তিন দফাতেই কেন সাত-আটজন খুন হয়ে গেল, কই পঞ্চায়েতের ভোটেও তো এত হয়নি- প্রশ্ন মমতার

Main দেশ ভোট সংবাদ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: এপ্রি ৬, ২০২১ @ ২০:৫৪

এসপিটি নিউজ, কালচিনি, ৬ এপ্রিল:   কালচিনির সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশন থকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিজেপির বিরুদ্ধে স্মস্ত ক্ষোভ উগরে দিলেন। প্রশ্ন তুললেন- মাত্র তিন দফার ভোট হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে সাত-আটজন খুন হয়ে গেল কেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও, কই পঞ্চায়েতের ভোটের সময়ও তো এমনটা হয়নি!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন রীতিমতো ক্ষোভ উগরে বলে ওঠেন- “আমি দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি নির্বাচন কমিশনকে- আপনারা কি সিআরপিএফ-এর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন?সিআইএসএফ, আইটিবিপি, বিএসএফ। তারা মারধর করছে সকাল থেকে। আমার খানাকুলের প্রার্থীকে মারধর করা হয়েছে। আমার আরামবাগের মহিলা প্রার্থী সুজাতা মন্ডল-কে পেটানো হয়েছে।তারা মহিলাদের উপর অত্যাচার করছে।”

আমাদের প্রার্থীকে বুথে ঢুকতে দেবে না, চালাকি হচ্ছে- মমতা

“সুজাতা মন্ডল এক জন তফশিলি মেয়ে তার উপর আক্রমণ করেছো। তার নিরাপত্তা রক্ষীর মাথা তোমরা ফাটিয়ে দিয়েছো।আমার খানাকুলের প্রার্থী নাজমুলকে তোমরা মেরেছো। সওকত মোল্লা একজন বিধায়ক। একজন প্রার্থী তাকে বলছে তোমাকে বুথে ঢুকতে দেবো না। খালি বিজেপিকে দেবে। চালাকি হচ্ছে এটা। আমি মা-ভাইদের বলবো জোট বাঁধুন তৈরি হোন। আপনারা এক হয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী যা যা করার দরকার তাই করুন।”

আমি সকাল থেকে ১০০টি অভিযোগ করেছি-মমতা

“কি বলছে – বলছে বিজেপিকে ভোট দাও।না হলে আমরা দেখে নেব। তোমরা কি দেখে নিবে। একদিনের জন্য এসেছো একদিনের অতিথি। কাল তুমি চলে যাবে। কাকে দেখে নেবে। যারা যারা এই কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে বলছি। আমার মা-বোনেরা যদি দেখেন আপনাকে ভোট দিতে বাধা দিচ্ছেন, আপনাকে অত্যাচার করছে নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওইখানকার যে কম্যান্ডান্ট আছে তার বিরুদ্ধে আপনারা এফআইআর করুন। আপনারা নির্বাচন কমিশনকেও জানান। আমি সকাল থেকে ১০০টি অভিযোগ করেছি। আমি প্রত্যকটা এফআইআর করবো। আমি দেখবো যাতে কোন কম্যান্ড্যান্ট করছে এবং কার নির্দেশে করছে।” বলেন মমতা।

‘আমি সমস্ত সংবাদ মাধ্যমকে প্রমাণ সহ এসব দেখাবো’

এইসময় রীতিমতো ঝাঁঝিয়ে উঠে মমতা বলেন- “তোমাকে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজকে তোমরা আমাদের থেকে সব কেড়ে নিয়েছো নির্বাচনের সময়। আজ যদি এতই ভালো হয় তাহলে বলো- তোমাদের কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও কেন সাত-আটটা খুনের ঘটনা ঘটে গেল। তিনিটে পর্যায়ের ভোটে সাত-আটটা মার্ডার হয়েছো। আমার তৃণমূল কংগ্রেসের চারজন মার্ডার হয়েছে। কই পঞ্চায়েতেও তো এত হয়নি। আজ তোমাদের জন্য বিজেপির গুন্ডারা বাইরে থেকে এসে গুন্ডামি করছে। অত্যাচার করছে। আমি সমস্ত সংবাদ মাধ্যমকে প্রমাণ সহ এসব দেখাবো।”

মমতার সতর্কতা- খেয়াল রাখবে কোনওরকম গুন্ডামি-মাস্তানি যেন না করতে পারে

এরপর মমতা মঞ্চে থাকা তাঁর দলীয় কর্মী-সমর্থক ও প্রার্থীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন- “ভয় পাবেন না। রাজেশ এখন থেকে জেনে রাখো ওরা এসব করছে। ভুটানে গুন্ডা নেই। আসাম থেকে গুন্ডা ঢুকিয়ে দেবে। মাথায় রেখো। সৌরভ মাথায় রেখো। মৃদুল মাথায় রেখো। বাবলু মাথায় রাখবি। সবাই মিলে মাথায় রাখবে। যাতে কোনওরকম গুন্ডামি-মাস্তানি না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখবে। আজ সকাল থেকে আমি শুধু এটাই দেখছি।”

‘গুন্ডামি করেও ভোটে জেতা যায় না’

“এত করেও মনে রাখুন, গুন্ডামি করেও ভোটে জেতা যায় না। বুদ্ধি দিয়ে মানুষের সমর্থন দিয়ে ভোটে জিততে হয়। ক’জনকে ভয় দেখাবে?পাঁচজনকে, পাঁচশো জনকে। শুনুন পরশু নাড্ডা এখানে মিটিং করতে এসেছিল। দেখেছে একটা মিটিংএও লোক নেই। দিল্লিতে গিয়ে মিটিং করেছে। গিয়ে সিআরপিএফ-কে বলে দিয়েছে যাও গিয়ে ক্যাপচার করো। যাও গিয়ে বুথ ক্যাপচার করো। বিজেপির গুন্ডাদের নিয়ে।”

‘দিদি!দিদি! বলে আমায় ভেঙাচ্ছে’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেন- “একটা দেশের গণতন্ত্র আপনারা শেষ করে দিলেন। গণতন্ত্রকে ধর্ষিত করছেন? আমি সমস্ত সংবাদ মাধ্যম ও আমার আন্তর্জাতিক মিডিয়া বন্ধুদের অনুরোধ করব- দেখে যান, কিভাবে এরা পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্রফের ক্ষমতার অপব্যবহার করছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয় যে ট্রাম্পও বোধ হয় এত দূর যায়নি। নরেন্দ্র মোদি এত দূর গেছে। ও তো নির্বাচনের দিন আসে আর মিটিং করে ভাষণ দেয়। আর বলে- দিদি! দিদি! ব্যাঙাচি জানেন তো ব্যাঙের বাচ্চাকে বলে ব্যাঙাচি। আর ওরা দেয় ভেঙাচি। আমাকে ভেঙাচ্ছে। আমাকে যত ভেঙাবে আমি তত খুশি। তার মানে আমার ইম্পর্ট্যান্ট আছে বলেই তো ভেঙাচ্ছো না! না হলে তুমি কেন ভেঙাবে।”

Published on: এপ্রি ৬, ২০২১ @ ২০:৫৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 82 = 89