অভিনন্দনকে অভিনন্দন জানাতে তৈরি ওয়াঘা-আটারি বর্ডার

দেশ বিদেশ
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ১, ২০১৯ @ ১৬:৪৪

এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন ভর্তমানকে অভিনন্দন জানাতে প্রস্তুত হয়ে আছে গোটা দেশ। যেস্থানে তাঁকে ছাড়া হবে অর্থাৎ ভারতীয় সেনারা যেখান থেকে তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে সেই ওয়াঘা-আটারি বর্ডার এখন সাজো সাজো রব। যদিও এখানে কোনও বিটিং রিট্রিট সারিমনি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে ভারত। কারণ, পাকিস্তান এখনও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তারা কি ব্যবস্থা নেবে তাদের দেশ থেকে ভাগাতে কি পদক্ষেপ নিতে চলেছে সে ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্তই তারা নেয়নি। উলটে তারা এমন একটা ভাব দেখাতে শুরু করেছে যে তারা দয়া করে শান্তির পথে হেঁটে ভারতীয় এই উইং কম্যান্ডারকে ফিরিয়ে দিয়ে এক মহান কাজ করেছে। বিটিং রিট্রিট হলে গোটা দুনিয়ার সামনে তখন তারা আরও এক মিথ্যা নাটক দেখানোর সুযোগ পেয়ে যেত। ভারত তা কোনওভাবেই হতে দেবে না।

ভারত মনে করে আমাদের বীর যোদ্ধা উইং কম্যান্ডার কোনও ভুল করেননি।পাকিস্তানি বায়ুসেনার বিমান যখন আমাদের দেশের সীমানা অতিক্রম করে গেছিলে তখন তিনি দেশের সৈনিক হিসেবে তাদের পিছু নিয়ে তাড়ানোর কাজ করছিলেন। আর সেই সময় তাড়া করার সময় তিনি ঢুকে পড়েছিলেন অনিচ্ছাকৃতভাবেই পাক অধিকৃত কাশ্মীর সীমানায়। আর তখনই তাঁর মিগ-২১ ভেঙে পড়লে তিনি প্যারাশুটে করে সেখানে নেমে পড়েছিলেন। আর সেই সুযোগে পাক বাহিনী তাঁকে ধরতে পেরেছিল। এখানে পাক বাহিনীর কোনও ভূমিকা নেই। তাই বিটিং রিট্রিটের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। আমাদের বায়ুসেনার নিওয়ম অনুযায়ী যা করার সেভাবেই তাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এক সেনা আধিকারিক।

তবে অভিনন্দনকে স্বাগত জানাতে তৈরি হয়ে গোটা দেশ। ঠিক তেমনই ওয়াঘা বর্ডারেও জমায়েত হয়েছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে বহু মানুষ। সকলেই ঘরের ছেলেকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে হাজির থেকে এই ঐতিহাসিক ক্ষনকে স্মরণীয় করে রাখতে চান আর তাই তারা কেউ নিয়ে নিয়ে এসেছেন ফুলের মালা। কেউ বা মিঠাই। আবার কারও হাতে দেখা গেছে ঢোল কেউ বা বাজাচ্ছে নাগাড়া। সকলের মুখেই দেশ ভারত মাতার জয়গান। মুখে বন্দেমাতরম ধ্বনি সে এক অসাধারণ মুহূর্ত।

এক অবসরপ্রাপ্ত বায়ুসেনা আধিকারিক জানালেন- “অভিনন্দন প্রথমে দেশে প্রবেশের সময় সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হবে না। বায়ুসেনা বিভাগের কিছু নিয়ম-বিধি আছে সেগুলো পুরো করতে হবে। প্রথমে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা হবে। কারণ দেশটির নাম যেহেতু পাকিস্তান তাদের কখনোই বিশ্বাস করা যায় না।সেক্ষেত্রে এই সাবধানতা অবলম্বন করতেই হচ্ছে। তাঁর উপর কোনও টর্চার অর্থাৎ শারীরিক অত্যাচার করেছে কিনা করলে তা ইন্টারন্যশনাল রেড ক্রশ সোসাইটিকে দিয়ে তদন্ত করানো হবে প্রয়োজনে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন যে এসব দেখার পর অভিনন্দনের কাছে জানতে চাওয়া হবে সেখানে পাকিস্তানি সেনা তাঁর সঙ্গে কেমন আচরণ করেছে কি জিজ্ঞাসা করেছে? ওই জিজ্ঞাসাবাদের সময় তারা তাঁর কাছ থেকে আমাদের বায়ুসেনার কোনও জরুরী তথ্য জেনে গিয়েছে কিনা? যদি অভিনন্দন সব ঠিকঠাক জানিয়ে দেন তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।কিন্তু তাঁকে কোনওদিন বায়ুসেনার অধ্যক্ষ করা হবে না। যদি সব ঠিকঠাক হয় তখন তাঁকে পুনরায় কাজে যোগ দিতে এবং পরিবারের সঙ্গে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে।”

জানিয়ে রাখা ভাল এর আগেও কিন্তু কার্গিল যুদ্ধের সময় বায়ুসেনার লেফটন্যান্ট কম্বাপতি নচিকেতাকে পাকিস্তান গ্রেফতার করেছিল। সেসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর। তাঁর ডিউটি ছিল বাটালিক সেক্টরে। ১৯৯৯ সালের ২৭শে মে তিনি মিগ-২৭ ফাইটার প্লেন নিয়ে উড়ছিলেন। মাঝ আকাশে ইনগজিন খ্রাপ হয়ে যাওয়ায় প্যারাশুটে করে নেমে পড়েছিলেন। সেটি ছিল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের অংশ। ফলে পাক সেনা তাঁকে বন্দি করে। সেইসময় পাকিস্তানি সেনা অসভ্য আচ্রন করেছিল। তার সঙ্গে মারপিট হয়েছিল।এক সিনিয়র পাক আধিকারিকের চেষ্টায় তাঁর সঙ্গে চলতে থাকা অত্যাচার বন্ধ হয়েছিল এবং ছাড়া পেয়েছিলেন।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধের সময়ও কয়েকজন ভারতীয় সৈনককে পাকিস্তান নিজেদের কজায় নিয়েছিল। এর মধ্যে একজন ছিলেন স্কোয়াড্রন লিডার কেসি কের‍্যাপ্পা। তাঁর বিমান পাকিস্তানি সেনার নিশানা বানিয়েছিল। এরপর তাঁকে পাকিস্তান বন্দি করেছিল। যুদ্ধ থামার চার মাস বাদে তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়েছিল পাকিস্তান।

Published on: মার্চ ১, ২০১৯ @ ১৬:৪৪


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + 2 =