ঘূর্ণিঝড়ে কি করবেন, কি করবেন না-সময় থাকতে জেনে নিন

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৩ মে: ঘূর্ণিঝড় জনজীবনকে একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দেয়। অতীতে এমনটা হয়েছে। তবে অতীতের সমস্ত ঘূর্ণিঝড়কে ছাপিয়ে গিয়েছে গতবারের আমফান। তাই আগে থেকে এবার সমস্ত রকমের প্রস্তুতি নিউএ রেখেছে প্রশাসন। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার মানুষকে সুরক্ষা দিতে ও নিরাপদে রাখতে যা যা করনীয় তাই করে চলেছে। আবহাওয়া দফতর এবার তাই সাধারণ মানুষকে জানিয়ে দিয়েছে কি করবেন আর কি করবেন না ঘূর্ণিঝড়ে। আসুন সেদিকে একটু দেখে নেওয়া যাক।

কি করবেন
  • টালির বাড়ি হলে, হাল্কা ভাবে লাগানো টালি সিমেন্ট দিয়ে শক্ত ভাবে লাগান। ঘরের জানালা দরজা ভাঙা থাকলে, সারিয়ে নিন।
  • ঘরের চারিদিক ভালো ভাবে লক্ষ্য রাখুন। মরা ও শুকিয়ে যাওয়া গাছের ডাল বা গাছ সরিয়ে ফেলুন। সাইনবোর্ড, টিনের শিট, কাঠের গুড়ি, ময়লা ফেলার ধাতব পাত্র ও আলগা ইঁটের মত জিনিষ ভাল ভাবে বেঁধে রাখুন।
  • কাঁচের জানালার পিছনে শক্ত কাঠের বোর্ড আটকে দিন।
  • অন্যথায় কাঁচের জানালার সাথে কাগজের শিট আঁঠা দিয়ে আটকে দিন। এতে কাঁচ ভাঙলেও তা চারিদিকে ঠিকরে কাউকে আহত করবে না।
  • হারিকিনে যথেষ্ট পরিমানে কেরোশিন ভরে রাখুন। টর্চ ও ব্যাটারি হাতের কাছে তৈরী রাখুন।
  • পরিত্যক্ত ও জীর্ণ বাড়ি সত্তর ভেঙে ফেলুন।
  • রেডিও সেট এবং ট্রানজিস্টার থাকলে তা কার্যকরী অবস্থায় রাখুন। অতিরিক্ত ব্যাটারির যোগান রাখুন।
  • নিয়মিত রেডিওতে নিকটবর্তী অল ইন্ডিয়া রেডিওর আবহাওয়ার সতর্কীকরণ বুলেটিন ও উপদেশ শুনুন । অন্যকে আপনার প্রাপ্ত তথ্য পৌঁছে দিন।
  • কেবলমাত্র সরকারী দপ্তর থেকে প্রাপ্ত সংবাদই প্রচার করুন।
  • সমুদ্রতটবর্তী নিচু অঞ্চল বা অন্য কোন নিচু অঞ্চল যা জলোচ্ছাষে প্লাবিত হতে পারে, সেসব জায়গা তাড়াতাড়ি পরিত্যাগ করুন। প্লাবন আসার যথেষ্ট সময় আগেই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। দেরী করে বোকা বানবেন ন।
  • যদি আপনার বাড়ি নিচু অঞ্চলে না হয় আর শক্ত-পোক্ত হয়, তবে আপনার বাড়ি এমন অবস্থায় নিরাপদ। কিন্তু প্রয়োজনে সরকার উপদেশ মেনে দেরী না করে আপনার ঘরও পরিত্যাগ করুন।
  • প্রবল বর্ষনে নদীর প্লাবনের ফলে যে সব জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি হতে পারে, সেসব জায়গায় অথিরিক্ত সতর্ক থাকুন।
  • অতিরিক্ত খাবার বিশেষতঃ শুকনো খাবার এবং অল্প প্রস্তুতিতে তৈরী করা যায় এমন খাবারের যথেষ্ট যোগান রাখুন।
  • আপনি যদি আক্রান্ত জায়গায় অবস্থান করেন, তবে আপনার গুরূত্বপূর্ন জিনিষ ক্ষতির হাত থেকে বঁচাতে উপরের তলায় রাখুন।
  • কেরোশিনের টিন, ধাতব পাত্র, কৃষিকার্যে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, রাস্তায় ব্যবহৃত ধাতব পাত নির্মীত রোড সাইন ঈত্যাদি জিনিষ, যা কিনা প্রবল ঝড়ে প্রানঘাতী হতে পারে, সেগুলো আগে থেকে খুলে কোন বদ্ধ ঘরে বন্ধ রাখুন।
  • যেদিক থেকে প্রবল হাওয়া বইছে, তার উল্টো দিকের জানলা বা দরজা খুলে রাখার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
  • শিশু ও বয়স্কদের প্রয়োজনীয় বিশেষ খাদ্যের যোগান রাখুন।
  • যদি সাইক্লোনের কেন্দ্রবিন্দু আপনার এলাকার উপর দিয়ে যায়, তবে এই কেন্দ্রবিন্দু চলে যাওয়ার পর ক্ষনিকের জন্য (আধ ঘন্টা বা তারও বেশী) ঝড়-বৃষ্টি বন্ধ থাকবে। এটি খুব গুরূত্বপূর্ণ সময়। এ-সময়ে যথা সম্ভব সতর্ক থাকুন ও আপতকালিন মেরামত করে নিন। মনে রাখবেন অচিরেই উল্টো দিক থেকে আরও ধংসাত্মক ঝড় আসতে চলেছে।
  • শান্ত থাকুন। আপনার বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষমতা অন্যকে সাহস ও সাহায্য দেবে।
  • যতক্ষন না পর্য্যন্ত উপযুক্ত কতৃপক্ষ থেকে আশ্বস্থ্ হচ্ছেন, ঘরে না ফিরে নিরাপদ আশ্রয়েই থাকুন।
  • লাইটপোষ্ট থেকে ঝুলন্ত তার এড়িয়ে চলুন।
  • সাহায্যের প্রয়োজন ছাাড়া আক্রান্ত এলাকা এড়িয়ে চলুন।
  • দুষ্কৃতিদের দুঃষ্কর্ম প্রতিরোধ করুন। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্য নন।
  • লরি, বাস, গাড়ি ইত্যাদি সাবধানে চালান।
  • বাসস্থানের আশেপাশের ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করুন।
  • উপযুক্ত কতৃপক্ষকে আপনার ক্ষয়-ক্ষতির কথা জানান।
  • আক্রান্ত এলাকায় থাকা ব্যক্তির সুরক্ষার কথা অতি সত্তর ওনার আত্মীয়দের জানান।
কি করবেন না
  • গুজবে কান দিয়ে ভূল পথে চালিত হবেন না।
  • উদ্ধারকারী দল না বললে নিরাপদ আশ্রয় ছাড়বেন না।
  • সাইক্লোন বয়ে যাওয়ার সময় ক্ষনিকের নিরবতার সময় ভূলেও নিরাপদ আশ্রয় ছাড়বেন না। যদিও এ-সময়ে আপতকালিন মেরামত করে নিতে পরেন।
  • লাইটপোষ্ট থেকে ঝুলন্ত তার স্পর্শ করবেন না। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হতে পারেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

19 − = 13