সংবাদদাতা-বাপ্পা মন্ডল ছবি-বাপন ঘোষ
Published on: জানু ২৫, ২০১৯ @ ১৯:১৯
এসপিটি নিজ, মেদিনীপুর, ২৫ জানুয়ারিঃ “রক্ত দান মহৎ দান।” একথা তিনি শুনে এসেছেন। আর ভেবেছেন যদি কোনওদিন সুযোগ আসে সেদিন এই কাজে তিনিও ব্রতী হবেন। সেইসময় এসে যায় তাঁর সামনে। যখন তাঁর কাছে প্রস্তাব আসে যে এক মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচাতে হলে তাঁর সাহায্য প্রয়োজন। দিতে হবে পর্যাপ্ত রক্ত। শোনামাত্রই রাজী হয়ে যান প্রস্তাবে। এগিয়ে আসেন রক্ত দান করতে। আর সেটা এমন একটা সময় করলেন যখন সেই রোগীর নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত পাওয়াই সমস্যা হয়ে পড়েছিল। বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট অব হেলথ-এর ছাত্রী রুদ্রানী আড্ড নীরবে এমনই এক মহান কাজ করে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রাখলেন।
জানা গেছে, বিদ্যাসাগর ইনস্টিটিউট অব হেলথের হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে ভর্তি ৪৭ বছর বয়সী শেখ রাজেদ।রক্তাল্পতা ধরা পড়ে তার শরীরে। রক্তের গ্রুপও নেগেটিভ হওয়ায় বাড়ির আত্মীয় স্বজনরা মেদিনীপুর, খড়্গপুর থেকে শুরু করে কলকাতা ব্লাড ব্যাংক চারদিকে খোঁজ করতে থাকেন। কিন্তু তাদের ছোটাছুটি সার হয়।মেলেনি রক্ত।হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রক্তের খোঁজ লাগাতে থাকে। তারা গোপীবল্লভপুর ব্লাড ব্যাংক-এ এক ইউনিট ব্লাড পায়। কিন্তু প্রয়োজন হয় আরও রক্তের।
এই সময় হাসপাতালের অভিজিৎ দাশ গোস্বামী এবং অমিত পাল-এর প্রচেষ্টায় ইনস্টিটিউট এর ছাত্রী রূদ্রানী আড্ড-র সঙ্গে যোগাযোগ করেন।তিনি ডোনার হতে রাজী হন। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তদান করেন।ছাত্রীর দেওয়া রক্তে এখন অনেকটাই সুস্থ রোগী। রোগীর মেয়ে রূবিনা খাতুন এই ঘটনায় অভিভূত। হাসপাতালে বাবার পাশে বসেই তিনি জানান-“ও যে এগিয়ে এসে স্বেচ্ছায় আমার বাবাকে রক্ত দিয়েছেন এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।তার কাছে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই কৃতজ্ঞতাও।
ইনস্টিটিউট-এর অধ্যক্ষ ডঃ হরিহর ভৌমিক বলেন- “আমার কলেজের ছাত্রী রূদ্রানী আড্ড আমাদের ইনস্টিটিউট এ মেডিসিন বিভাগে ভর্তি থাকা এক মুমূর্ষু রোগীকে ও-নেগেটিভ গ্ৰুপের রক্তদান করে বাঁচিয়েছে- এই খবর জেনে খুবই গর্বিত মনে করছি। আসলে গত ডিসেম্বর মাসে কলেজের শীতকালীন অধিবেশনে স্বাস্থ্য বিষয়ক আলোচনার প্রসঙ্গক্রমে রক্তদানের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। সেই সময় কলেজের জাতীয় সেবা প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক-সেবিকারা অঙ্গীকার করেন যে কোনো মরনাপন্ন মানুষকে রক্তদানে তারা কখনোই পিছুপা হবে না। সেই অঙ্গীকার রক্ষা করতে ছাত্রীটি যেভাবে এগিয়ে এসেছে তা সকল ছাত্র-সমাজ ও জাতীয় সেবা প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবক-সেবিকাদের আগামী দিনে রক্তদানে আরো উদ্বুদ্ধ করবে। এই আশা রেখে আনন্দলাভ করছি এবং শেখ রাজেদক-এর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে ছাত্রীর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।এই মহৎ কাজের জন্য অভিজিৎ এবং অমিতকেও শুভেচ্ছা জানাই।”
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ডঃ মনোরঞ্জন মাইতি এই মহৎ কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত এবং ছাত্রী রূদ্রানী আড্ড কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
Published on: জানু ২৫, ২০১৯ @ ১৯:১৯