মায়াপুর ইসকনে শুরু হল দীপদান মহোৎসব, চাইলে অংশ নিতে পারেন আপনিও

দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ২৯ অক্টোবর: কোজাগরী লক্ষী পূর্ণিমা থেকেই মায়াপুর ইসকনে চন্দ্রোদয় মন্দির সহ সারা বিশ্বের সমস্ত শাখা কেন্দ্রে শুরু হয়েছে দীপদান মহোৎসব। চলবে এক মাস। ২৭ নভেম্বর রাস্পূর্ণিমা পর্যন্ত।মায়াপুর ইসকনের জনসংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছেন।এই অনুষ্ঠানে একমাস ব্যাপী অনুষ্ঠানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই দীপদান করতে পারবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। প্রতিদিন ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে। একই সাথে চলবে দামোদরাষ্টকম স্তোত্র পাঠ। দেশ-বিদেশের হাজার হাজার ধর্ম্প্রাণ মানুষ এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকেন। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য পৃথক লাইনের ব্যবস্থা করা হয়। কঠোর করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।জানিয়েছেন জনসংযোগ আধিকারিক।

ভগবানের প্রীতি লাভার্থে দীপদান করা হয়। দীপদান আলোর উৎসব। আনন্দের উৎসব। অন্ধকার দূরীভূত করার উৎসব। মহামিলনের উৎসব। অন্ধকার বিদূরিত হয়ে আমাদের মনোমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হোক আলোর দীপ। শুভ দীপদান অনুষ্ঠানে এই হোক আমাদের একান্ত প্রার্থনা।এমনটাই বার্তা ইসকনের।

কার্তিকে দীপদান মহোৎসব

“ভারতীয় বৈদিক সাহিত্যে দীপদান মহোৎসব একটি বিশেষ মহিমামন্ডিত অনুষ্ঠান। পদ্মপুরাণ,স্কন্দপুরাণাদি শাস্ত্র কার্তিক মাসে দীপদানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায় এই মাসকে দামোদর মাস বলেন। এই মাস হেমন্ত ঋতুর অন্তর্গত। এই ঋতুর সমাগমে দেবী বসুন্ধরা তাঁর স্বাভাবিক কমনীয় শান্ত মূর্তি ধারন করেন। হেমন্ত ঋতুজাত নানাপ্রকার বিকশিত পুষ্পের সৌরভে যেমন ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের তৃপ্তি বিধান করে, তেমনি এই সময়ে দেব অর্পিত দীপের মনোরম শোভা দ্বারা মানব নয়নেরও পরমানন্দ বিধান করে। আমাদের জীবনের মঙ্গল কামনায় সকলেরই আরাধ্য দেবের প্রতি দীপদান করা কর্তব্য।” বলেছেন ইসকনের সঙ্গে যুক্ত তারকব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী।

তিনি বলেন- সূর্যের উদয়ে যেমন সমস্ত জগতের অন্ধকাররাশি দূরীভূত হয়, তদ্রুপ প্রযত্ন সহকারে এই মাসে যথাবিধি হরিমন্দিরে আরাধ্যদেবের প্রীতিবিধানে দীপার্পণে একদিকে যেমন সমস্ত দুঃখাদি অমমজ্ঞলসমূহ দূরীভূত হয়ে জগতময় আলোকে উদ্ভাসিত হবে অপরদিকে তেমনি জগৎ জীবের জীবন দীপের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি প্রাপ্ত হবে। আর সেই সঙ্গে পরলোকে পরম ধামে পরাগতি লাভ হবে।

Read more news:

ঘোষগ্রামের লক্ষ্মীমাতা: কামদেব ব্রহ্মচারী প্রতিষ্ঠিত এই পুজো ঘিরে রয়েছে অসাধারণ কাহিনি

সর্বমঙ্গলময় দামোদরদেবের কাছে প্রার্থনা

এই কার্তিক মাসে ঘৃতদীপ, তিলতৈলদীপ, সকর্পূর দীপদান অধিক প্রস্তুত। অখণ্ড অর্থাৎ অহোরাত্রব্যাপী দীপদা, হরিমন্দিরের উপরিভাগে কুম্ভের উপরে দীপদান, শিখরস্থিত দীপ সন্দর্শন অধিক মাহাত্ম্যপূর্ণ। হরিমন্দিরে দীপপংক্তি প্রদান, আকাশ দীপদান, সলিল মধ্যে দীপদানে নেত্রযুগল অধিক তেজময় হয় ও দীপদাতা বিদ্বান হয়ে ভূমন্ডলে বিচরন করেন। যিনি প্রদীপ প্রবোধন বা আবর্তন করেন তিনিও মহামঙ্গল প্রাপ্ত হন। সামান্য জীব একটি মুষিকও অন্য দত্ত দীপ উদ্দীপনে পরমাগতি লাভ করেছিল। এই কথা উল্লেখ করে তারকব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী বলেন, অতএব আমাদের সকলের এরূপ প্রার্থনা হোক-“হে সর্বমঙ্গলময় দামোদরদেব! আপনাকে এই সুগন্ধ সমন্বিত দীপ আবর্তন পূর্বক সমর্পন করলাম। আপনি আমাদের হৃদয়মন্দির আলোকিত করে পরম কল্যাণ বিধান করুন।” পুরনো ছবি।


শেয়ার করুন