মণিপাল হসপিটালস খেলোয়াড়দের সুস্থতা নিশ্চিত করতে আরসিজিসিতে ফার্স্ট-এইড সেন্টার খুলল

Main দেশ রাজ্য স্বাস্থ্য ও বিজ্ঞান
শেয়ার করুন

রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব (RCGC)-এ একটি অত্যাধুনিক ফার্স্ট-এইড সেন্টার চালু
স্বাস্থ্যসাথীতে ১০ হাজার মানুষের চিকিৎসা দিয়েছে মণিপাল হসপিটালস।
 Published on: এপ্রি ৫, ২০২৫ at ২৩:১৫
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৫এপ্রিল: পূর্ব ভারতের বৃহত্তম হাসপাতাল চেইন মণিপাল হসপিটালস খেলোয়াড়দের সুস্থতা নিশ্চিত করতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে — রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাব (RCGC)-এ একটি অত্যাধুনিক ফার্স্ট-এইড সেন্টার চালু করে। জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সাড়া দেওয়ার লক্ষ্যেই মণিপাল হসপিটালস আরসিজিসির ক্যাডিদের কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন (CPR) প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন দিয়েছে, যাতে তারা জীবন রক্ষাকারী দক্ষতা অর্জন করতে পারে।

রয়্যাল ক্যালকাটা গল্ফ ক্লাবে

এই ফার্স্ট-এইড সেন্টারের উদ্বোধন করেন গল্ফ ক্যাপ্টেন গৌরব ঘোষ এবং ডঃ আয়নাভ দেবগুপ্ত, রিজিওনাল চিফ অপারেটিং অফিসার, মণিপাল হসপিটালস (পূর্বাঞ্চল)।  উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সম্মানিত সদস্যবৃন্দ ও মণিপাল হসপিটালস-এর বিশিষ্ট প্রতিনিধিরা। গল্ফ শেড এলাকায় অনুষ্ঠিত এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ক্লাব সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা যায়। ফার্স্ট-এইড সেন্টারটি প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

এই সেন্টারটি গল্ফার, কর্মী এবং দর্শনার্থীদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার সুবিধা প্রদান করবে। তাৎক্ষণিক সহায়তা ও স্থিতিশীলতার মাধ্যমে রোগীকে হাসপাতালে পাঠানোর পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এই কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, বিশেষ করে জীবন-মরণ পরিস্থিতিতে।

গল্ফারদের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচি

মণিপাল হসপিটালস সারা বছর ক্লাব সদস্য এবং গল্ফারদের জন্য বিভিন্ন স্বাস্থ্য সচেতনতা মূলক কর্মসূচি পরিচালনা করবে, যাতে প্রতিরোধ মূলক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ে। পাশাপাশি, মণিপাল হসপিটালস ক্লাবের সকল ক্রীড়া অনুষ্ঠানে হেল্থ কেয়ার পার্টনার হিসেবে যুক্ত থাকবে এবং প্রতিটি ইভেন্টে একটি বিশেষ অ্যাম্বুল্যান্স মোতায়েন থাকবে যে কোনো জরুরি পরিস্থিতির জন্য।

আরসিজিসি ক্যাডিদের জন্য একটি বিশেষ  CPR প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু

জরুরি প্রস্তুতির গুরুত্ব উপলব্ধি করে, মণিপাল হসপিটালস আরসিজিসি ক্যাডিদের জন্য একটি বিশেষ  CPR প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম চালু করেছে, যাতে তারা মাঠে হঠাৎ কোনো বিপদ ঘটলে তাৎক্ষণিক সাহায্য করতে পারে। ভবিষ্যতে ক্লাব সদস্যদের জন্য নিয়মিত সচেতনতা মূলক সেশন ও একটি বিশেষ ফিজিও-রিহ্যাব ফ্যাসিলিটি গড়ে তোলা হবে, যাতে খেলোয়াড়রা সঠিকভাবে সুস্থতা ও পুনর্বাসন পায়।

গোটা বাংলার মানুষ সুস্থ থাকুক এবং সঠিকভাবে সুস্থতাকে বেছে নিক-ডঃ আয়নাভ দেবগুপ্ত

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ডঃ আয়নাভ দেবগুপ্ত বলেন, “আমরা চাই কলকাতা সহ গোটা বাংলার মানুষ সুস্থ থাকুক এবং সঠিকভাবে সুস্থতাকে বেছে নিক। প্রতিরোধ মূলক স্বাস্থ্যসেবা ও সহজলভ্য চিকিৎসা সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই এই ফার্স্ট-এইড সেন্টারটি চালু করা হয়েছে। গল্ফার, সদস্য এবং কর্মীদের দ্রুত ও কার্যকর সহায়তা দেবে এই কেন্দ্র। ক্যাডিদের  CPR শেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সময় মতো সাড়া জীবন বাঁচাতে পারে। আমরা শহরের অন্যান্য নামী ক্লাবেও এমন ফার্স্ট-এইড সেন্টার চালু করবো এবং কলকাতার মানুষ যাতে সঠিকভাবে সুস্থ থাকে তা নিশ্চিত করবো। মণিপাল হসপিটালস সর্বাঙ্গীন ওয়েলনেস-কে সমর্থন করবে। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যসাথীতে ১০ হাজার মানুষের চিকিৎসা দিয়েছে মণিপাল হসপিটালস। ”

‘কলকাতায় আমরা স্কুল, হাইরাইজ বিল্ডিং-এ পাঁচ হাজার মানুষকে সিপিআর প্রশিক্ষণ দিয়েছি’

একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করিয়ে দেন-“ বাংলায় এই মুহূর্তে মোট সাতটি হাসপাতাল আছে। যার মধ্যে কলকাতায় পাঁচটি, শিলিগুড়িতে দুটি আছে। প্রতিটি এলাকায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ মানুষ আমাদের কাছে আসে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে। ওরা যখন অসুস্থ হয় আমাদের এখানে আসে। আমরা চাই ওরা যাতে অসুস্থ না হয়। তার জন্য আমরা কি করতে পারি।  যাতে স্বাস্থ্য পরিষেবাকে হাসপাতালের বাইরে এনে আমরা আপনাদের বাড়িতে আসছি। কলকাতায় আমরা স্কুল, হাইরাইজ বিল্ডিং-এ পাঁচ হাজার মানুষকে আমরা সিপিআর প্রশিক্ষণ দিয়েছি। কলকাতা পুলিশের সাথেও আমরা প্রোগ্রাম করেছি। আমাদের একটি প্রকল্প আছে ‘কর্মা’- কলকাতা এমারজেন্সি রেসকিউ সার্ভিসেস।“

ফার্স্ট-এইড সেন্টার এটা ওরাই করে দিয়েছে- গৌরব ঘোষ

এদিনের কর্মসূচি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় গল্ফ ক্যাপ্টেন গৌরব ঘোষ বলেন- “হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা একাধিকবার এখানে হয়ে থাকতে পারে। তবে সাম্প্রতিক যেটা হয়েছে সুনীল বাজাজ ও রাতুল সুদের হয়েছিল। এটা যে কারো হতে পারে। আমরা চাই না, এমন দুর্ঘটনার শিকার হোক কেউ । সেজন্যই এই পদক্ষেপ। মণিপাল আমাদের কাছে আগেই পৌঁছেছিল। তাই এমন সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এখানে এই সম্পর্ক একদিনে হয়নি। মণিপাল অনেক আগে থেকেই আমাদের এখানে অনেক কিছু করেছে। এই যে ফার্স্ট-এইড সেন্টার এটা ওরাই করে দিয়েছে। তিনটি বেড আছে। “

স্ট্রোক হল নিউরোলজিক্যাল এমারজেন্সি-ডাঃ জয়ন্ত রায়

মনিপাল হসপিটালসের নিউরোলজিস্ট  ডাঃ জয়ন্ত রায় জানান, “স্ট্রোক মানে হচ্ছে ব্রেন অ্যাটাক। তার মানে – ব্রেনে যে ব্লাড সাপ্লাই সেটা কোনওভাবে যদি বন্ধ হয়ে যায় অথবা ব্রেনের কোনও অংশ ফেটে গিয়ে সেখান দিয়ে রক্তপাত হতে থাকল তাহলে সেটাকে স্ট্রোক বলে। স্ট্রোক হল নিউরোলজিক্যাল এমারজেন্সি। যেখানে প্রতিটি মিনিট গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি সেকেন্ডে ৩২ হাজার ব্রেনের সেল নষ্ট হয়ে যায় যখন ব্রেনে ব্লাড সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তা-ঘাটে এমন অনেকে এভাবে লুটিয়ে পড়ে। তখন উপস্থিত অনেকেই জানতে পারে তার ঠিক কি হয়েছে। তাই তা জানতে হলে ছয় অক্ষরের একটি শব্দ জানতে হবে।  তা হল- BEFAST ।“

  • B for Balance – হঠাৎ করে মানুষটার ব্যালেন্স চলে গেল তিনি পড়ে গেলেন
  • E for Eye-  হঠাৎ করে  কারও চোখের দৃষ্টি চলে গেল।
  • F for Face-  হঠাৎ করে  কথা বলতে বলতে তার মুখের একটা দিক বেঁকে গেল।
  • A for Arm- হঠাৎ করে তার একটা হাত কাজ করছে না। হাতটা তুওলতে যাচ্ছেন, পড়ে যাচ্ছে।
  • S for Speech- হঠাৎ করে  কঠাটি জড়িয়ে গেল বা কথাটি আটকে গেল।

T for Time- এই প্রতিক্রিয়াগুলি কোথাও যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সময়কে রক্ষা করার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। যেখানে স্ট্রোকের প্রপার ট্রিটমেন্ট আছে। এখন প্রর=পৃথিবীতে স্ট্রোক ভয়ঙ্করভাবে বেড়ে চলেছে।মনিপাল হসপিটালস এর চি্কিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।

মণিপাল হসপিটালস এই পার্টনারশিপের অংশ হিসেবে আরসিজিসি-র সদস্যদের প্রদান করা হয়েছে একটি বিশেষ প্রিভিলেজ কার্ড, যার মাধ্যমে তারা মণিপাল হসপিটালস-এ বিশেষ সুবিধা পাবেনঃ
• ক্লাবে নিয়মিত স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতা সেশন এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে আলাপচারিতা
• মণিপাল-এর বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি টিমের মাধ্যমে স্পোর্টস রিহ্যাব সুবিধা
• ২৪x৭ কনসিয়ার্জ সার্ভিসও ‘ডাক্তার অন কল’ সুবিধা
• জরুরি অবস্থায় বিনামূল্যে অ্যাম্বুল্যান্স সহ ‘ফার্স্ট রেসপন্ডার’ সেবা

এই উদ্যোগ কেবল একটি নতুন পদক্ষেপ নয়, বরং এটি স্পোর্টস হেলথকেয়ারে একটি মাইলফলক, যা ক্লাবের বিশ্বমানের পরিবেশকে আরও নিরাপদ ও চিকিৎসাগতভাবে সজ্জিত করে তুলবে।

Published on: এপ্রি ৫, ২০২৫ at ২৩:১৫


শেয়ার করুন