Published on: ডিসে ৩১, ২০২৪ at ২৩:৫৬
Reporter: Aniruddha Pal
এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৩১ ডিসেম্বর: পরমপিতা বাবা লোকনাথের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের চাকলা আর ঢাকার বারদীর এক নিবিঢ় সম্পর্ক। আজও সেই ধারা বয়ে চলেছে। আর তাই বারদীতে বাবার ভক্তের প্রয়াণে এপার বাংলায় বাবা লোকনাথের জন্মস্থান চাকলাধামে এক অনুষ্ঠিত হল এক স্মরণসভা। শ্রীশ্রী লোকনাথ সেবাশ্রম সংঘ, চাকলার উদ্যোগে মন্দির প্রাঙ্গনেই আয়োজিত হল এই স্মরণসভা।
এদিনের স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন চাকলা ধামের লোকনাথ মদনিরের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও বাবার মহানাম প্রচারক নবকুমার দাস, সুমিত রায়, স্বপন সেন, সুবীর হাজরা, অচ্যুত রায়, গঙ্গাদাস বসাক সহ আরও অনেকে।
বাবার মহানাম প্রচারক নবকুমার দাস বলেন- বাংলাদেশের ঢাকায় বারদীর শ্রীশ্রী লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও সমাধিপীঠের কোষাধ্যক্ষ ড.তাপস চন্দ্র পালের সহধর্মিণী রীপা পাল সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চিকিৎধীন থাকার সময় গত ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে রাত ১টা বেজে ৩০ মিনিটে অমৃতলোকে গমন করেন। আমরা বাবার জন্মস্থান চাকলা ধামে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে এক স্মরণসভার আয়োজন করেছিলাম আজ ৩১ ডিসেম্বর। মৃত্যুকালে তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর স্বামী ও এক ২৭ বছরের পুত্রকে। সর্বশক্তিমানের কাছে আমাদের প্রার্থনা- তিনি প্রয়াত রীপাদেবীর শোকার্ত পরিবারকে এই শোক থেকে বেরিয়ে আসার শক্তি দেন। এদিন সকলেই স্মরণসভায় বাবার প্রয়াত ভক্তের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
সনাতন ধর্মে একটা বিশ্বাস আছে যে সধবা অবস্থায় কোনও মহিলা প্রয়াত হওয়া খুবই ভাল। শাখা-সিঁদুর নিয়ে যিনি অমৃতলোকে গমন করেন তিনি মহা পুন্যবান। ঠিক তেমনই বারদীর ভক্ত রীপা পাল ছিলেন বাবার আশীর্বাদ ধন্যা। বাবা বলতেন, তোরা কি করবি, সবটাই তো আমি করাই। আমি যেভাবে তোদের করার তোরা সেভাবেই করবি।
আর এমনই ইঙ্গিত মেলে বারদীতে বাবার অন্যতম প্রিয় ভক্ত নারিশা বাবার কথায়। তিনি বলে গিয়েছেন- “বাবা সম্বন্ধে অনেকেই অনেক সুন্দর সুদনর কথা বলেছেন, আর লিখেছেনও তেমন কাহিনি। কিন্তু, সেসব পড়া বা শোনা – কোনতার ইচ্ছা নেই আমার। কারণ, দীর্ঘকাল তাঁর সংস্পর্শে থেকে যেটুকু আমি উপলব্ধি করেছি, তা হইল তিনি হলেন- নলার অতীত, ভাবার অতীত এক অনাদি অনন্ত পুরুষ। তিনি কৃপা করে না জানালে, তাকে জানবে কে? “
বারদীর বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারীর ভক্ত রীপা পাল প্রয়াত হয়েছেন। তার প্রয়াণের দিন কারও পক্ষেই জানা সম্ভব নয়। সেটা কেউ জানতেও পারে না। কিন্তু ত্রকালজ্ঞ পরম পিতা বাবা লোকনাথের সবই জানা আছে। এমন ঘটনা তিনি একাধিকবার ঘটিয়েছেন। অর্থাৎ মৃত্যুর দিন তিনি বলে দিয়েছেন।
নারিশা বাবার কথাতেই তা প্রকাশ পেয়েছে। খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল তার। একদিন দুপুরবেলাত এক গাছতলায় তিনি যখন নিদ্রামগ্ন কানে ভেসে এল অপার্থিব এক কণ্ঠস্বএ। “কিরে, ব্যবসা তো বেশ চালাচ্ছিস। ঘর ছেড়ে ছিলি কি এজন্য? বাবা তো মরেছে অনেক আগে। কিন্তু তোর মা-র দুঃখ দেখে কে? প্রকৃত সন্তানেরই কাজ করেছিস দেখছি। কোন শান্তি তোর পাওনা বল দেখি।“ এরপর পরমপিতা বলে চলে চলেন- “তোর সব ভার আমার। মেঘনা নদীর তীরে শ্মশানভূমিতে আমার আশ্রম। এখন তুই তোর মার কাছে চলে যা। আগামী পূর্ণিমাতে তোর মা দেহ রাখবেন। তার আগে যততা পারিস মাকে সেবাযত্ন করে নে। অন্য পথে যা তুই সঞ্চয় করেছিলি , মায়ের কাজে ব্যয় কর। তাফপর আমার আশ্রমে আসিস।“
কাজেই রীপাদেবীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে আজ যে স্মরণসভা আয়োজিত হয়েছে বাবার জন্মস্থান চাকলাধামে তাও হয়েছে সর্বজন মঙ্গলকারী পরমপিতা বাবা লোকনাথের ইচ্ছাতেই। আসলে সর্বজন মঙ্গলকারী পরমপিতা বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী সবসময় আমাদের মধ্যে থেকেই ভক্তের কল্যাণে কাজটুকু করিয়ে নিচ্ছেন সমানে। তাঁর কৃপাতেই এগিয়ে চলেছে চাকলা ধাম ও বারদী ধাম।
Published on: ডিসে ৩১, ২০২৪ at ২৩:৫৬