সংবাদদাতা- বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: জানু ২৯, ২০১৮ @ ২৩:৫৮
এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ২৯ জানুয়ারিঃ এসব শুধু এই পশ্চিমবঙ্গেই সম্ভব। যাদের যত বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে তারা তত বেশি মাথায় চড়ে বসবে। সারা দেশে এমন কোনও রাজ্য বা এলাকা আছে যেখানে তাদের এলাকার ভাষাভাষির স্কুলে গিয়ে অন্য ভাষভাষি তাদের নিজস্ব দাবিতে স্কুলের ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছে। না, কোনও জায়গায় খুঁজে পাওয়া যাবে না। এসব শুধু এ রাজ্যেই সম্ভব। বাংলা মাধ্যমের স্কুলে সাঁওতালি ভাষা কেন পড়ানো বন্ধ করা হল, কেন সাঁওতালি শিক্ষকরা আসছেন না তাঁর জবাব চেয়ে একদিন গোটা স্কুল অকেজো করে দিলেন সাঁওতালি ভাষাভাষিরা।প্রশাসনের কোনও সক্রিয়তা কাজে এল না। কাজে এল না।অবশেষে নারায়নগড় সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক মানিক কুমার সিংহ মহাপাত্রর আশ্বাসে তারা অবরোধ তুলে নেয়।
আমাদের রাজ্যে কোথাও গোর্খারা, কোথাও সাঁওতালিরা, কোথাও অলচিকি ভাষাভাষিরা আবার কোঠাও হিন্দি ভাষিরা এমন আন্দোলন মাঝেমধ্যে করে। আর সেই আন্দোলন কতটা ভয়ানক হয়ে ওঠে তা তো আমরা সকলেই দেখেছি কিছুদিন আগে দার্জিলিংয়ের ঘটনায়।
এদিন নেকুড়সেনি বিবেকানন্দ বিদ্যাভবনের গেটে তালা লাগিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে সাঁওতাল ভাষাভাষি অভিভাবকরা ও ভারত জাকাত মাঝি পরগনার সদস্যরা।বিদ্যালয় থেকে সাঁওতালি বিভাগে শিক্ষক ছাঁটাই, এই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ এবং অন্যান্য দাবিতে তারা এদিন বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন বন্ধ করে দেয়।
একটা জিনিস লক্ষ্য করলে বোঝা যাবে এখানে সব মানুষের সমান অধিকার তাই এ ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। বিদ্যালয়টিতে কি শুধু সাঁওতালিরাই পড়াশুনো করে? তা যদি না হয়ে থাকে তাহলে তাদের অন্যদের শিক্ষাগ্রহণে বাধা সৃষ্টি করার অধিকার আসে কোথা থেকে? এই প্রশ্নও কিন্তু এদিন উঠেছে।
বিদ্যালয়ের ছাত্র অনির্বাণ বর্মন জানায়-“বিদ্যালয় এসে দেখি গেটে তালা ঝুলিয়ে পতাকা লাগিয়ে কিছু পোস্টার ছিটিয়ে অবস্থান করছে।স্কুল গেট লাগানোর কারণে স্কুলে ঢুকতে পারিনি।তাদের জানিয়েছি স্কুলের গেট খোলার জন্য।গেট খোলা না থাকায় আজ পড়াশুনা হয়নি।” তাহলে ভাবুন একজন আপাদমস্তক বাঙালি ছাত্র তার নিজের রাজ্যে নিজের স্কুলে ধুকতে গিয়ে বাধা পেয়ে চলে যেতে বাধ্য হল। অনেকেই প্রশ্ন করেছে, ঝাড়খণ্ডে গিয়ে কোনও সাঁওতালি স্কুলে গিয়ে সেখানে বাঙলা ভাষাভাষি অভিভাবকরা এমনটা করার সুযোগ পাবেন? করলে তাদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করা হবে?
বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিমল কুমার শিট জানান-“এভাবে গেট আটকে সমস্যার সমাধান হয় না।প্রধান শিক্ষক এলে দুপক্ষ বসে আলোচনা করলে মিটে যাবে।”
আসলে এভাবেই চলছে এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা, যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ।
Published on: জানু ২৯, ২০১৮ @ ২৩:৫৮