মমতাকে আক্রমণঃ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরাই তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে বললেন অমিত শাহ

দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: আগ ১১, ২০১৮ @ ১৮:০২

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ১১ আগস্টঃ কয়েকদিন আগে ঝাড়গ্রামের সভায় দাঁড়িয়ে বিজেপিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ ঠিক যেন তারই জবাব দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে।মমতা বন্দ্যোপাধায়ের শাসনকালে এ রাজ্যে অনুপ্রেবেশকারী ঢুকছে। এই বাংলাদেশি অনুপ্রবেসকারীরাই আজ তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে পরিণত হয়েছে বলে মারাত্মক অভিযোগ করেন অমিত শাহ।

অমিত শাহ বলেন, “কিছুদিন আগে সংসদে এনআরসি নিয়ে আলোচনা চলছিল। আর মমতাজি গোটা দিল্লিতে এনআরসি-র বিরোধিতা করার কাজ করেছেন। আমি পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে এনআরসি নিয়ে বলতে এসেছি যে এনআরসি হল আসাম থেকে বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া। আমি এখানে উপস্থিত লক্ষাধিক মানুষের কাছে জানতে চাই-আপনারা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বের করে দিতে চান না চান না? এরপরই তাঁর হুঙ্কার-মমতাজি এনআরসি আপনার আপত্তিতে থেমে থাকবে না, আপনি বিরোধিতা করুন, কংগ্রেস পার্টির নেতা রাহুল গান্ধী বিরোধ করুন না কেন এনআরসি আটকানো যাবে না। আমরা এর প্রক্রিয়া যথাযথ নিয়ম মেনে শান্তিতেই শেষ করব।”

“আমি মমতাজির কাছে জানতে চাইব আপনি কেন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের রাখতে চান? এই মমতাদিদি কিন্তু ২০০৫ সালে বলেছিলেন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী সিপিএমকে ভোট দেয়, এদের বের করে দেওয়া উচিত। আজ ওই বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ব্যাঙ্ক-এ পরিণত হয়েছে। মমতাজি আপনাকে ঠিক করতে হবে কংগ্রেস পার্টির সভাপতিকে ঠিক করতে হবে আপনারা দেশের সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেবেন নাকি দলের ভোট ব্যাঙ্ককে দেবেন। আগে ঠিক করুন। জানান দেশবাসীকে। আপনারা জেনে রাখুন ১৯৮৫ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী এই বিষয়টি করে গিয়েছিলেন। আর আজ নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক-এর জন্য রাহুল গান্ধী এর বিরোধিতা করে চলেছেন।” বলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি।

অমিত শাহ আরও বলেন,”আপনাদের কাছে আমি জানতে চাই, আপনারা জোরে জবাব দেবেন-এ রাজ্যে যে বোমাবাজি হচ্ছে, তা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা করছে না করছে না?তাদের বের করে দেওয়া উচিত না উচিত নয়? মমতাদি আপনাকে বলে রাখি, আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা। আমাদের কাছে দেশের সুরক্ষা আগে ভোটব্যাঙ্ক পরে আসে।” শরনার্থী বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি জানান,” এখানে তৃণমূল কংগ্রেস ভুল বার্তা ছড়াচ্ছে যে এনআরসি-র ফলে শরনার্থীদেরও ভাগিয়ে দেওয়া হবে। আমি তাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে ভারতীয় জনতা পার্টি সিটিজেন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল-২০১৬ বিল নিয়ে এসছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও হিন্দু শরনার্থীদের নাগরিকতা দেওয়ার সুযোগ আছে। কোনও শরনার্থীকে বের করে দেওয়া হবে না। শরনার্থীদের এখানে রাখা ভারত সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।আমি কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে জানতে চাই তারা সিটিজেন্স অ্যামেন্ডমেন্ট বিল-২০১৬ অনুসারে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দু শরনার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে সম্মত আছে কিনা তা ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে জানাক।”

সবশেষ অমিত শাহ বলেন,”বলা হচ্ছে অনুপ্রবেশকারীদের মানবাধিকারের কি হবে? আমি বলি-পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু, মুসলমানদের মানবাধিকারের কি হবে? তাদের রুটি-রোজি, কাজকর্মের কি হবে? এদের সব কিছু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী দখল করে নিচ্ছে। তা নিয়ে আপনাদের চিন্তা আছে না নেই? আপনাদের চিন্তা না থাকলেও আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকতাদের এনিয়ে চিন্তা আছে। যে অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে অনুপ্রবেশ জারি আছে, এটা যদি না রোখা যায় তবে পশ্চিমবঙ্গ সুরক্ষিত থাকবে না। আর এজন্য সবচেয়ে উপযুক্ত রাস্তা হল এনআরসি। এজন্য আসামে এনআরসি প্রক্রিয়া শান্তিতে শেষ করতে দিতে হবে। আপনারা জোরে বলুন-এনআরসি সমর্থন করেন না করেন না?”

Published on: আগ ১১, ২০১৮ @ ১৮:০২

 


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 1 =