হিমালয়ে এ কার পায়ের চিহ্ন, পর্বতাভিযাত্রী সেনার দাবি -এ তুষারমানব ‘ইয়েতি’র

দেশ
শেয়ার করুন

Published on: এপ্রি ৩০, ২০১৯ @ ২১:৫১

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ ভারতীয় সেনা হিমালয়ে তুষারমানব ‘ইয়েতি’র পায়ের চিহ্নের হদিশ পেয়েছে বলে দাবি করেছে। ৩২ইঞ্চি লম্বা এবং ১৫ইঞ্চি চওড়া পায়ের চিহ্ন দেখে সেনার অনুমান এগুলি তুষারমানব ইয়েতির হবে। মনে করা হয়ে থাকে যে হিমালয়ে ইয়েতি থাকতে পারে, যার অস্তিত্বের কথা আমরা পৌরানিক কাহিনিতে পেয়েছি। সেনার পক্ষ থেকে বরফের উপর পায়ের চিহ্নের ছবি তারা ট্যুইট করেছেন। সেনার পর্বতাভিযাত্রীদের একটি দল এমন রহস্যময়ী পায়ের চিহ্নের ছবি গত ৯ এপ্রিল মাকালু বেস ক্যাম্পী পাশে নজরে আসে। এই ক্যাম্প ৫২৫০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এই স্থানটি নেপাসে মাকালু বরুন ন্যাশনাল পার্কের পাশে অবস্থিত।

সেনা জানিয়েছে, দল ফিরে আসার পর পায়ের চিহ্নের ছবি খতিয়ে দেখা হয়েছে। ছবি টয়ুইটারে দেওয়া হয়েছে যাতে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিতে এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। সেনার এই ট্যুইট হওয়ার পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইয়েতি নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। এক একজ এক একরকমভাবে তাদের বক্তব্য পেশ করতে থাকে। অনেকে এমন প্রশ্নও করেছে যে এসব মজা নয় তো! আবার কেউ বলছে ভারতীয় সেনার ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হয়নি তো?

এর আগেও ইয়েতি নিয়ে চর্চা হয়েছে

‘দ্য সান’ পত্রিকার এক রিপোর্ট অনুসারে এর আগে ১৯৫১ সালে ব্রিটিশ পর্বতারোহী এরিক শিম্পটনও বিশালাকার পায়ের চিহ্নের হদিশ পেয়েছিলেন। যা তিনি সেই সময় ক্যামেরা বন্দিও করেছিলেন।  তিনি এভারেস্ট অভিযানের জন্য বিকল্প পথের সন্ধান করার সময় এই চিহ্ন দেখতে পেয়েছিলেন। আর সেইসময় তাঁর এই ছবি ঘিরে ইয়েতি আলোচনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল।

বড় পাথরের হাতিয়ার নিয়ে ঘোরাফেরা করে

১৯ শতাব্দীর আগে ‘ইয়েতি’র কথা শোনা যেত, তারা গ্লেশিয়ারে থাকা এমনই এক আদিম তুষারমানব যাকে স্থানীয় বাসিন্দারা পুজো করে থাকেন। এমনটাও শোনা গেছে বানরের মতো দেখতে বিশালদেহী এই তুষারমানব বড় পাথ্রের হাতিয়ার নিয়ে চলাফেরা করতেন। তারা সিটি দিতেন। ১৯২০ দশকে নেপালী পর্বতারোহীর নজরে আসা এমন প্রাণীর কাহিনি সেসময় ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছিল। পর্বতারোহীরা এমন প্রাণীকে দেখার জন্য উৎসুক হয়ে উঠেছিলেন।

হিমালয়ে অদ্ভুত এই ‘ইয়েতি’ নাম

হিমালয় অধ্যুষিত এলাকায় বসবাসকারী মানুষ এমন অদ্ভুত প্রাণীকে ‘ইয়েতি’ অথবা ‘মেহ-নেহ’ এমন অনেক নামে জানে। তিব্বতি ভাষায় একে ‘মিচে’ বলা হয়ে থাকে। যার অর্থ ‘ম্যান বিয়ার’ বা মানব ভল্লুক। তিব্বতীরা একে ‘দজু-নেহ’ নামেও ডেকে থাকে। যা সেই হিমালয়ের ভালুক। এর আর এক নাম ‘মিগোই’ যার অর্থ বন্যমানুষ, নেপালীরা বলে ‘বুন মিচি’ যার অর্থ জংলী মানুষ।

লাদাখ এবং নেপালের বৌদ্ধ মঠও দাবি করেছে

লাদাখের কিছু বৌদ্ধ মঠ দাবি করেছে যে তারা নাকি ‘ইয়েতি’র দেখা পেয়েছে। বিজ্ঞানীরা এই তুষারমানবকে  ধ্রুবীয় এবং ভুরে ভালুকের মিশ্রন বলে জানিয়েছে। ২০১৩ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এ নিয়ে অধ্যয়ন করা হয়েছিল। সেই গবেষণায় বলা হয় যে হিমালয়ের অঞ্চলে পাওয়া বাদামি রঙ্গের এই ভালুক উপপ্রজাতি হতে পারে। ২০১১ সালে ‘দ্য সান’ এর রিপোর্ট অনুসারে, নেপালের একটি মঠে আঙুলের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছিল। পরীক্ষার পর দাবি করা হয় যে সেটি এই রহস্যময় তুষারমানব ‘ইয়েতি’র। তবে, তদন্তে জানা যায় এটি একটি মানুষের আঙুল।

বিজ্ঞানীরাও খুব কম প্রমাণ পেয়েছেন

তুষারমানব ইয়েতি হিমালয়ের এলাকায় সবচেয়ে প্রাচীন রহস্যময়ী প্রাণী। কয়েক দশক আগে একে নেপাল এবং তিব্বতের হিমালয়ের এলাকায় এর দেখা পাওয়া গেছিল বলে দাবি করা হয়। কিন্তু এই দাবি সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এক মত নন। বিজ্ঞানীরা একে কল্পনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। এ পর্যন্ত, বৈজ্ঞানিক গবেষকরা যেসব নমুনা পেয়েছেন, তাতে ২০১৭ সালে, তাদের মধ্যে কয়েকজন ‘ইয়তি’র অস্তিত্ব প্রমাণ পেয়েছেন। হিমালয়ের অঞ্চল থেকে সংগৃহীত এই নমুনাগুলির সন্ধানে, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যে এই নমুনাগুলি ভালুকের সাথে সম্পর্কিত ছিল।

Published on: এপ্রি ৩০, ২০১৯ @ ২১:৫১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

− 6 = 4