মনিপাল হসপিটাল ব্রডওয়েতে বিরল বাইল্যাটারাল হারপিস জুস্টারের সফল চিকিৎসা বয়স্ক রোগীর

Main দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান
শেয়ার করুন

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৪ জানুয়ারি: মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ে সাফল্যের সাথে চিকিৎসা করল বাইল্যাটারাল হারপিস জুস্টারের ৭৪ বছর বয়সী নন্দা ঘোষের। এটি আমাদের দেশের চতুর্থ ডকুমেন্টেড বাইল্যাটারাল হারপিস জুস্টারের কেস। যখন তাকে হসপিটালে আনা হয়েছিল, তখন তার উপসর্গের মধ্যে ছিল জ্বর, হাইগ্রেড মাথাব্যথা, নাক থেকে নির্গত তরল, কনজেশন, সর্দি। পরীক্ষা নিরীক্ষার পর জানা যায় বিভিন্ন উপসর্গের সাথে সাথে ভেসিকুলোপাপুলার র‍্যাশ ( ছোট ফোলা বাতরল শুদ্ধু ফোস্কা ) এর কথা জানা যায়, যা তীব্র এবং বিরল হারপিস ভাইরাসের উদাহরণ।

উপসর্গ ধরা পড়ে মনিপাল হসপিটালে

কল্পনা করা যাক এমন এক অবস্থার কথা যখন দিনের পর দিন জ্বর, নাক মেযাওয়ার লক্ষণ নিয়ে থাকা মাথাব্যথা আর ভয়ংকর ব্যথা যা বলে বোঝানো যায় না। বোঝা যাচ্ছিল কিছু একটা সত্যিই ঠিক নেই কিন্তু ভেতরে ভেতরে কি অবস্থা বোঝা যাচ্ছিল না। যখন এই বয়স্ক মহিলাকে তার সন্তান মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়েতে নিয়ে আসে, তখন উপসর্গ দেখে কি হয়েছে সেটা ধরা পড়ে এবং চিকিৎসা শুরু হয়।

হারপিস জুস্টার- যাকে ডাকা হয়ে থাকে শৃঙ্গলস

হারপিস জুস্টার, সাধারণভাবে ডাকা হয়ে থাকে শৃঙ্গলস, যার জন্য বেদনাদায়ক র‍্যাশ হতে পারে। এগুলো শরীরের একদিকে, একটি বিশেষ নার্ভরুট (ডারমাটম) জুড়ে তৈরি হয়। অনেক সময় এগুলো বুক, পেট বা মুখে হয়ে থাকে। তবে এইক্ষেত্রে বাইল্যাটারালি হয়েছিল, যা খুবই বিরল।মুখের দুইদিকেই লেসন তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে কপাল, দুইগাল, চোখছিল, যা সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে চট করে দেখা যায় না।

চিকিৎসক ছিলেন পার্থসারথি ভট্টাচার্য

পার্থসারথি ভট্টাচার্য, কনসালটেন্ট – ইন্টার্নাল মেডিসিন, মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ের নেতৃত্বে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারিটি কনফার্ম করে ডায়াগনসিস অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর। রোগীকে দেওয়ার অ্যান্টিভাইরাল মেডিকেশন (জোভির‍্যাক্স), যা টার্গেট করে হারপিস ভাইরাস এবং অ্যান্টিবায়োটিক (মেরোপেনেম) সাহায্য করে কোন সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের বিরুদ্ধে। ডার্মাটোলজিস্ট এবং অপথালমোলজিস্টদের সাথে আলোচনা করা হয়েছিল যাতে পুরোদস্তুর খেয়াল রাখা সম্ভব হয়।

হারপিস জুস্টারের জন্য কেউ অন্ধ, কালা হয়ে যেতে পারে

ডঃ পার্থসারথি ভট্টাচার্য, কনসালটেন্ট – ইন্টার্নাল মেডিসিন, মনিপাল হসপিটাল, ব্রডওয়ে, বুঝিয়ে বলেন,” এই কেসটি মেডিক্যালের দিক থেকে বিরল, বিশেষ করে ইমিউনো সাপ্রেসন ছাড়া কোন সুস্থ সবল বয়স্ক মানুষের মধ্যে। এইধরনের কেসগুলো সাধারণ মেডিক্যাল বিষয়গুলোর চেয়ে আলাদা। যদি চিকিৎসা না হয়, তাহলে এই হারপিস জুস্টারের জন্য কেউ অন্ধ, কালা হয়ে যেতে পারে বা স্নায়ুর ক্ষতি হতে পারে। শৃঙ্গলস টিকা নিলে হারপিস আটকানো সম্ভব। এই টিকা দেওয়া হয় দুই ডোজের সিরিজে। প্রথম ডোজ দেওয়ার ২ থেকে ৬ মাস পর দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয় যাতে অপটিমাল এফেকটিভ দিকটি বজায় থাকে। সময়ে ধরা পড়া আর চিকিৎসা এই দুটোই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য আর জটিলতা এড়ানোর জন্য খুব কার্যকরী। এই টিকা সববয়সীদের জন্য প্রযোজ্য, তবে বেশি কার্যকরী যারা বয়স্ক বা যাদের বেশি ঝুঁকি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে।”

‘এই নিয়ে চতুর্থ বার আমরা মনিপাল হসপিটাল ব্রডওয়ের উপর নির্ভর করলাম’

নন্দাদেবীর ছেলে বিস্তারিত বলতে গিয়ে জানান,” আমার মাকে কষ্ট পেতে দেখছি আবার বুঝতে পারছি না কি হয়েছে, এটা সত্যি খুব হৃদয় বিদারক ছিল। এই নিয়ে চতুর্থ বার আমরা মনিপাল হসপিটাল ব্রডওয়ের উপর নির্ভর করলাম, এবং প্রতিবার বাস্তবের ফলাফল আমাদের আশা ছাপিয়ে গিয়েছে। আমার মায়ের অবস্থা বেশ খারাপ ছিল এবং একটু অদ্ভুত ছিল বটে, তবে ডাক্তাররা অনেক যত্ন ও দক্ষতার সাথে পরিস্থিতির সামাল দিয়েছেন। তাদের চেষ্টার ফলে আমার মা বাড়ি ফিরতে পেরেছেন আর পরিবারের সাথে একত্রিত হয়েছেন। আমরা সত্যি খুব কৃতজ্ঞ।”

মনিপাল হসপিটাল ব্রডওয়ের স্পেশালিস্টদের তত্ত্বাবধানে রোগীর উন্নতি দেখা যায়। তার জ্বর কমে আসে। দ্বিতীয় কোন সংক্রমণ ছাড়াই তার চামড়ার র‍্যাশ কমে যায়। সার্বিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়।

ভালো স্বাস্থ্য নিয়ে দশ দিনের মধ্যে রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। রোগী খুবই কৃতজ্ঞ ছিলেন এই উচ্চমানের চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে।


শেয়ার করুন