১০৭ বছরে পা দিল দেশের প্রাচীন ট্রেন ‘পাঞ্জাব মেল’, জেনে নিন এর ইতিহাস

Main দেশ রেল
শেয়ার করুন

  • ট্রেনটি অবিভক্ত ভারতে ১৯১২ সালের ১লা জুন প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল।
  • সেইসময় ট্রেনটি মুম্বই-পেশোয়ার লাইনে চলত।কিন্তু আজ পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুম্বই-এর ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল পর্যন্ত চলে।
  • পাঞ্জাব মেলে ১৯৪৫ সালে এসি বগি জোড়া হয়।

Published on: জুন ২, ২০১৯ @ ১৯:৫১

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ বয়স হয়ে গিয়েছে ১০৭ বছর। কিন্তু চেহারায় এতটুকু বার্ধক্য আসতে দেয়নি। আজও সমানভাবে ছুটে চলেছে সে। যত বয়স বাড়ছে ততই যেন সে তরুন হয়ে উঠছে। হ্যাঁ, আমরা বলছিলেম দেশের সব চেয়ে প্রাচীন ট্রেন পাঞ্জাব মেলের কথা। আজ থেকে ১০৭ বছর আগে ১লা জুন ট্রেনটি ছোটা শুরু করেছিল। আজও সমানভাবে সে ছুটে চলেছে। ট্রেনটি অবিভক্ত ভারতে ১৯১২ সালের ১লা জুন প্রথম যাত্রা শুরু করেছিল। সেইসময় ট্রেনটি মুম্বই-পেশোয়ার লাইনে চলত। কিন্তু আজ পাঞ্জাবের ফিরোজপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে মুম্বই-এর ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল পর্যন্ত চলে।

ফ্রন্টিয়ার মেলের চেয়েও ১৬ বছরের পুরনো এই ট্রেন

এই রেলগাড়ি ১০৭ বছরে পা দেওয়া ফিরোজপুর রেল বিভাগের প্রথম ট্রেন হয়ে গিয়েছে। ট্রেনটি ফিরোজপুর থেকে সপ্তাহে দু’দিন শনিবার ও বুধবার ছেড়ে যায়। ফিরোজপুর রেল বিভাগের এডিআরএম নরেশ কুমার বর্মা এক সর্ব ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া বিবৃতি থেকে জানা গিয়েছে তিনি গর্ব করেছেন ট্রেনটি ফিরোজপুর রেল বিভাগের অন্তর্গত। ট্রেনটি দেশের স্বাধীনতার আগে থেকে সমানভাবে সফলতার সঙ্গে ছুটে চলেছে। ট্রেনটিতে সুযোগ ও সুবিধা আরও বাড়ানো হয়েছে। যাত্রীরাও তাই এই ট্রেনটিকে তাদের প্রথম পছন্দ হিসেবে বেছে নিয়েছে। তিনি এও জানিয়েছেন, সময়ে সময়ে ট্রেনে যাত্রী সুবিধা সহ কিছু ক্ষেত্রে বদল আনতে হয়েছে।

আগে চলত পেশোয়ার আর এখন চলে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর পর্যন্ত

পাঞ্জাব মেল চলা শুরু করেছিল ১০১২ সালের ১লা জুন। তখন ট্রেনটি মুম্বই-এর বল্লার্ড পিয়র থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত চলত। এই রেলগাড়িটি সেইসময় বিশেষ ভাবে ব্রিটিশ আধিকারিক, সিভিল সার্ভিসম্যান এবং তাদের পরিবারের লোকজনকে বম্বে থেকে দিল্লি এমনকি ব্রিটিশ ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রান্ত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়াত জন্য চালানো হত। ১৯১৪ সালে ট্রেনটির শুরুর স্টেশনটিকে পরিবর্তন করে মুম্বই ভিক্টোরিয়া টার্মিনাল করে দেওয়া হয়েছিল, যার এখনকার নাম ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ট্রেনটি মুম্বইয়ের ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল থেকে পাঞ্জাবের ফিরোজপুর পর্যন্ত চলে।

শুরুতে ছিল কয়লার ইঞ্জিন

সেইসময় শুরুর দিনগুলিতে এই রেলগাড়ি কয়লার ইঞ্জিনে ধোয়া উড়িয়ে কু ঝিক ঝিক করে ছুটত। সেইসময় ট্রেনটিকে পাঞ্জাব লিমিটেড বলে জানত সকলে।রেলগাড়ির কোচ ছিল কাঠ দিয়ে তৈরি। স্বাধীনতার আগে রেলগাড়িটি পেশোয়ার, লাহোর, অমৃতসর, দিল্লি, আগ্রা, ইটারসি-র মধ্যে ২৪৯৬ কিলোমিটার পথ সফর করত। শুরুতে এই রেলগাড়ি ইংরেজ আধিকারিক এবং ব্রিটিশ শাসন ব্যবস্থায় চলত। কিন্তু ১৯৩০ সালে এর সঙ্গে আম আদমিদের জন্য আলাদা বগি জোড়া হয়েছিল।

১৯৪৫ সালে লাগানো হয় এসি কোচ

পাঞ্জাব মেলে ১৯৪৫ সালে এসি বগি জোড়া হয়। এখন ট্রেনটিতে এসি ফার্স্ট ক্লাস, এসি সেকেন্ড ক্লাস, এসি ট্রি টিয়ার কোচ জোড়া হয়েছে। এর সঙ্গে ১২টি স্লিপার কোচ এবং চারটি সাধারণ বগি লাগানো হয়েছে। এই ট্রেনে মোট ২৪টি বগি রয়েছে। এখন ট্রেনটি ১৯৩০ কিলোমিটার পথ ৩৪ ঘণ্টা ১৫ মিনিটে অতিক্রম করে। ট্রেনটি ফ্রন্টিয়ার রেলের চেয়েও ১৬ বছরের পুরনো।

শুরুতে ৪৭ ঘণ্টায় ২৪৯৬ কিমি পথ অতিক্রম করত

ভেপার ইঞ্জিনে চলা শুরু করে ১৯১৩ সালের ১লা জুন। এই রেলগাড়ি এই সময় ৪৭ ঘণ্টায় ২৪৯৬ কিমি পথ সম্পূর্ণ করত। গাড়িতে ছটি কোচ থাকত, যার মধ্যে তিনটি থাকত যাত্রীদের এবং বাকি তনটি ডাক বিভাগের জিনিস ও চিঠির জন্য। এটিতে ৯৬ জন যাত্রীকে নিইয়ে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল। গাড়িতে দুটি কেবিন ছিল।

উচ্চ শ্রেণির যাত্রীদের জন্য কেবিনে খাওয়া-দাওয়া, বাথরুম, স্নানের ব্যবস্থা ছিল।গাড়িতে ইংরেজ সাহেব ও তাদের ভৃত্যদের জন্য আলাদা কোচের ব্যবস্থা ছিল।দেশের সেইসময় কার ইংরেজ সাহেবরা মুম্বই এলে এই গাড়িতে করেই তাদের গন্তব্য স্থলে পৌঁছতেন।

Published on: জুন ২, ২০১৯ @ ১৯:৫১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 + 2 =