Published on: মে ৬, ২০১৮ @ ১৫:২৯
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ এরই নাম বোধ হয় রাজনীতি। যেখানে মুখ আর মুখোশ এক হয়ে যায়। যেখানে কোনও কথা হয় না। হয় শুধু নিজেকে তাদের লোক করে দেখানোর প্রতিযোগিতা। এমন চিত্রই দেখা গেল কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বিজেপির অমিত শাহ আর কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর মধ্যে। যেখানে দেখা গেল তারা কে কত বেশি হিন্দু প্রেমী। কারণ, কর্ণাটকে হিন্দু ভোট আছে ৮৫ শতাংশ। এই ভোট কোনওভাবেই যে হাতছাড়া করা যায় না। তাই হিন্দু মঠ-মন্দির আর গুরু মহারাজদের কাছে তো ছুটে যেতে হবেই।দু’জনের মধ্যে হয়ে গেল মঠ-মন্দির দর্শনের এক প্রতিযোগিতাও।
বিজেপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে এই অপবাদ তাদের বিরুদ্ধে বিপক্ষ দল সব সময়ই করে থাকে। কিন্তু তাই বলে কংগ্রেস! তাদের এই ভূমিকায় দেখে স্বভাবতই অনেকে অবাক হয়েছে। আসলে রাজনীতির ময়দান এতই অনিশ্চিত যে সেখানে যে কখন কি হয়ে যায় তা বোঝা সত্যিই মুশকিল। তাই মুখে বিজেপি-কে যতই গাল মন্দ করুক না কেন মঠ-মন্দিরে গেলে ক্ষতি কি?
দৈনিক ভাস্কর পত্রিকা এ ব্যাপারে এক তথ্য নির্ভর সংবাদ পরিবেশন করেছে। যা কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী তাঁর নির্বাচনী প্রচার অভিযান এক মন্দির দর্শন দিয়েই শুরু করেন ১০ ফেব্রুয়ারি।গত ৮৫ দিন ধরে তিনি রাজ্যে প্রচার চালিয়ে যান। এজন্য তিনি রাজ্যে ১৮দিন ছিলেন। ঘোরেন আট নির্বাচনী কেন্দ্র। এই সময়ে তিনি ১৯টি মঠ-মন্দির দর্শন করেন।আবার বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ ৭৫দিন রাজ্যে সময় দিয়েছেন। ছিলেন ২০দিন। এই সময়ের মধ্যে তিনি ১০ নির্বাচনী কেন্দ্র ঘুরেছেন। এই সময়ের মধ্যে তিন ২৭টি মঠ-মন্দির দর্শন করেন। দু’জনের লক্ষ্য কিন্তু এক। তা হল, বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ৮৫ শতাংশ হিন্দু ভোটের দিকে নিজেদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।
কর্ণাটকে ২০০ আসনে ৮৫ শতাংশ হিন্দু ভোট নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে। রাজ্যে ৩০ জেলায় লিঙ্গায়ত, কুরবা, ওকালিগা সম্প্রদায়ের বহু মঠ আছে। এই তিন সম্প্রদায়ের হাতে প্রায় ৩৮ শতাংশ ভোট আছে। যা কংগ্রেস ও বিজেপি কেউই হাতছাড়া করতে চায় না। আর তাই দুই প্রধান দলের সেনাপতিরা প্রায় তিন মাস আগে থেকেই ঘাঁটি গেড়েছেন।
রাহুল গান্ধী রাজ্যে পড়া থেকে ১০০ শতাংশ জেলায় জনসভা আর রোড-শো করে কভার করে ফেলেছেন। চার হাজার কিলোমিটারের চেয়েও অনেক বেশি পথ তিন কভার করে ফেলেছেন। গুজরাটের মতো কর্ণাটকেও তিনি মন্দির দর্শনের ফর্মুলা জারি রেখেছেন। একই সঙ্গে তিনি চার দরগা, দু’টি চার্চ, একটি গুরুদুয়ারাও ঘুরে এসেছেন। সংবাদপত্রটি এও উল্লেখ করেছে যে গুজরাটে ৮৫ দিনে ২৭টি মন্দির রাহুল গান্ধী দর্শন করেছিলেন। আর মন্দির অধ্যুষিত ৮৭টি কেন্দ্রের মধ্যে কংগ্রেস জিতেছিল সেখানে ৪৭টিতে।
একই রাস্তায় হেঁটেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তিনিও পিছিয়ে নেই। ৭৫দিনে অমিতও ২৭টি মঠ-মন্দির ঘুরে পূজা-পাঠ সেরেছেন। তিনি অবশ্য রাহুলের দশ দিন বাদে ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যে প্রচার শুরু করেন। ঈশ্বর বিশ্বাসীরা প্রায়ই একটা কথা বলে থাকেন-সবই যে প্রভুর ইচ্ছা। সত্যিই সেই প্রভু যে শেষ পর্যন্ত কার সহায় হন সেটাই এখন দেখার বিষয়।
রাহুলের মঠ-মন্দির দর্শনের তালিকা
গাই সিদ্ধেশ্বরা মঠ, কোপল, হুলিগেমা মন্দির, কোপল, কানাকাচালা লক্ষ্মী নরসিংহ মন্দির, কোপল, সারানাবধেশ্বর মন্দির, কলবুর্গী, বীররভদ্রেশ্বরা মন্দির, বেল্গাই, সায়াদাতী, ইয়ালামা মন্দির, বেলগাই, মুরুগাহা মঠ, ধারওয়ার, শৃঙ্গেরী সারদা দেবী মন্দির, কুদরেলী, গোকরানাথেশ্বর মন্দির, ম্যাঙ্গালুরু, কুরুদুমালী, গণেশ মন্দির, কোলার, সিদ্ধগঙ্গা মঠ, তুমকুরু, আদি চুয়ানাগিরি মঠ, বেঙ্গালুরু, চামুন্ডেশ্বরী মন্দির, মাইসুরু, সন্তরু মঠ, মাইসুরু, মঞ্জুনাথেশ্বরা মন্দির।
অমিত শাহের মঠ-মন্দির দর্শন
বশ্বেশ্বরা মন্দির, কলবুর্গী, গুরু নানক বিদর, বুদ্ধ বিহার, বীররভদ্রেশ্বরা মন্দির, মারিকাম্বা মন্দির, সিদ্ধারুদ্ধা মঠ, হুবলী, মোরুসাইরা মঠ, বীর নারায়ন স্বামী মন্দির, সুভ্রমন্যম মন্দির, শ্রীকৃষ্ণ মঠ, উদুপী, মুরুঘারাজেন্দ্রা মঠ, চিত্রদূর্গ, তারাবালু মঠ, কলমঠ, শিমোগা, সিদ্ধগঙ্গা মঠ, নঞ্জুনদেশ্বরা মন্দির, সুন্তরু মঠ,মাইসুরু, সচিদানন্দেশ্বরা আশ্রম, শৃঙ্গেরী পীঠ, বলেহোনেরু মঠ, দুর্গামাইকা মন্দির, অইজকায়া মন্দির, সিদ্ধেশ্বর মঠ, শিবযোগী মন্দির, বদামী, গুরুপীঠ, চেলুয়ানারায়না মন্দির, অঞ্জনী স্বামী মন্দির, মাদরা মঠ।
Published on: মে ৬, ২০১৮ @ ১৫:২৯