হাইপারলুপ ট্রেনঃ মাত্র ৩০ মিনিটে পৌঁছে দেবে মুম্বই থেকে পুনে, সি এন এন জানাল কেমন হবে এই ট্রেন

Main অর্থ ও বাণিজ্য দেশ বিদেশ ভ্রমণ রেল
শেয়ার করুন

Published on: নভে ১২, ২০১৮ @ ১৭:৪১

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ একটা সময় কলকাতায় মেট্রো রেল চালুর সময় মানুষের মধ্যে আলোড়ন পড়ে গেছিল যে মাটির তলা দিয়ে ছুটবে ট্রেন। সে ট্রেন না জানি কেমন হবে! পড়ে আমরা সকলেই দেখেছি না, পরিক্লপনা খুব ভাল, না হলে অতি অল্প সময়ে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া যায় নিজের গন্তব্যস্থলে। এরপর শোনা গেছে বুলেট ট্রেনের কথা। সেই ট্রেন চালু হওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।এবার সেই তালিকায় জুড়তে চলেছে আরও এক উন্নত ট্রেন-হাইপারলুপ ট্রেন। যা ছুটবে টানেলের ভিতর দিয়ে।যা চোখের নিমেষে আপনাকে পৌঁছে দবে একেবারে সঠিক গন্তব্যে। মুম্বই থেকে পুনে যেতে যেখানে সময় লাগে চার ঘণ্টা সেই পথ এখন অনায়াসে চলে যাওয়া যাবে ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে।

সিএনএন এই খবর প্রকাশ করে জানিয়েছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে মার্কিন কোম্পানির সঙ্গে এক চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। এটি এমন এক ট্রেন যা বুলেট ট্রেনের চেয়েও ক্ষিপ্র গতিতে ছুটবে।দাবি করা হচ্ছে, এই ট্রেন নাকি হাওয়াই জাহাজের চেয়েও দ্রুত গতিতে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সক্ষম হবে।আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এমনই হাইপারলুপ ট্রেন চালু হতে চলেছে ভারতে। আমেরিকার পর সম্ভবত ভারতই হতে চলেছে এই ট্রেনের দ্বিতীয় সদস্য। এই ট্রেন চালু হলে জাপানের বুলেট ট্রেনকেও পিছনে ফেলে দেবে ভারতের এই হাইপারলুপ ট্রেন।

লস এঞ্জেলসের ভার্জিন হাইপারলুপ ওয়ান মার্কিন কোম্পানি।এই কোম্পানির লক্ষ্য একটাই-তা হল, মানুষকে যত দ্রুত পারা যায় টানেলের ভিতর দিয়ে তার গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া।কোম্পানির নতুন সিইও জয় ওয়াল্ডার তাঁর পরিকল্পনা ও ব্যবসাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর যেখানে ভার্জিনের প্রতিষ্ঠাতা রিচার্ড ব্র্যান্সনের স্বপ্ন সার্থক হয়ে উঠবে।

তাদের প্রথম প্রজেক্ট হতে চলেছে ভারতের মুম্বই শহরে, যা ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় ও গতিময় শহর। সেই সঙ্গে আছে পুনের মতো সুন্দর শহর। দুটি শহরই মহারাষ্ট্র রাজ্যে অবস্থিত। দুটি শহরের মধ্যে দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার বা ৯৩ মাইলের কাছাকাছি, যেখানে পৌছতে সময় লাগে কমবেশি চার ঘণ্টা। এখন হাইপারলুপ ট্রেন সেই দূরত্ব মাত্র ২৫মিনিটে সেরে দেবে। অর্থাৎ এই ট্রেন চালু হলে মুম্বই থেকে মাত্র ২৫মিনিটে পুনে শহরে পৌঁছে যেতে পারবেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা।

যানবাহনের ইতিহাসে এমন দ্রুতগতি সম্পন্ন ট্রেন এর আগে ১০০ বছরের ইতিহাসে আসেনি। বলছিলেন সিইও ওয়াল্ডার। ২০১৪ সালে হাইপারলুপ যখন প্রথম আত্মপ্রকাশ করল তখন বোঝা গেছিল এর দক্ষতার কথা।

ওয়াল্ডারের পরিবহন সম্পর্কে খুব ভাল অভিজ্ঞতা আছে। তিনি এর আগে মেট্রোপলিটন ট্র্যানজিট অথোরিটি- যা গ্রেটার নিউ ইয়র্ক শহরে ট্র্যানজিট সিস্টেম যেখানে সাবওয়ে নির্মানের কাজ হয়ে থাকে সেখানে ছিলেন। হাইপারলুপ কোম্পানির এক মুখপাত্র সিএনএনকে জানান- ” এই ট্রেনে চাপার আর এক মস্ত বড় সুবিধা হল যে মানুষ অন্য যে কোনও গাড়িতে চাপলে তাকে যে ১,৫০,০০০ টন কার্বনের ছোঁয়া লাগে সেটা এই হাইপারলুপ মুক্ত করবে। এটা এক মস্ত বড় সুবিধা।

তিনি আরও বলেন-হাইপারলুপ ট্রেনের ক্ষেত্রে ভারতের বাজার হল এক বড় বাজার।কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর হর্জ ধালিওয়াল একথা প্রকাশ করেছেন। মহারাষ্ট্র সরকার ঘোষনা করেছে যে “তারা মুম্বই-পুনে এক নতুন রুটে হাইপারলুপ ট্রেন চালাবে। এটা হবে প্রথম পরীক্ষামূলক লাইন।”

কেমন হবে এই হাইপারলুপ ট্রেন

এই ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় ৭৬০ মাইল। এটি চলবে এওকটি নির্দিষ্ট টানেলের ভিতর দিয়ে।এক অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বকের মাধ্যমে এই ট্রেন ছুটবে। ট্রেনটি দেখতে অনেকটা ক্যাপসুলের মতো হবে।৫০০মিটার দীর্ঘ টিউবের ভিতর দিয়ে হাইপারলুপ ট্রেনের গতি ঘণ্টায় হবে ২৪০ মাইল। এই ট্রেন থামবে নভি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।

আরও জানা গেছে, এই নতুন রুটে ট্রেন চালু হয়ে গেলে প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন যাত্রী সওয়ার করবে।আগামী ৩০ বছরে এর ফলে ৫৫ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় ৩৫০ হাজার কোটি টাকা- যার ফলে ভারতের সামাজিক-অর্থনৈতিক সুবিধাগুলি – সময়ের মাধ্যমে সঞ্চয়, নির্গমন এবং দুর্ঘটনা হ্রাস, এবং কর্মক্ষম খরচ সঞ্চয় হবে।

Published on: নভে ১২, ২০১৮ @ ১৭:৪১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

64 − = 55