Featured Video Play Icon

ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির প্রাণপুরুষ শ্রীশ্রী ভগবানের ৮৪তম জন্মদিবস উদযাপন

Main দেশ ধর্ম রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ৫, ২০২৫ at ২১:১৭
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৫ জানুয়ারি: বেদান্তকে সহজ-সরল করে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটি। প্রতিষ্ঠাতা শ্রীশ্রী ভগবান। ৩ জানুয়ারি ২০২৫ তাঁর ৮৪তম জন্মদিবস উদযাপিত হল বিরাটি তরুণ সেনগুপ্ত স্মৃতি ভবনে। সংঘের গুরুমাতার উপস্থিতিতেই স্বামীজী ও মাতাজীরা ভক্ত-শিষ্যদের পালন করলেন এই সুন্দর অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে সংগীত, নৃত্য, বই প্রকাশের পর্ব থাকলেও স্বামীজী ও মাতাজীদের বেদান্ত নিয়ে সহজ-সরলভাবে আলোকপাত ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম মুখ্য আকর্ষণ।

অনুষ্ঠান শুরু হয় গুরুবন্দনা দিয়ে

এদিন অনুষ্ঠান শুরু হয় গুরুবন্দনা দিয়ে। মঞ্চে সেইসময় উপস্থিত ছিলেন গুরমাতা স্বয়ং। এরপর আধ্যাত্মিক সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এদিনের অনুষ্ঠানে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির দুই বিদেশি ভক্ত জাহ্নবী মা ও প্রভা মা। জাহ্নবী মা ইংল্যান্ডে আইভিএস-এর দায়িত্বে রয়েছেন। এবং প্রভা রয়েছেন হল্যান্ডের শাখার দায়িত্বে। দু’জনে জানালেন শ্রীশ্রী ভগবানের সান্নিধ্যে এসে বেদান্তের ভাবধারায় তাদের জীবন বদলে গিয়েছে। তারা নতুন জীবন পেয়েছেন।

ভগবান নিজেই একটা বিরাট শক্তি-গুরুমাতা

এদিন গুরুমাতা তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে শ্রীশ্রী ভগবানকে স্মরণ করেন। এবং সংঘের সকলকে ভগবানের দেখানো পথে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন – “ভগবানের কাজ যত করবে তত তুমি শক্তিশালী হবে। ভগবান নিজেই একটা বিরাট শক্তি। তাকে ধরে থাকলে আমরা জীবনে অনেক শক্তি, আনন্দ পাব। শান্তি পাব। শান্তির জন্য এই পথে আসা। ঈশ্বরকে ভালোবেসে ভগবান সেই বানী ছড়িয়েছে। তিনি বলেছেন- তোমরা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে শুধু ঈশ্বরকে নিয়েই থাকো। তিনি আমাদের পথ দেখাবে। আমাদের শান্তির জগতে নিয়ে যাবে। বাসনা আমরা কমাতে পারলে আমরা সেই দিকে অগ্রসর হব। তাকে জানতে পারব। ব্রহ্মের শক্তি কি সেটা জানতে পারব।“

আমরা সত্যকে জানতে চাই। সত্য কি?

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ এদিন বেদান্তের মধ্য দিয়ে সত্য সম্পর্কে আলোকপাত করেন এবং তা সহজ করে বুঝিয়ে দেন। তিনি বলেন-“ আমরা সত্যকে জানতে চাই। সত্য কি? আদি সত্যের খোঁজ শুরু হওয়া চাই। আমরা এই মুহূর্তে আছি। আমি দাঁড়িয়ে আছি। আমি কথা বলছি। আমি জানি আমি আছি। আপনারা আছেন, এটা দেখছি। কিন্তু এই মুহূর্তটাকে আপনি সত্য বলতে পারবেন না। দশ  মিনিট পর আমি এখানে দাঁড়িয়ে থাকব না। এক ঘণ্টা দুই ঘণ্টা পর আপনি এখানে বসে থাকবেন না। আজকের দিন চলে গেলে আপনারা এখানে থাকবেন না। সত্য কাকে বলবেন ? বেদে বলছে- ‘আত্মানং বৃদ্ধি’ অর্থাৎ আত্মাকে জানা। আত্মা কি- বলছে আমি। আত্মা শব্দের বাংলা অর্থ কি? আমি ! তাহলে সত্য আমি। বাস্তবিক আমি তো সত্য। আমি যখন জন্মাই তখন আমি জন্মাই। সারাজীবন আমি থাকি আমার সাথে। আমি যখন মরে যাই তখন আমি কেবল মরি। আমার সাথে কেউ যায় না। তাহলে তো এটাই তো সত্য যে সারা জীবন আমার সাথে আমি আছি অন্য কেউ নেই। আমি কারও সঙ্গী হতে পারব না। কেউ আমার সঙ্গী হতে পারবে না।“

আমাদের মুখ্য কথা ব্রহ্ম, আত্মা, ভগবান ছাড়া দ্বিতীয় কিছু নেই-স্বামী বিশুদ্ধানন্দ

তিনি আরও বলেন- “যত বেশি আমরা নিজের দিকে তাকাব তত বেশি এই সংসার, এই জগৎ পরিষ্কার হয়ে যাবে। যত বেশি আমি নিজের উপর নির্ভরশীল থাকব তত বেশি আমি শান্তিতে থাকব। আনন্দে থাকব। শাস্ত্র বলছে- তুমি স্বয়ং আনন্দ স্বরূপ। আনন্দ খুঁজে তুমি সময় নষ্ট করছ কেন? আমরা শান্তি খুঁজি। কিন্তু শান্তি তোমার স্বরূপ। শান্তি খুঁজতে গিয়ে তুমি তোমার স্বরূপটাই নষ্ট করছ। কোন কিছু হতে গিয়ে তুমি তোমার স্বরূপটাই নষ্ট করছ। ঢাকা দিচ্ছ ,আপনি কিছু হতে পারবেন না। আজ ভগবানের জন্মদিন। ভগবান কি বলে গেছে- আমি ধ্যানই ধ্যান। বাকি সব অজ্ঞানবর্ধক । আপনি নিজেকে না জানার চেষ্টা করলে অজ্ঞানকে বাড়িয়ে চলছেন। তুমি যখন জড় ভাব প্রাপ্ত হও তখন অন্য জড়ের প্রয়োজন হয়। যখন জড়ভাব প্রত্যাখ্যান করতে পারো তখন তুমি আত্মা, ভগবান। তাঁর কথা। বুদ্ধদেব তাঁর সেবক আনন্দকে বলছেন- ‘আত্মদীপ ভব’। নিজের মুক্তির কারণ নিজে হও। তোমাকে  কেউ মুক্ত করতে আসবে না। এজন্য ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির মুখ্য কথা- ব্রহ্ম, আত্মা, ভগবান ছাড়া দ্বিতীয় কিছু নেই। এটা আমার স্বরূপ। এটা বুঝতে হলে বাইরে নয়, ভিতরের দিকে তাকাতে হবে।“

সদ্গুরুর কৃপায় পরম ধন লাভ করতে পারি-স্বামী সদানন্দ

স্বামী সদানন্দ বেদান্তের আর একটা দিক তুলে ধরেন। “ ভগবান যেটা করেছেন যে স্বামীজীর একটা লক্ষ্য ছিল যে বনের বেদান্তকে ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া। সেই কাজটা ভগবান দীর্ঘদিন ধরে করে গিয়েছেন। বেদান্ত চর্চা করলে আমরা কি পাব, আমাদের লাভ কি ? এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ বলছেন- তার স্বপ্নাদেশ হয়েছে। তিনি খুব ধার্মিক। তিনি স্বপ্ন দেখছেন- সমুদ্রের ধারে তোমার জন্য একটি মণি রাখা আছে। খুব মূল্যবান মণি। ওইটা পেলেই তোমার মেয়ের বিবাহ খুব ভাল্ভাবে সম্পন্ন হবে। পরদিন সকালে উঠে সমুদ্রের পাড়ে গেছে। সেখানে গিয়ে দেখছেন একজন সাধু বসে আছেন। আর কেউ নেই। মহাত্মাজিকে তিনি বলছেন- গতকাল রাতে আমি স্বপ্ন দেখেছি যে এখানে একটি মূল্যবান রত্ন পড়ে আছে। আমাকে কি আপনি বলতে পারবেন ? এই রত্নটা কোথায়? তিনি বলছেন , ওই তো দেখো দূরে পড়ে আছে রত্নটা। কুড়িয়ে তিনি যখন চলে আসবেন তিনি অবাক হলেন, কেন?  মহাত্মাজির সামনে এত মূল্যবান রত্ন পড়ে থাকা সত্ত্বেও তিন তা স্পর্শ করলেন উলটে আমাকে দেখিয়ে দিলেন – ওই যে পড়ে আছে তুমি ওটা নিয়ে যাও। তিনি মহত্মাজিকে প্রশ্ন করছেন- ‘যে ধনে হইয়া ধনী ধনিয়া মনিয়া মানো না মনে তারি খানিক মানি আমি নত শিরে।‘ তাই এই পরম ধনের কথা আমাদের জানা নেই। কিন্তু ধন পেলে কি হয় পৃথিবীর সব কিছু হালকা মনে হয়। এই ধন কোথা থেকে আসবে? গুরুর কৃপায়। সদ্গুরুর কৃপায় পরম ধন লাভ করতে পারি। সেই আত্মজ্ঞান, ব্রহ্ম জ্ঞান, সেই ঈশ্বর দর্শন করলে আমার জীবন ধন্য। আমার কূল ধন্য। আমার বংশ ধন্য। আমার গ্রাম-শহর ধন্য। আমার দেশ ধন্য। আমার পৃথিবী ধন্য। আমি সেই জ্ঞান পেয়েছি। যে জ্ঞানের জন্য আমি পৃথিবীতে অবতরণ করেছি। এই জ্ঞানটা ভীষণ মূল্যবান। এই জ্ঞান লাভ না হলে বারবার জন্মমৃত্যুর আবর্তে আমাকে ফিরে আসতে হবে। ত্রিতাপ জ্বালা ভোগ করতে হবে। কিন্তু যদি কোনও এক মাহেন্দ্রক্ষণে আমি সেই পরম ধন প্রাপ্ত হই আমার আর ফিরে আসতে হবে না।“

ভগবান বুঝেছিলেন এক ব্রহ্ম ছাড়া দ্বিতীয় কোনও বস্তু নেই- স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ

স্বামী প্রজ্ঞানানন্দ বেদান্তের উপর আলোকপাত করতে গিয়ে বলেন- “ভগবান কেমন চেয়েছিলেন সন্ন্যাসী কেমন হবে! তিনি বুঝেছিলেন এক ব্রহ্ম ছাড়া দ্বিতীয় কোনও বস্তু নেই। ভগবানের গুরুদেব বলেছিলেন –তোমার জীবন পরার্থে। কারণ সন্ন্যাসীদের জীবন পরার্থে হবে নিজার্থে নয়। তাদের মধ্যে প্রেম, ভালোবাসা থাকবে। তারা সত্যে প্রতিষ্ঠিত থাকবে। ভগবান বলতেন যার মধ্যে প্রেম নেই তাকে আমি সন্ন্যাসী বলে মানি না। তারা স্বাভাবিকভাবে সবাইকে ভালবাসবে। তারা নিঃস্বার্থ হবে। ইন্টারন্যাশোনাল বেদান্ত সোসাইটিতে শুধু সন্যাসী-সন্ন্যাসীনিরাই নন এখানে প্রচুর গৃহস্থ ভক্তরাও আছেন। বিদেশিরা আছে। মেয়েরা আছে। সবাই মিলেই ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটি।“

আমি ভগবানের কাছে এসে ঈশ্বরকে অনুভব করি-তেজোময়ী মা

তেজোময়ী মা বলেন- “শ্রীশ্রী ভগবানের ৮৪তম আবির্ভাব দিবস। সারা বিশ্বজুড়ে এই দিনটি উদযাপিত হচ্ছে। আমরা প্রত্যেকে প্রতি মুহূর্তে অনুভব করি ভগবান আমাদের সাথে আছে। আমাদের ভীষণভাবে কাজে সাহায্য করছে। এখানকার মূল ব্যাপার হচ্ছে আধ্যাত্মিকতা। ছোটবেলা থেকেই আমরা ঈশ্বরকে নিয়ে আছি। ভগবান এটাই শিখিয়েছেন। আপনারা যদি ভাল থাকতে চান তাহলে ঈশ্বরকে নিয়ে থাকুন। আপনারা ভাল থাকবেন। আমার ২০১০ সালে ভগবানের কাছে সন্ন্যাস হয়। এই ১৫ বছর ধরে এই জীবনযাপন করছি। আমি যখন এই পথে আসি ভগবানের কাছে আমি যখন পড়াশুনো করতাম তখন থেকে এখানে আসি। তখনই কিন্তু আমি ঈশ্বরকে পেয়েছি। এজন্য কিন্তু আমাকে এই জগৎ সংসারে কিছু ছাড়তে হয়নি। আমার মনে হয়েছে এই জীবনটা সর্বশ্রেষ্ঠ। পথটা সর্বশ্রেষ্ঠ। আমি ভগবানের কাছে এসে ঈশ্বরকে অনুভব করি , আমার তারপর মনে হয়নি এর থেকে আর কিছু পাওয়ার আছে। কারণ আমি সব কিছু পেয়ে গেছি। এখন জীবনটা মানুষের জন্য। এখন যা আছে সেটা মানুষকে দেওয়ার। ভগবানের কাছ যা শিখেছি সেটা আমি মানুষকে দিতে চাই, যতদিন বেঁচে আছি সেই কাজটাই করে যাব। তাই এই পথে আসা। ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য কিছু ছাড়ার দরকার নেই। ভগবান তাঁর জীবন দিয়ে দেখিয়েছেন যে সংসারে থেকেও তাঁকে পাওয়া যায়। কিন্তু এটা একটা শ্রেষ্ঠ পথ। আমার ভাল লেগেছে। আমার যা আছে এই দিয়ে আমি মানুষের জন্য করতে চাই। তাই এই পথে আসা।“

ভগবান একটা নতুন সভ্যতা গড়তে চেয়েছিলেন- দেবযানী চক্রবর্তী

ভগবানের কন্যা ইন্তারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট দেবযানী চক্রবর্তী বলেন- “ আমি তো ছোটবেলা থেকেই ভগবানের সাথে যুক্ত। কারণ, আমি তাঁর কন্যা। ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির ভাইস প্রেসডেন্ট। ছোটবেলা থেকেই আমরা বেদান্ত চর্চা করে এসেছি। ভগবান আমার বাবা – তিনি আমাদের এটাই শিখিয়েছেন যে ঈশ্বর ছাড়া পৃথিবীতে সত্যবস্তু বলে কিছু নেই। এই ঈশ্বরকে নিয়েই কিভাবে কাটানো যায় আর অদ্বৈত বেদান্তের কথা উনি খুব সহজভাবে শিখিয়েছেন। স্বামীজীর যে কথা ছিল –বনের বেদান্তকে ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দাও, এই কথাটাকে নিয়েই সারা জীবন উনি কাটিয়েছেন। আমাদের শিখিয়েছেন যে এই জীবনটাকে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দাও। মানুষের মাঝে বিলিয়ে দাও। মানুষকে ভালবাসো। মানুষের মধ্যেই সমস্ত কিছু রয়েছে। জ্ঞান রয়েছে। অনন্ত জ্ঞান রয়েছে। অনন্ত প্রেম রয়েছে। অনন্ত শক্তি রয়েছে। প্রতিটা মানুষ এই সত্যটাকে অবুভব করতে পারে। তাহলে মানুষ অনেক শান্তিতে আনন্দে থাকতে পারবে এই পৃথিবীতে। পৃথিবীটা একটা সুন্দর জায়গায় পরিণত হবে। ভগবান একটা নতুন সভ্যতা গড়তে চেয়েছিলেন। আমরা সেটা যাতে পারি সেজন্য ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির একমাত্র প্রয়াস।“

আমরা একজন ব্রহ্মজ্ঞ পুরষের দর্শন প্রাপ্ত হয়েছি- বেদান্তপ্রাণা মা

বেদান্তপ্রাণা মা বেদান্তের আর একটা দিক তুলে ধরেন। ভগবান সারাক্ষণ ঈশ্বরকে নিয়ে ভাবতেন। তাঁর একটাই বিষয় ছিল- সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া পর্যন্ত সবসময় সেটা হচ্ছে ঈশ্বর। তিনি ঈশ্বর ছাড়া কোনকিছু বোঝেননি। তাঁর গুরু ছাড়াও তিনি কিছু বোঝেননি। গুরু হওয়ার আগে তিনি হয়ে উঠেছিলেন তাঁর গুরুদেবের সর্বশ্রেষ্ঠ শিষ্য। গুরু যেভাবে বলে গেছিলেন সেভাবেই তিন আট বছরের মধ্যেই নির্বিকল্প সমাধি লাভ করেছিলেন।  সেই দিনটি আমরা জানি- ১৯৮৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর। যারা আমরা ভগবানকে দেখেছি এবং যারা দেখেননি – তাদের সবাইকে একটাই কথা বলব যে আমরা একজন ব্রহ্মজ্ঞ পুরষের দর্শন প্রাপ্ত হয়েছি। আজকের তাঁর আবির্ভাব দিবসে আমরা এখানে সবাই মিলিত হয়েছি। তিনি না থাকলে আমরা এখানে আসতে পারতাম না। আজ যতটুকু যা দেখছেন সবতাই তাঁর জন্য। কারণ তিনিই আমাদের তৈরি করেছেন। তিনি যে কতবড় শিষয় ছিলেন তার প্রমাণ পেয়েছিলাম যখন তিনি বিদেশ যাত্রায় গেছিলেন। সেইসময় ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির এক বিরাট নাম। প্রচুর সন্ন্যাসী-শিষ্য রয়েছে। কিন্তু তখন তিনি পিছিয়ে থাকেননি। গুরুর ফটো বুকে করে নিয়ে গেছিলেন সেখানে। সকলের কাছে গিয়ে তিনি তাঁর গুরুর পরিচয় দিয়েছেন। ইনি আমার গুরু। এখান থেকেই আমার উৎপত্তি। তাই আমরা যেন প্রত্যেকেই উৎপত্তিস্থল  কোথায় সেটা যেন না ভুলে যাই। গুরুকে যদি ঠিকভাবে ভালবাসতে পারি তাহলে আমরা আধ্যাত্মিক পথে এগোতে পারব, বড় হতে পারব। আমরা কে কত বড় বক্তা সেটার থেকেও বড় পরিচয় হচ্ছে আমি গুরুকে কতটা ভালবাসি। গুরুকে কতটা শ্রদ্ধা করি। গুরুকে যদি শ্রদ্ধা করতে না পারি, তাঁকে যদি আমরা যথার্থ মর্যাদা দিতে না পারি  তাহলে কিন্তু প্রত্যেকের জীবন বৃথা।

সঙ্গীত, নৃত্য সবশেষে প্রসাদ বিতরণ

এদিন ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটির নিজস্ব ম্যাগাজিন, কিছু আধ্যাত্মিক পুস্তক এবং ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়। আনুষ্ঠানিক ভাবে এর উন্মোচন করেন সংঘের গুরুমাতা স্বয়ং। এদিনের অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দীপক দাস, রুমা রায়চৌধুরী, দীপা দেবনাথ, নয়ণতারা ভট্টাচার্য। সবশেষে ভগবানকে নিয়ে নিজের লেখা গান পরিবেশন করেন গোপাল বর্মন। বৃত্য পরিবেশন করেন মৌটুসি ও সঞ্চারী কুন্ডূ। অনুষ্ঠানের শেষে প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল সমস্ত ভক্ত, অতিথি, সন্ন্যাসী-সন্ন্যাসিনীদের জন্য। প্রসাদে ছিল বিপুল আয়োজন যা দেখে সকলেই অভিভূত।

Published on: জানু ৫, ২০২৫ at ২১:১৭


শেয়ার করুন