বিশ্ব রক্তদাতা দিবসে ইন্ডিয়া ট্যুরিজমের উদ্যোগে কলকাতায় প্রথমবার রক্তদান শিবির, মিলল দারুন সাড়া

Main দেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

পর্যটন তখনই ফুলে ফেপে উঠবে যখন মানুষ সুস্থা থাকবেন। ভালো থাকবেন। যদি আমি সুস্থই না থাকব তাহলে পর্যটনের অনুভূতিটা কিভাবে নেব- সাগ্নিক চৌধুরী, রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্বাঞ্চল), ইন্ডিয়া ট্যুরিজম, কলকাতা

Published on: জুন ১৪, ২০২৩ @ ২০:৫৮

Reporter: Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৪ জুন: আজ কলকাতায় প্রথমবার ইন্ডিয়া ট্যুরিজমের উদ্যোগে আয়োজিত হল এক রক্তদান শিবির। সহযোগিতায় ছিল ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া, ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া, ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুরিজম সার্ভিস প্রোভাইডার্স অব বেঙ্গল, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স, এইচআরএইআই এবং এডিটিওআই। এই রক্তদান শিবিরে রক্তদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে কলকাতা অ্যাপেলো হাসপাতালের রক্তদান বিভাগের মেডিক্যাল কর্মীরা।ইন্ডিয়া ট্যুরিজম কলকাতার রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্বাঞ্চল)সাগ্নিক চৌধুরী বলেন- রক্তদান অতি অবশ্যই প্রয়োজনীয় একটি উদ্যোগ। কলকাতায় ইন্ডিয়া ট্যুরিজম প্রথমবার এই শিবিরের আয়োজন করেছে এখানকার ট্যুরিজম অর্গানাইজেশনগুলির সহযোগিতা নিয়ে।

পর্যটন তখনই ফুলে ফেপে উঠবে যখন মানুষ সুস্থ থাকবেন- সাগ্নিক চৌধুরী

এবারের বিশ্ব রক্তদাতা ক্যাম্পেইনের স্লোগান হলো ‘রক্ত দিন, প্লাজমা দিন, জীবন ভাগ করুন, প্রায়ই ভাগ করুন’। এটি এমন রোগীদের উপর ফোকাস করে যাদের জীবনব্যাপী ট্রান্সফিউশন সাপোর্ট প্রয়োজন এবং রক্ত বা প্লাজমা মূল্যবান উপহার দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিটি একক ব্যক্তি যে ভূমিকা পালন করতে পারে তার উপর জোর দেয়।এই প্রসঙ্গ টেনে সাগ্নিক চৌধুরী বলেন- “এ ব্যাপারে যদি পাবলিসিটি বা প্রচার করতে হয় তাহলে রক্তদান অবশ্যই অতি প্রয়োজনীয় একটি উদ্যোগ। আজ আমরা একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেছি পার্ক স্ট্রিটে। যেখানে আমাদের টুরিজম অর্গানাইজেশন রয়েছে , যেমন- টিএএফআই, টিএএআই, এইচআরএইআই, আইএটিও, এডিটিওআই, টিএএবি এবং এটিএসপিবি এরা সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা যৌথভাবে এটি আয়োজন করেছি। খুবই ভালো সাড়া পেয়েছি। তাদের সদস্যরা শুধু নয় প্রচুর সাধারণ মানুষও রক্তদান করতে এসেছে। এটি আমাদের কাছে খুব ভালো অনুভূতি। কারণ, ব্লাড ব্যাঙ্কটা অ্যাপেলো হাসপাতালের সাথে করা গেছে যৌথভাবে।”

পর্যটকের সঙ্গে এর সংযোগ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। পর্যটন তখনই ফুলে ফেপে উঠবে যখন মানুষ সুস্থা থাকবেন। ভালো থাকবেন। যদি আমি সুস্থই না থাকব তাহলে পর্যটনের অনুভূতিটা কিভাবে নেব। সেই জন্য সুস্থ থাকা সব চেয়ে আগে প্রয়োজন। ফিট ইন্ডিয়া একটা মনোনয়ন ছিল। বিশ্ব যোগ দিবস এগিয়ে আসছে। বিশ্ব যোগ দিবসেও আমরা একটা উদ্যোগ নিয়েছি। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে বড় ধরনের যোগ সেশন করব। সেই জন্য এই হেলথ কেয়ারের দিকে নজর দেওয়া খুব প্রয়োজন। এবারই আমরা প্রথমবার এই উদ্যোগটা নিলাম। আশা করি, এখন থেকে প্রতি বার এই কর্মসূচি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারব। যোগ করেন ইন্ডিয়া ট্যুরিজম কলকাতার রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্বাঞ্চল) সাগ্নিক চৌধুরী।

পর্যটন মন্ত্রকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করলেন সুভাষ গোয়েল

এদিনেরঈই এই রক্তদান শিবিরে উপস্থিত ছিলেন স্টিক ট্রাভেল গ্রুপের চেয়রম্যান এবং ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্স, এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম কমিটির চেয়ারম্যান সুভাষ গোয়েল। তিনি সংবাদ প্রভাকর টাইমসকে বলেন- “আজ বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। আমি খুবই আনন্দিত যে আজ কলকাতায় এই দিনে এখানে অংশ নিতে পেরে, যার প্রধান উদ্যোক্তা ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রক।”

তিনি বলেন-“ সমস্ত রোগের ক্ষেত্রে রক্ত খুবই গুরুত্বপূর্ণ । বিশেষ করে কোভিড মহামারীর পর এর আরও গুরুত্ব বেড়েছে। পর্যাপ্ত রক্ত থাকা দরকার প্রতিটি ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং হাসপাতালে। কারণ, রক্তই পারে জীবন বাঁচাতে। যত বেশি রক্ত দান হবে তত বেশি বেশ প্রাণ রক্ষা পাবে। আমি পর্য্টন মন্ত্রকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করি, বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের রিজিওনাল ডিরেক্টরকে ধন্যবাদ জানাই। একই সঙ্গে ইস্টার্ন ইন্ডিয়ার সমস্ত ট্রাভেল ট্রেড অর্গানাইজেশনকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার সৌভাগ্য যে এদিন আমি এখানে অংশ নিতে পেরেছি। ”

এদিন যারা উপস্থিত ছিলেন

এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্যান্যদের মধ্যে ট্রাভেল এজেণ্টস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান (পূর্ব ভারত) মানব সোনি। তিনি নিজেও এদিন রক্ত দিয়েছেন। এছাড়াও এদিন উপস্থিত ছিলেন ট্রাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর জেনারেল সেক্রেটারি অমিতাভ সরকার, স্কাল-এর কলকাতার প্রেসিডেন্ট, থাই এয়ারওয়েজের সাজিদ খান সহ অনেকে। উপস্থিত ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটর্স-এর বেঙ্গল চ্যাপ্টারের চেয়ারম্যান দেবজিৎ দত্ত বলেন, এই প্রথম বার সবাইকে নিয়ে যে উদ্যোগ তা খুবই ভাল। পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে মানুষকে সুস্থ থাকতে হবে। আমরা চাইব এটা আগামিদিনেও এমনভাবে চলতে থাকবে।

ইন্ডিয়া ট্যুরিজম-এর উদ্যোগে খুশি অ্যাপেলো হাসপাতাল

অ্যাপেলো হাসপাতালের পক্ষে এই রক্তদান ও স্বাস্থ্য শিবিরের দায়িত্বে থাকা তীর্থপ্রতিম সরকার ভারত সরকারের পর্যটন মন্ত্রকের ইন্ডিয়া ট্যুরিজম কলকাতা শাকাহার এই উদ্যোগকে সাধ্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রথমবার খুবই ভাল সাড়া পেয়েছি। এখানে এত সুন্দর পরিবেশ এবং একতা রয়েছে যা সত্যিই দারুন। সেখানে কতজন রক্ত দিয়েছে এটা বড় বিষয় নয়। বিশেষ করে এবার প্রথমবার। যেমন সাড়া পড়েছে তাতে মনে করা হচ্ছে আগামিদিনে এই শিবির আরও সাফল্য পাবে। এই উদ্যোগটাই বড় বিষয়। এখানে হেলথ ক্যাম্প, সঙ্গে রক্তদান সত্যিই খুব ভালো কাজ।

ইন্ডিয়া ট্যুরিজম-এর সঙ্গে ভবিষ্যতে আরও কিছু করারা পরিকল্পনা আছে- অনিল পাঞ্জাবি

সব শেষে এদিনের রক্তদান শিবিরের অন্যতম সহযোগী ট্রাভেল এজেন্টস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া বা টাফি’র চেয়ারম্যান অনিল পাঞ্জাবি অত্যন্ত স্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ইন্ডিয়া ট্যুরিজম কলকাতার রিজিওনাল ডিরেক্টর (পূর্বাঞ্চল) সাগ্নিক চৌধুরীর সঙ্গে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত থেকে গোটা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেছেন। এসপিটি-কে তিনি বলেন- “এখানে ট্রাভেল ও ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই রক্ত দিয়েছে। টাফি মূল ভূমিকা নিয়েছে আজ। ইন্ডিয়া ট্যুরিজমের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছে। ভবিষ্যত পরিকল্পনা আছে। ২১ জুন বিশ্ব যোগ দিবস আছে। সেখানেও টাফি সহযোগী হিসাবে থাকছে। এটা বাংলাতেই সম্ভব আছে যে সবাই মিলেমিশে কাজ করছে। আমাদের সদস্যরাও এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে।”

এদিন যারা রক্ত দিয়েছেন

সৌমিত নারায়ন দেব, কান্তা দে, বিকাশ চন্দ্র দাস, অভিষেক ঘোষ, ডি মুখার্জি, সানু হোসেন, সমীর সোম, কৌশিক কর, কৌমিক ঘোষ, শতরূপা সামাল, বিশ্বনাথ রায়, প্রভাকর বারিক, শ্রেয়া দে, অলোক মন্ডল, সুজয় পাল, শুভঙ্কর ভট্টাচার্য, সুজয় ভট্টাচার্য, তন্ময় দে, সমীর খান, ইন্দ্রজিত্ত অধিকারী, রাজারাম নস্কর, আসিফ আলি মীর, সমেন্দু বাগচি, শেখ আমির বক্স, সাহালাম মিস্ত্রি, আলতাব আলি খান, সাগর দাস, আদিত্য মন্ডল, রোহিত হক, তমাল সমাদ্দার, সুব্রত সাধুখা, শেখ ইরফান, নমিতা সাধুখা, উজ্জ্বল হালদার, দেব্জ্যোতি সরকার, কুনাল মালহোত্রা, সৈকত দাস, অভিজিত সরকার, অমৃতাংশ রাই, আমিন আজগর।

Published on: জুন ১৪, ২০২৩ @ ২০:৫৮


শেয়ার করুন