শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোনঃ ঝড়ে গেল কত অসহায় প্রাণ

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ৩০, ২০১৮ @ ০০:৪৪

এসপিটি নিউজ, দৌলতাবাদঃ দিনের শুরু থেকে শেষ-সারাক্ষন শুধু মোবাইল ফোনের দাপট। কাজের চেয়ে অকাজই বেশি। রাস্তাঘাটে, স্কুলে-কলেজে, অফিস-কাছারি সর্বত্র শুধু মোবাইল ফোনের দাপট।আর সেই ফোনই কাল হয়ে উঠল দৌলতাবাদের মর্মান্তিক বাস দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে। চালকের হাতে মোবাইল ফোন। তাও আবার চলন্ত বাসে-ভাবা যায়! এক হাতে মোবাইলে চলছে কথা আর এক হাতে স্টিয়ারিং থুড়ি গোটা বাসের যাত্রীদের প্রাণভোমরা। শেষ পর্যন্ত সেই প্রাণভোমরাই বেরিয়ে গেল। চলে গেল বহু দূর। খোঁজ মিলল না সেই বাস চালকের।

কারও বাবা, কারো ভাই, কারো স্বামী, কারো মা, কারো মেয়ে কিংবা ছেলে, কারো নাতি কিংবা নাতনি, কারও বা স্ত্রী, কারওবা বোন আরও কত কী! সব শেষ হয়ে গেলে মাত্র এক থেকে দু’ঘণ্টার ব্যবধানে।সেই সমস্ত বাস যাত্রীদের কথা ছেড়েই দিন তাদের অনেকেই এখন আর বেঁচে নেই তাই তাদের ভাবারও অবকাশ নেই। কিন্তু যে মানুষগুলে আগামীদিনগুলি স্বজন হারানোর তীব্র জ্বালা বয়ে নিয়ে বেড়াবেন, তাঁদের অবস্থাটা কি হবে সেটা কি কেউ ভাবতে পারছেন?

একজন সারকারি বাসের চালক কি করে এতটা অবিবেচক হন, যেখানে তাঁর হাতে গোটা বাসের যাত্রীদের জীবন নির্ভর করে আছে- সেখানে তিনি কিভাবে হাতে মোবাইল ফোন নিয়ে কথা বলতে বলতে বাস চালান? এ তিনি কি করলেন? আমাদের কারও জানা নেই ঐ বাস চালক জীবিত আছেন কিনা!

তবে সাধারণ মানুষের জানার অধিকার আছে তিনি জীবিত না মৃত? সেটা সরকারের তদন্ত করে জানিয়ে দেওয়া উচিত। যদি সে মারা গিয়ে থাকে তাহলে আর কোনও প্রশ্নই থাকছে না। আর যদি বেঁচে থাকেন তবে তাঁকে খুঁজে বের করে কড়া ব্যবস্থা নিয়ে সরকারের দৃষ্টান্ত তৈরি করা উচিত বলে মনে করেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা।

সকালে তারা ঘর ছেড়ে বেরিয়েছিলেন। সেই তাদের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের শেষ দেখা, শেষ কথা বলা। তারপর এখন শুধুই এক গভীর শূন্যতা। এক রাশ চাপা কান্না-দুঃখ-কষ্ট।

শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোন যে কত নির্মম হয়ে উঠতে পারে তা দেখল সারা দেশ। একের পর এক জীবন নিমেষে শেষ হয়ে গেল। পড়নের জামা-প্যাণ্ট, শাড়ি-শালোয়াড়-কামিজ, শাখা-সিঁদুর সব অক্ষত। শুধু প্রাণটাই উধাও হয়ে গেছে। নিথর দেহগুলি ফ্যালফেলিয়ে চেয়ে আছে। তারা সকলেই নির্বাক-নিশ্চুপ। এক নিমেষে যেন সব কিছু পালটে গেল।

এর দায় কে নেবে বলতে পারেন? ওদের জীবনের দাম কি মোটে পাঁচ লাখ?

ছিঃ ছিঃ ছিঃ-ধিক্কার।

Published on: জানু ৩০, ২০১৮ @ ০০:৪৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 1 =