
অনিরুদ্ধ পাল, ঢাকা
Published on: ফেব্রু ২০, ২০১৮ @ ১০:৪২
এসপিটি নিউজ, ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারিঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমিকা কারও অজানা নয়। যেভাবে দেশের জন্য তারা নিজেদের প্রাণ বলিদান দিয়ে গেছেন তা ভোলা যায় না। বাংলাদেশের মানুষ তা আজও ভোলেনি। সংগ্রামী সেইসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তারা সবসময় স্মরণ করে চলেছে। বাংলাদেশের বর্তমান আওয়ামি লীগ সরকার এইসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সবসময় সম্মান প্রদর্শন করে চলেছেন। করছে গোটা দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এইসব বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য অনেক ভাতা চালু করেছেন। এমনকি তাদের ঘরের ছেলে-মেয়েদের জন্য চাকরিতে কোটা চালু করেছেন। আর তা নিয়েই হইচই শুরু করে দিয়েছে একটা অংশ। তারা মামলা ঠুকে দিয়েছে।সোমবার ঢাকায় ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবে সন্বয় পরিষদের এক আলোচনা সভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান মামলাকারীদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ্য হওয়ার আহ্বান জানান। সেইসঙ্গে তিনি মামলাকারীদের মামলা প্রত্যাহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার পরামর্শ দেন
মন্ত্রী বলেন, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯, ১৯৭২সালের আন্দোলন সঙ্গঘতিত হয়েছিল একুশের উদ্দেশ্যে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা.১৯৬৬ সালে যখন বঙ্গবন্ধু আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন সেই আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা রক্ত দিয়েছেন। তারপর সেই আন্দোনন গণ অভ্যুত্থানের সৃষ্টি করেছিল। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রামের পাশাপাশি সেদিন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কেন্দ্রিয় গণতান্ত্রিক সঙ্গগ্রাম পরিষদ। সেই আন্দোলনের পথ ধরে যখন আয়ুব খানের পতন হল তখন বাংলাদেশে নির্বাচন হল। নির্বাচনে আওয়ামি লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেল।
বাংলাদেশের জাতির জঙ্ক বঙ্গবন্ধু মুজিবর রহমানের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী শাজাহান খান বলতে থাকেন , বঙ্গবন্ধু বাংলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বলেছিলেন, প্রয়োজন হলে আরও রক্ত দেব কিন্তু বাংলার স্বাধীনতা অর্জন করব। বাংলার মানুষের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলেন ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। সেই দুর্গ গড়ে তোলা হয়েছিল। তারপর সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অররজন করলাম। এরপর জাতির পিতাকে হত্যা করা হল। এই হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে নস্যাত করা হবে। পাকিস্তানের সঙ্গে চক্রান্ত করা হল। তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে এসছিল। কিন্তু পারেনি। পারেনি কারণ সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। সত্য সূর্যের আলোর মতো উদ্ভাসিত হয়। সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাতির জনকের দেখানো পথে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ কয়েক বছর পর আন্দোননের মধ্য দিয়ে এক সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা হয়েছে।
মুক্তি যোদ্ধাদের আজ ভাতা দেওয়া হচ্ছে।নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে সারা বাংলাদেশে। এমনকি তাদের সন্তানদের জন্য তিনি কোটা নির্দ্ধারণ করে দিয়েছেন তিনি চাকরিতে। একথা বলে মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সন্তানদের উদ্দেশ্যে বলতে থাকেন, শেখ হাসিনা যা দিয়ে গেল তা রক্ষা করতে হবে। যেমন করে আমাদের জাতির জনক লড়াই করার নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই নির্দেশ অনুসরণ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছি ঠিক সেভাবে তোমাদের যে চাকরিতে কোটা বেধে দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে যে মামলা দায়ের করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে তোমাদের গর্জে উঠতে হবে।
এরপর মন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বে থাকেন, তোমাদের আন্দোলন করতে হবে সংগ্রাম করতে হবে। তোমাদের চাকরির কোটা ঠিক করে দিয়ে যাবে। চাকরির কোটা কেন করেছেন শেখ হাসিনা । মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তোমাদের জন্য এই কোটা করেছেন। তোমাদের আজ তাই মুক্তিযোদ্ধাদের যে আদর্শ সেই আদর্শকে সামনে রেখে তোমাদের এগিয়ে যেতে হবে। তোমরা আনাদের সন্তান। যা তোমাদের দিয়ে গেল শেখ হাসিনা তা তোমাদের রক্ষা করার দায়িত্ব রয়েছে। তোমাদের মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে হবে।
সবশেষে ন্যাশনাল প্রেস ক্লাবের প্রেক্ষাগৃহে শ্রোতাদের ত্মুল হর্ষধ্বনির মধ্যেই নৌ-পরিবহনমন্ত্রীর সাফ কথা, এই আন্দোলন প্রত্যাহার করতে হবে। আপনারা মামলা প্রত্যাহার করে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে কেউ যদি অসম্মান প্রদর্শন করেন তাহলে আমাদের বুকে ব্যাথা লাগে। ওদের ব্যাথা নাও লাগতে পারে। আমাদের ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে আমরা সবাই এক। তাই এই যে সমন্বয় পরিষদ গড়ে তোলা হয়েছে তার মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপারে এক হয়ে লড়াই করতে হবে। ঐক্য হল সবচেয়ে বড় শক্তি। ঐক্যের চেয়ে বড় শক্তি আর কিছু হতে পারে না। সুতরাং আমাদের সংগ্রামকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। জাতির জনক যা বলে গেছেন সেই পথ আমাদের অনুসরণ করতে হবে। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম।
Published on: ফেব্রু ২০, ২০১৮ @ ১০:৪২