নাম না করে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ মমতারঃ ছুঁড়ে দিলেন সাত প্রশ্ন-কোথায় ছিলেন সেদিন

Main রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা– বাপ্পা মণ্ডল

Published on: নভে ২৬, ২০১৮ @ ১৭:৫১

এসপিটি নিউজ, জামবনী, ২৬ নভেম্বরঃ একটা সময় ছিল যখন জঙ্গলমহলের নাম শুনলে লোকে ভয়ে কাঁপত। সেখানে যাওয়া তো দূরের কথা আলোচনাতেও আসত না। আর সেইসময় প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বারে বারে জঙ্গলমহলের সেইসব অত্যাচারিত মানুষগুলির পাশে দাঁড়াতে ছুটে যেতেন আজিকের মুখ্যমন্ত্রী তখনকার বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ সেই ঝাড়গ্রামের জামবনীতে সভাস্থলে দাঁড়িয়ে সেকথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। একই সঙ্গে নাম না করে রাজ্যের এই মুহূর্তে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির প্রতি তীব্র কটাক্ষ করে তাদের দিকে ছুঁড়ে দিলেন সাতটি প্রশ্ন। জানতে চাইলেন মাওবাদী সন্ত্রাসকালে আপনারা তখন কোথায় ছিলেন।

  • প্রশ্ন ১)কোথায় ছিলেন- যখন রোজ এখানে রক্ত ঝড়ত?
  • প্রশ্ন ২)কোথায় ছিলেন বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারত না?
  • প্রশ্ন ৩)কোথায় ছিলেন গাড়ি চলত না?
  • প্রশ্ন ৪)কোথায় ছিলেন যখন হাসপাতাল ছিল না?
  • প্রশ্ন ৫)কোথায় ছিলেন যখন স্কুল-কলেজ ছিল না?
  • প্রশ্ন ৬)কোথায় ছিলেন যখন এখানকার ছেলে-মেয়েরা বেরোতে পারত না?
  • প্রশ্ন ৭)মাওবাদী কিংবা পুলিশের হাতে তাদের রোজ গ্রেফতার হতে হত? কোথায় ছিলেন তারা?

যারা উলটো-পালটা বলে ভাগাভাগি করে রক্তের কথা বলে আর বড় বড় ভাষন দেয় ধর্মের নামে দাদাগিরি করে তাদের আমি জিজ্ঞাসা করি- কোথায় ছিলেন? প্রশ্ন তোলেন মমতা।

পুরনো দিনের কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে মমতা বলতে থাকেন- “সেইসময় প্রতি বছর ৪০০ থেকে ৫০০ লোক খুন হত। কত বাড়ির ছেলে-মেয়েরা পালিয়ে গেছে। আমি আসতাম যখন ঝাড়গ্রামে আমাকে বলত- বিকেলের আগে ঢুকে যান। সন্ধেবেলায় যাবেন না। ওখানে খুন হয়ে যাবেন। খবরদার যাবেন না। সেদিন কেউ আসেনি। আমি কিন্তু আসতাম। ভাদুতলায় এসছিলাম। নতুন স্টেশন করে দিয়ে গিয়েছিলাম। এসেছিলাম লালগড়ে। তখন কেউ ঢুকতে সাহস পায় নি।লালগড় থেকে ফেরার সময় পিড়াকাটার জঙ্গলে তিন ঘণ্টা আটকে ছিলাম। তাও ভয় পাইনি। বুকে সাহস সঞ্চয় করে লড়াই করেছিলাম। ভুলে গেছেন সেসব দিনের কথা? এসেছিলাম ভাদুতলায়। গিয়েছিলাম লালগড়ে, গিছলাম বেলপাহাড়িতে, গিয়েছিলাম নয়াগ্রাম, গিয়েছিলাম পিড়াকাটার জঙ্গলে। কোথায় যায়নি? সেদিন কেউ ছিল না আপনাদের পাশে।”

সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে নাম না করে বিজেপির প্রতি ঝড়ে পড়ে তাঁর তীব্র কটাক্ষ। বলেন-“আদিবাসী-মাহাতোদের মধ্যে লাগিয়ে দিচ্ছে। দিয়ে বলছে- তুমি কুর্মি আলাদা আমি আদিবাসী আলাদা। তুমি হিন্দু আলাদা আমি মুসলমান আলাদা।তুমি ছেলে আলাদা আমি মেয়ে আলাদা। তুমি ভাই আলাদা আমি বোন আলাদা।” মুখ্যমন্ত্রী বলেন- “আমরা এসব করি না। আমরা যেমন সাঁওতালি-অলচিকি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখান না কোথায় হয়েছে উড়িষ্যায় যান আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দেখে আসুন অলচিকিতে হয়েছে কিনা আমাদের এখানে ক্লাস এইট পর্যন্ত হয়ে গেছে। এমন কি ডবল্যুবিসিএস-এও আমরা অ্যালাও করেছি অলচিকি ল্যাঙ্গুয়েজ।অনেক স্কুল করে দেওয়া হয়েছে। প্যারা টিচার নেওয়া হচ্ছে। আগামি দিন যখন অলচিকির সিলেবাস পাবেন ছেলে-মেয়েরা তখন আস্তে আস্তে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ও করবে। আসতে আসতে উন্নতিও হবে। আমি চাই আদিবাসীরা তাদের নিজেদের মাতৃভাষা নিজেদের ভাষা জানুক। আজকে রাজবংশী ভাষাকেও আমরা মাহাত্ম্য দিয়েছি। কামতাপুরী ভাষাকে দিয়েছি। আমরা কুরমালিকে দিয়েছি।আমরা কুরুককে দিয়েছি। আমরা হিন্দি ভাষাকে দিয়েছি। আমরা উর্দু ভাষাকে দিয়েছি। যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে তাই করা হয়েছে। ঝাড়গ্রামে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ও হয়েছে বিশ্ববিদ্যাল্য হচ্ছে নতুন জেলা আপনারা চেয়েছিলেন নতুন জেলা দেওয়া হয়েছে।”

ফাইল ছবি

Published on: নভে ২৬, ২০১৮ @ ১৭:৫১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 2 =