Published on: মার্চ ১, ২০১৯ @ ১১:২৮
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ সত্যি তিনি নিজে যা বলেন সেটাই করে থাকেন-এই হলেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন ভর্তমান। তিনি দলগত পারফম্যান্সে বিশ্বাস করেন। দলের কারও সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ানোই তাঁর কাছে মূল মন্ত্র। ঠিক যেভাবে তিনি হরিয়ানার হিশারে বন্ধু উইং কম্যান্ডার সাহিল গান্ধীর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় যোগ দিতে আসেন। টানা কয়েক ঘণ্টা ছিলেন বন্ধুর শোকার্ত পরিবারের পাশে। আজ সেই ছবি তুলে ধরেছেন ভারতীয় হিন্দি সংবাদ মাধ্যম দৈনিক জাগরণ। তারা প্রকাশ করেছে সেই ছবি। আমরা সংবাদ প্রভাকর টাইমস আমাদের পাঠকদের সঙ্গে তা শেয়ার করলাম তাদেরই সৌজন্যে। এজন্য আমরা দৈনিক জাগরণের কাছে কৃতজ্ঞ। আমরা মনে করি এধরনের সংবাদ সকল ভারতীয়র মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন। যারা দেশের জন্য কাজ করে চলেছেন তারা কিভাবে থাকেন।তা কে না জানতে চায় বলুন তো?
বেঙ্গালুরুতে ভারতীয় বায়ুসেনার ফ্লাইট শো-তে টিম সূর্য কিরনের দুটি বিমান প্রদর্শন করার সময় আচমকা দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। সেই দুর্ঘটনায় শহীদ হন উইং কম্যান্ডার সাহিল গান্ধী। যিনি ছিলেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের প্রিয় বন্ধুও।এই খবর পাওয়া মাত্রই তিনি বন্ধুর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় যোগ দিতে সেখানে হরিয়ানায় হিশারে পৌঁছে গেছিলেন।
সেখানে তিনি প্রায় ছয় ঘণ্টা বন্ধু সাহিলের পরিবারের শোকার্ত পরিবারের পাশে ছিলেন। আজ যখন সেই অভিনন্দন পাকিস্তানে বন্দি হয়েছে বলে সাহিলের পরিবারের কাছে খবর আসে তা শুনে সকলেই তারা খুব ভেঙে পড়েন। কারণ এক ছেলে তাদের ছেড়ে চলে গেলেও এই ভেবে তারা সান্ত্বনা পাচ্ছিলেন তাদের আর এক ছেলে তো আছে। কিন্তু সেই ছেলের গ্রেফতারের খবরে তারা দুঃখে মুষড়ে পড়েন। গত ১৯শে ফেব্রুয়ারি সাহিল বেঙ্গালুরুতে দুর্ঘটনায় শহীদ হন।
অভিনন্দন বুধবার পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান F-16 ধাওয়া করে তাকে ধ্বংস করে প্যারাশুটে করে যেখানে নামেন সেটা পাক অধিকৃত কাশ্মীর। আর তখই তাঁকে গ্রেফতার করে পাক সেনারা। যদিও সেখানে মিগ-২১ ভেঙে পড়ে। উইং কম্যান্ডার সাহিল ছিলেন উইং কম্যন্ডার অভিনন্দনের খুব কাছের বন্ধু।তাই বন্ধুর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় তিনি ছিলেন ওই পরিবারের পাশে। ছবিতে তা বারে বারেই দেখা গেছে। কখনও পিছনে কখনওবা দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে।
সাহিলের পরিবার সংবাদ মাধ্যমটিকে জানিয়েছেন- আমরা ভাবতেই পারছি না কিভাবে অভিনন্দন এত বড় একটা দুর্ঘটনার মধ্যে পড়ে গেল। এরপর তাকে পাকিস্তানের হেফাজতে চলে যেতে হল। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত অভিনন্দন পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরে না আসছে ততক্ষণ আমরা শান্তি পাব না। ওরা দু’জনে খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় অভিনন্দন সাহিলের স্ত্রী ও সন্তানকে সমবেদনা জানান।
বন্ধু সাহিলের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে সেদিন অভিনন্দন বলেন, শহীদ সেনাবাহিনীর চাকরির একটা অংশ। তাই এজন্য গর্ব করা উচিত। অন্যদিকে, পাকিস্তানে অভিনন্দনকে গ্রেফতার করার বার্তা হিসার শহরে আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার বাসিন্দারা জানতে পেরেছিলেন যে অভিনন্দন হিশারে এসেছিলেন, তখন তারা সেদিনের ফটো সোশ্যাল মিডিয়ার আপলোড করেন এবং সকলের কাছে তাঁর মঙ্গল কামনা করে প্রার্থণা জানাতে অনুরোধ করেন।
হিশার সাংসদ দুষ্ম্যন্ত চৌতালাও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের গ্রেফতারে খবরে উদ্বিগ্ন। সেদিন হিসারে সাহিলের অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় অভিনন্দনের তাঁর সাক্ষাতের ছবিও নিজের ফেসবুক পেজে আপলোড করেন সাংসদ। সেখানে চৌতালা লিখেছেন, “এক সাহসী বীর ও সত্যিকারের দেশ ভক্তের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আসুন সবাই মিলে তাঁকে আমরা ফিরিয়ে আনার প্রয়াসে সামিল হই। একসঙ্গে চেষ্টা করি।”
Published on: মার্চ ১, ২০১৯ @ ১১:২৮