মোদিবাবুদের এক্সপ্যায়ারি ডেট শেষ হয়ে গেছে-ব্রিগেডে মমতার হুঁশিয়ারি, উগরে দিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

  • অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন-এবার বিজেপিকে বাদ দিন।
  • অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন-এবার দিল্লিতে বদল হতে দিন।
  • অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন-বিজেপিকে টোটাল ধরাশায়ী করে দিন।
  • অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন-দেশভর বিজেপিকে শূন্য পেতে দিন।

সংবাদদাতা-অনিরুদ্ধা পাল

Published on: জানু ১৯, ২০১৯ @ ১৯:০৬

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১৯ জানুয়ারিঃ তিনি পেরেছেন দেশের সমস্ত বিজেপি বিরোধী জোটকে একত্রিত করতে। গোটা দেশকে তিনি এদিন ব্রিগেডমুখী করেছেন। প্রায় সব কটি বিজেপি বিরোধী দলের নেতাদের এক মঞ্চে হাজির করে তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন ইউনাইটেড ইন্ডিয়া গড়তে তিনি যোগ্য নেতৃত্ব। আর এদিনি তাই এক সুরেই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আসমুদ্র হিমাচলের সমস্ত নেতাই স্বীকার করেছেন-হ্যাঁ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই অসাধ সাধন করে দেখাতে পারে, তিনি দেখিয়েছেন। তিনি ভয় পাওয়ার মানুষ নন। ভয় দেখিয়ে তাঁকে দমানো যায় নি আগামিদিনেও যাবে না। আর তাই তিনি প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে জোরের সঙ্গে বলে ওঠেন- মোদিবাবুদের এক্সপ্যায়ারি ডেট শেষ হয়ে গেছে। এরপর বিজেপির বিরুদ্ধে তিনি তাঁর সমস্ত ক্ষোভ উগরে দিয়ে স্লোগান তোলেন- বিজেপিকে রুখতেই হবে। ও গেলে দেশের পক্ষে মঙ্গল।

মমতা বলেন-“আজ ব্রিগেড ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার এক বড় মঞ্চ হয়েছে।২৩-২৪টি দল এই সমাবেশে অংশ নিয়েছে। আসন্ন মোদিবাবুদের এক্সপ্যায়ারি ডেট শেষ হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলিতে নতুন কিছু হতে চলেছে। নতুন সকাল দেখবেন। এক সাথে কাজ করব এটাই আমাদের শপথ।বাংলারা মাটি পবিত্র মাটি। আমার সংস্কৃতি, সাহিত্য, যাত্রা, নাটক, সঙ্গীত, যাত্রা সকলেই এসেছেন। বাংলার মাটি স্বাধীনতা আন্দোলনের পথ দেখিয়েছে। নবজাগরণের পথ দেখিয়েছে। ভারতবর্ষে যখনই কোনও বিপদ এসছে তখনই কিন্তু বাংলার মাটি পথ দেখিয়েছে। শুধুমাত্র জনজাগরণ নয় নবজাগরণ নয় স্বাধীনতার আন্দোলন থেকে শুরু করে সংস্কৃতির আন্দোলন সভ্যতার আন্দোলন সব আন্দোলনে বাংলা পথ দেখিয়েছে।”

“ব্যাঙ্ক ধুঁকছে-বাজার ধুঁকছে-দাম বাড়ছে- বিজেপি হাসছে”

“আজকে যারা ভারতবর্ষকে সর্বনাশ করবার চেষ্টা করছে তাদের ব্যাপারে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল কি বল্ল- ৭০ বছরেও পাকিস্তান যা করতে পারেনি মাত্র চার বছরে কেন্দ্রের এই সরকার তা করে দিয়েছে। একে অপরকে ভেঙে দিয়েছে। সব ইনস্টিটিউশন বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাঙ্ক ধুঁকছে বাজার ধুঁকছে দাম বাড়ছে বিজেপি হাসছে। সারা ভারতকে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে। দাঙ্গায় ভারত সর্বশান্ত। আর বিজেপি দাঙ্গায় ব্যস্ত। বাজারে লেগেছে আগুন জাগুন বাংলা জাগুন। জাগুন ভারত জাগুন। জাগুন মানুষ জাগুন। ব্যাঙ্কে ধস, সিবিআই-এ ধস আরবিআই-এ ধস ট্যাক্সে ধস ইকনমিতে ধস ডেমোক্র্যাসিতে ধস শুধু বিজেপি বস। এভাবে চলতে পারে কখনও?” প্রশ্ন তুললেন মমতা।

নাম না করে হুঁশিয়ারি মমতার-গরমেন্টটা পড়ুক বুঝতে পারবেন

মোদির নাম না করে মমতার হুঁশিয়ারি- “লুঠের টাকায় ভোট, লুঠছে সব নোট। ডিমনিটাইজেশন থেকে শুরু করে জিএসটি ভারতবর্ষে লুঠ করে দিল।আর বলছে সবাই দুর্নীতিগ্রস্ত। উনি সবচেয়ে সৎ আর বাকিরা সব অসৎ। আমি বলি- গরমেন্টটা পড়ুক বুঝতে পারবেন। ধনজন একটি বড় কেলেঙ্কারি। রাফেল একটা বড় কেলেঙ্কারি। ইন্সিওরেন্স বড় কেলেঙ্কারি। চোরের মায়ের বড় গলা। কিভাবে টাকা লুঠ করছে। কিভাবে হয় এত টাকা। কত টাকা ওদের ছিল আর এই পাঁচ বছরে ওদের কত টাকা হয়েছে। শপিং মল পার্টি অফিস।মনে রাখবেন আপনারা কাউকে ছাড়েননি। রাজনীতিতে একটা সৌজন্যতা আছে। একটা লক্ষণ রেখা আছে। আপনি সেই রেখা লঙ্ঘন করেছেন।আপনি সোনিয়াজিকে ছাড়েননি। আপনি লালুজিকে ছাড়েননি। আপনি অখিলেশকে ছাড়েননি।আপনি মায়াবতীজিকে ছাড়েননি। আপনি আমাকেও ছাড়েননি। আপনি কাউকে ছাড়েননি তাহলে আপনাকে কেউ ছাড়া হবে? আপনার সাথে না থকলে তারা সকলেই চোর। আপনার সঙ্গে থাকলে সবাই সজ্জন মানুষ না হলে সবাই বদমাশ। বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ।”

আবহাওয়া বলাচ্ছে তাহলে বিজেপির কেন বদল হবে না?

“ভয় দেখাচ্ছে- এলাকায় এলাকায় ছবি নিয়ে-ইন্সিওরেন্স দিচ্ছি কে টাকা দিচ্ছি আমরা। ছবি বিলোচ্ছে বিজেপি। চাষির খাজনা দিতে হচ্ছে না ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না ইন্সিওরেন্স করে দেওয়া হয়েছে শস্যবীমা করে দেওয়া হয়েছে। সব বদলে দিচ্ছে ইতিহাস, ভূগোল সব কিছু। বাইরেও বদলাচ্ছে। আবহাওয়া পরিবর্তন হচ্ছে। তাহলে বিজেপির সরকার কেন বদল হবে না? এনআরসি-র নাম করে মানুষ নিধন। নর্থ-ইস্টে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট-এর উপর বিল করে তাদের উপর অত্যাচার। যা ইচ্ছে তাই চলছে। এসব বেশিদিন চলতে পারেনা। তাই কখনও কখনও মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।”-বলেন মমতা।

লালুপুত্র তেজস্বীকে অভয় দিলেন মমতা

মমতা বলেন- “বাংলাদেশের বিজয় হয়েছিল আর সেই বিজয় উৎসব পালিত হয়েছিল এই ব্রিগেডে। ইন্দিরা গান্ধী আর মুজিবর রহমান করেছিলেন। একটা সময় ব্রিগেডে র‍্যালি হয়েছিল। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু করেছিলেন। জয়প্রকাশ নারায়নের র‍্যালি হয়েছিল পাটনায়। একসময় অটলজি, জ্যোতিবাবুরা এই বাংলায় র‍্যালি করেছিলেন রাজীব গান্ধীর সরকার ফেলে দেবার জন্য। আমরা কিন্তু কেউ ফেলে দেওয়ার জন্য নয় কিন্তু আমরা মনে করি মানুষকে বিচার দেওয়ার জন্য। আজ যে এই জোট ইতিহাসের প্রয়োজনে তৈরি হয়েছে গাটবন্ধন। তেজস্বী ভাই তোমার ভয় পাওয়ার কারণ নেই। দেখো এক্সপায়ারি ডেট হয়ে যাওয়ার পর কে কোথায় যায়? আমরা এখানে মিটিং করছি আমি শুনেছি অনেক এজেন্সিকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দিল্লিতে ডেকে নেওয়া হয়েছে। এরপর কি করতে হবে তা ঠিক করার জন্য। সিবিআইকে আমরা কত সম্মান করি সেই সিবিআই-এর ইজ্জত নষ্ট করে দিয়েছে। সম্মান নশঠ করে দিয়েছে। অফিসাররা খারাপ নয়। সব অফিসাররা খারাপ নয়। আজকে ইডিকে বদনাম করেছে। সিবিআইকে বদনাম করেছে। আরবিআইকে বদনাম করেছে। এরপর আপনারা যদি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন ব্যাঙ্কে যে টাকা রেখেছে একটাও আর ফেরতও পাবেন না। আমাদের শ্রীজাত আসামে গেছিল কবিতা পাঠ করতে। তাকে চার ঘন্টা আটকে রাখা হয়েছিল।”

মমতার স্লোগান-অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন এবার বিজেপিকে বাদ দিন

বিজেপিকে নিয়ে নিজের ক্ষোভ উগরে মমতা বলতে থাকেন-“তোমরা যতই মিটিং করো না কেন বাংলায় একটা আসনও পাবে না। বিহারেও হবে না। উত্তরপ্রদেশেও হবে না। গুজরাটে হার্দিক ও জিঘ্নেষকে বলেন তোমার এগিয়ে যাও। আপাংজি পরশু বিজেপি ছেড়ে চলে এসেছেন। বিজেপির আর আচ্ছে দিন আসবে না। আপনাদের অনেক সুযোগ এসেছিল। কিন্তু আপনারা তা পরোয়াই করেননি। তাই বলি- অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন এবার বিজেপিকে বাদ দিন। অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন এবার দিল্লিতে বদল হতে দিন। অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন বিজেপিকে টোটাল ধরাশায়ী করে দিন। অনেক হয়েছে আচ্ছে দিন দেশভর বিজেপিকে শূন্য পেতে দিন।দেশকে এক রাখতে হলে শ্রমিককে ভালবাসায় রাখতে হলে বিজেপিকে রুখতেই হবে। ও এলে দেশের সর্বনাশ। ও গেলে দেশের পক্ষে মঙ্গল। কে প্রধানমন্ত্রী হবে সেটা এই মুহূর্তে বড় প্রশ্ন নয় বড় হল এই মুহূর্তে বিজেপির বিদায়। এই জন্মভূমি ভাগাভাগি পছন্দ করে না। ঘৃণা পছন্দ করে না, রক্ত নিয়ে হোলি খেলতে পছন্দ করে না। বিভেদ চায় না। আমরা জন্ম চাই মৃত্যু চাই না। আমরা সৃষ্টি চাই ধ্বংস চাই না। আমরা বিভেদ চাই না ঐক্য চাই। বেজেপি যেখানে মিটিং করবে সেখানে পদিন মিটিং করবেন।এভাবে ফ্যাসিস্ত কায়দায় কাউকে দেশ শাসন করতে দেখিনি।”

Published on: জানু ১৯, ২০১৯ @ ১৯:০৬


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 68 = 74