প্রাচীন ধ্রুপদী বাংলা ভাষার স্বীকৃতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মমতার

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: জানু ১১, ২০২৪ at ২৩:৪১
Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১১ জানুয়ারি:  বছরের পর বছর কেটে গেলেও আজ পর্যন্ত বাংলা ধ্রুপদী ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়নি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। অথচ এই বাংলা ভাষার প্রায় আড়াই হাজার বছরের প্রাচীন। এ রাজ্যে আগের সরকার এই বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখায়নি। তাই দেশের অন্য ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি মিললেও আমাদের ধ্রুপদী বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আজও মেলেনি। আমরা বঞ্চিতই রয়ে গিয়েছি। তাই আমাদের বাংলা ভাষার স্বীক্ররতি চেয়ে আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মদিকে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নবান্নে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।

এদিন মমতা বলেন- “বাংলা দীর্দ্ঘদিন ধরে অনেক ব্যাপারেই বঞ্চিত। ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিভিন্ন মাপকাঠি মেপে কোনও কোনও ভারতীয় ভাষাকে ধ্রুপদী ক্লাসিক্যাল ভাষার স্বীকৃতি দান করে।এখনও পর্যন্ত স্বীকৃত ধ্রুপদী ভাষাগুলি হল- তামিল ২০০০ সালে স্বীকৃত, সংস্কৃত ২০০৫ সালে স্বীকৃত, তেলেগু ও কানাড়া ২০০৮ সালে স্বীকৃত, মালয়ালম ২০১৩ সালে স্বীকৃত এবং ঊড়িয়া ২০১৪ সালে স্বীকৃত।”

‘বাংলা ভাষার গবেষণামূলক তথ্য জোগাড় করেছি’

“এবার আমি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছি।আমরা গবেষণামূলক তথ্য জোগাড় করেছি। ইতিহাস, প্রাচীন লিপি, ভাষার বিবর্তন, ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করে দেখাচ্ছে যে বাংলা ভাষার জন্ম ও বিবর্তন হয়েছে আড়াই হাজার বছর ধরে। এই ধ্রুপদী প্রাচীনতা এবার স্বীকৃতির যোগ্য। আগে যে ভাষাগুলি হয়েছে তাতে এতদিন ধরে ছিল না। কিন্তু আমাদের কাছে কাগজপত্র জোগাড় করতে সময় লেগেছে। আমরা চারটে গোটা ভল্যিউম সেটাও আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে পাঠাচ্ছি।” জানান মুখ্যমন্ত্রী।

‘অন্য রাজ্যের ভাষা যদি স্বীকৃতি পায় তাহলে আমাদের ভাষা কেন পাবে না?’

যদি অন্য ভাষা স্বীকৃতি পায় তাহলে আমাদের বাংলা ভাষা কেন স্বীকৃতি পাবে না? এই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন-“আমরা অনেক প্নডিত ও আধিকারিকদের মিলে টিম করে চার খন্ডে গবেষনা পত্র তৈড়ি করেছি। তার থেকে দেখা যাচ্ছে বাংলা ধ্রুপদী ভাষা অনেক আগেই জাতীয় স্বীকৃত পাওয়ার প্রয়োজন ছিল।কিন্তু অনেকগুলি ভাষাকে স্বীকৃতি দান করলেও বাংলা ধ্রুপদী ভাষাকে স্বীকৃতি দান থেকে বঞ্চিত করেছে। প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে ধ্রুপদী বাংলা ভাষা ইতিহাস, বিবর্তন ও প্রাচীনতা দিয়ে সমৃদ্ধ। আন্তর্জাতিক ভাষা হিসাবে বাংলা স্বীকৃত। কিন্তু দেশে অন্য রাজ্যের ভাষা যদি স্বীকৃতি পায় তাহলে আমাদের ভাষা কেন পাবে না? আমাদের সবচেয়ে আগে পাওয়ার যোগ্য ছিল।”

‘কেন্দ্র এবার ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে বাংলাকে মেনে নিক’

এরপর মুখ্যমন্ত্রী এজন্য নিজের অপদার্থতাকেই দায়ী করেন। বলেন- “কিন্তু অপদার্থতা আমাদেরই। তার কারণ, যারা আগে ছিলেন ক্ষমতায় তারা এটা নিয়ে ভাবেননি। এবং চর্চাও করেননি। রাজনীতি নিয়ে তাদের যটতা মন ছিল এসন কাজ নিয়ে তাদের মন ছিল না।এটা হয়ে গেলে একটা সেন্টার অব এক্সেলেন্সও হবে।বাংলা পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ ভাষার একটা।আমরা গবেষণার মাধ্যমে মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করলাম কেন্দ্র এবার ধ্রুপদী ভাষা হিসাবে বাংলাকে মেনে নিক। এটার ব্যাপারে আমি ইতিমধ্যে আজ প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।”

বম্বে থেকে মুম্বই হয়ে গেল তাহলে পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা কেন হবে না, প্রশ্ন মমতার

এদিন এর পাশপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে মমতা প্রশ্ন তোলেন- রাজ্যের নাম বাংলা’কে কেন কেন্দ্র মান্যতা দিচ্ছে না? তিনি বলেন-“বাংলার নামের ব্যাপারে আমরা দু’বার রাজ্যের বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করেছি। দীর্ঘদিন ধরে তারা বাংলার নামটা মান্যতা দিচ্ছে না। বম্বে থেকে মুম্বই হয়ে গেল, ওড়িশা থেকে ওডিশা হল, কর্নাটক থেকে কানাড়া যা বলে ওরা কিন্তু আমাদের কেন হবে না? আমাদের কি অপরাধ? বাংলা রাজ্যটার নাম হলে ছেলেমেয়েরা যারা বিভিন্ন কম্পিটিশনে যায়, পড়াশোনায় যায় তারা অনেক প্রায়োরিটি পাবে। আমাদের যে কোনঅ মিটিং-এ গেলে বসে থাকতে হয় একেবারে শেষ পর্যন্ত। E, X, Y, Z-  গুরুত্বটা বাংলার কমিয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তানে পাঞ্জাব বলেও একটা রাজ্য আছে। আমাদের আন্তর্জাতিক দেশ বাংলাদেশ যদি থাকতে পারে তাহলে পশ্চিমবাংলার নাম বাংলা কেন থাকতে পারে না? আমরা যুক্ত-তর্ক দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি।এটার ব্যাপারে আমাদের অনুরোধ পাঠিয়েছে একাধিকবার।এদিন এই বিষয়টি ন্যেও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

Published on: জানু ১১, ২০২৪ at ২৩:৪১


শেয়ার করুন