটার রাস্তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে, যেখান দিয়ে সাইকেলে করে পাড়ি দেবেন পর্যটকরা।এই রাস্তা আবিস্কারের পিছনেও রয়েছে স্থানীয় মানুষের সহযোগিতা। এখানে কোনও রাস্তাই ছিল না। স্থানীয় মানুষজনরাই এই জঙ্গলের ভিতর দিয়ে কাঠ কুড়োতে যান। তাদের যাওয়া আসার পায়ের ছাপ থেকে তৈরি হয়েছে প্রকৃতির ছায়াঘেরা মনোরম এই সরু রাস্তা। এই রাস্তা দিয়ে গ্রামের দুধওয়ালা, স্থানীয়রা সাইকেল করে যাতায়াত করতে পারলেও চার চাকা নিয়ে যাওয়া দুষ্কর। তবে সাইকেল চালিয়ে প্রাকৃতিক মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে করতে প্রকৃতির সাথে মিশে যাওয়ার যে রোমাঞ্চ অনুভব করা যাবে তা কিন্তু অসাধারণ।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কাজে গতি

আগের বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোয়াধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে এসে গাজলডোবা পর্যটন কেন্দ্রের কাজের গতি দেখে বিভাগীয় মন্ত্রীর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাফ জানিয়েছিলেন পরের বার তিনি যেন এসে দেখেন কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে।সেই মতো পর্যটন বিভাগ ও বন দফতর যৌথ প্রয়াস নিয়ে গাজলডোবায় এই সাইকেল ট্রেল ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। উত্তরবঙ্গের পর্যটনকে আরও বেশি রোমাঞ্চকর করে তুলতে এই প্রথম পর্যটকদের জন্য সরকারিভাবে সাইকেল ট্রেলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান অ্যাসোসিয়েশান ফর কনজারভেশান অ্যান্ড টুরিজম বিভাগের কনভেনার (আহ্বায়ক) রাজ বাসু।সেই মত দেশের বিভিন প্রান্ত থেকে এই দুই পর্যটনে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে এসে তাদের পরামর্শ নিয়ে স্থানীয় বনবস্তির ছেলে-মেয়েদের স্কিল ট্রেনিং দিয়ে পারদর্শী করে তোলার কাজ শুরু হয়েছে।

২১গিয়ারে সাইকেলে পাড়ি দিন জঙ্গলের পথে

এই সাইকেল ট্রেলের জন্য সাধারণ সাইকেল ব্যবহার করা হবে না। ২১ গিয়ারের প্যাডেল সাইকেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই তথ্য জানিয়ে রাজ বলেন, “যাদের সাইকেল চালানোর অভ্যাস আছে তাদের প্রশিক্ষন প্রাপ্ত যুবক যুবতিরা ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই ২১ গিয়ারের সাইকেল চালানো শিখিয়ে দিতে পারবে। এরপর ট্যুরিস্টদের গাইড করতে আগে একজন ও পেছনে আর একজন প্রশিক্ষন প্রাপ্ত গাইড তাদের রাস্তা দেখাবে ও এসব জায়গায় বর্ননা দেবে।” ”  প্রায় ২৩ জন স্থানীয় বনবস্তির যুবক যুবতীদের স্কিল ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। কিছু যুবক-যুবতীদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে পর্যটকদের গাইড করার জন্য, আর কিছু ছেলে-মেয়েদের বনবস্তি ও স্থানীয় গ্রামের লোকসংস্কৃতি অনুষ্ঠানের জন্য।” বলেন রাজ বসু।

তাহলে আর দেরী কেন! পুজোয় বেড়িয়ে পড়ুন গাজলডোবা।

Published on: সেপ্টে ২, ২০১৮ @ ১১:৫২

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 77 = 80