মায়াপুর ইসকন মন্দিরে শুরু হয়েছে দীপদান অনুষ্ঠান, কি এর ইতিহাস জানুন

Main দেশ ধর্ম ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: অক্টো ৩১, ২০২১ @ ২০:৫২

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৩১ অক্টোবর: এক মাস ধরে দীপদান অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে মায়াপুরে ইসকনের প্রধান কেন্দ্র চন্দ্রোদয় মন্দির সহ সারা বিশ্বের সমস্ত শাখা কেন্দ্রে। শ্রীশ্রী লক্ষ্মী পূর্ণিমার দিন ২০ অক্টোবর থেকে এই অনুশঠান শুরু হয়েছে , যা চলবে রাসপূর্ণিমা ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত। মায়াপুর ইসকন মন্দির থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই সংবাদ জানানো হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে যে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই দীপদান করতে পারবেন বিনামূল্যে। প্রতিদিন সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত এই অনুষ্ঠান চলবে।

মায়াপুর ইসকনের জন সংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস জানান- “ এই দীপদানের সঙ্গে চলবে দামোদরাষ্ট্রকম স্তোত্র পাঠ। দেশ বিদেশের হাজার হাজার মানুষ এতে অংশ নিয়ে থাকেন। পুরুষ এবং মহিলাদসের জন্য পৃথক লাইনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এ বছর অতিমহামারী কোভিড-১৯ এর কারণে শুধুমাত্র  সরকারি বিধিনিষেধ মেনে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এই অনুষ্ঠান করা হচ্ছে।

 দীপদান অনুষ্ঠান কি

ভগবানের প্রীতি  লাভের জন্য দীপদান করা হয়। দীপদান আলোর উৎসব, আনন্দের উৎসব, অন্ধকার দূরীভূত করার উৎসব, ঐক্যের উৎসব, মহামিলনের উৎসব। অন্ধকার দূর করে আমাদের মনোমন্দিরে প্রতিষ্ঠিত হোক আলোর দীপ। শুভ দীপদান অনুষ্ঠানে এই হোক আমাদের একান্ত প্রার্থণা- বলেন ইসকনের জন সংযোগ আধিকারিক রসিক গৌরাঙ্গ দাস।

কি এর ইতিহাস

সনাতন ধর্মে যত প্রকার উৎসব আছে তারমধ্যে দীপাবলী অন্যতম,। দীপাবলী কথাটির অর্থ দীপশ্রেণী বা দীপের আলি। এই উৎসব, দশেরার (বিজয়া দশমীর) ২০ দিন পর উদযাপিত হয়। ত্রেতাযুগে রাবনকে বধ করার পর ভগবান শ্রীরামচন্দ্র যখন অযোধ্যায় ফিরে এসেছিলেন, তখন অযোধ্যাবাসী রা তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য বিশেষ উৎসবের আয়োজন করেছিল। গোটা অযোধ্যা নগরীকে আলোকমালায় সজ্জিত করে বিভিন্ন নৃত্যনাট্য ও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল। তারই স্মরণে এই উৎসব। তাই আজও বিভিন্ন মন্দিরে, গৃহে, রাজপথে, শত শত ঘৃত, তৈল প্রদীপ, মোমবাতি জ্বালিয়ে এই উৎসব পালিত হয়।

এই  নিয়ে পৌরাণিক ঘটনাও আছে, জানুন

মায়াপুর ইসকনের জন সংযোগ আধিকারিক  রসিক গৌরাঙ্গ দাস এ প্রসঙ্গে তুলে ধরেন বেশ কিছু পৌরাণিক ঘটনাবলীর কথা। “ ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নরকাসুর বধ করেছিলেন। নরকাসুর ছিলেন পৃথিবীর পুত্র এবং তিনি ব্রহ্মা ও শিবের বরে এত শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন যে শুধু পৃথিবীই নয়, দেবতাদেরও পরাজিত করে স্বর্গলোকও অধিকার করেছিলেন। শ্রীকৃষ্ণ সত্যভামার সহায়তায় (ঐ সময় সত্যভামা শ্রীকৃষ্ণের রথের সারথি হয়েছিলেন) তাকে হত্যা করেন। নরকাসুরের মৃত্যুর পর মাতা ধরিত্রী ওই দিন বিশেষ উৎসব করার জন্য শ্রীকৃষ্ণকে অনুরোধ করেন। এইভাবে নরকাসুরের কবল থেকে পৃথিবী ও স্বর্গলোকের উদ্ধার বিজয়ীৎসব রূপে দীপাবলীর মাধ্যমে উদযাপিত হয়। এই উৎসব  ধসম্পদের অধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর প্রসন্নতাও বিধান করে। এই বিশেষ দিনটিতে যদি কারও গৃহ অন্ধকার থাকে তাহলে লক্ষ্মীদেবী সেখানে প্রবেশ করবেন না।ভক্তেরা লক্ষ্মীদেবীর পুজো করে থাকে যাতে তাদের গৃহ সমৃদ্ধশালী হয়, সকলে সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারেন।“

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দামবন্ধন লীলাবিলাস

কৃষ্ণভক্তেরা শুধু এই বিশেষ দিনটিই নয়, একমাস ধরে ভগবানের উদ্দেশ্যে দীপদান করে থাকেন। ভাগবতের বর্ণনা অনুসারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দামবন্ধন লীলাবিলাস ঘটনাটি হয় এই দীপাবলীর সময়। কৃষ্ণের দামবন্ধন লীলাকে স্মরণ করে এদিন সাড়ম্বরে নানা স্থানে মহোৎসব হয়। কোথাও আবার কার্তিক ব্দ্রত পালিত হয়। বর্তমানে সারা বিশ্বের কৃষ্ণভাবনামৃত প্রসারের ফলে প্রায় সমস্ত দেশের ইসকন মন্দিরে এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়ে আসছে। বলেন রসিক গৌরাঙ্গ দাস।

Published on: অক্টো ৩১, ২০২১ @ ২০:৫২


শেয়ার করুন