শোনো ৩৮ বছর ডিউটি করছি। ইউনিফর্মটার দাম আছে। ফালতু ঝামেলা করবে না। দিলীপ, প্রদীপ, সুদীপ, রাম্বা,শাম্বা, জাম্বা কেউ বাঁচাতে পারবে না।
সংবাদদাতা-পরিতোষ সাহা
Published on: এপ্রি ২৬, ২০১৯ @ ২২:০৭
এসপিটি নিউজ, বোলপুর, ২৬এপ্রিল : ভোটের মুখে গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ল বোলপুর। শুক্রবার বিজেপির বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বোলপুর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের মকরমপুর এলাকা।সেখান থেকে নরেশ ঘোষ নামে এক বিজেপি নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। তবে টাকা বিলি নয়-আইসি-র কথা অনুযায়ী তাকে পুলিশ অফিসারকে মারধর করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের সঙ্গে সমানে জেরা করে গেল তৃণমূল নেতাও
1) তৃণমূলের থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল এই এলাকায় বিজেপি ভোটের জন্য টাকা বিলি করছে। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরই সেখানে চলে আসেন বোলপুর থানার আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী। তিনি অভিযোগ ওঠা সেই বিজেপি নেতা নরেশ ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন তুমি টাকা বিলি করেছো কিনা। এই কথার জবাবে নরেশ সাফ জানিয়ে দেয়- সে কোনও টাকা বিলি করে নি। পরিস্থিতি যখন এভাবে এগোচ্ছে ঠিক তখন সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা এক তৃণমূল নেতা চেঁচিয়ে উঠে ওই বিজেপি নেলাকে উদ্দেশ্য করে বলেন- তোমাদের পার্টি তো টাকা বিলি করছে। তুমি তো সেই টাকা দিচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে। তখন বিজেপি নেতা মেজাজ হারিয়ে সেও চেঁচাতে থাকেন- আমি কোনও টাকা বিলি করিনি। পাশে থাকা এক পুলিশ অফিসার এরপর বলেন- তাহলে যে তোমার বাড়ি থেকে যে ২০ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে সেই টাকা কোথা থেকে এল? সেই তৃণমূল নেতা একই সঙ্গে পুলিশের সাথে গলা মিলিয়ে বিজেপি নেতার কাছে জানতে চান। এই সময় আইসি বিজেপি নেতাকে বলেন-চলো, তুমি আমাদের সঙ্গে থানায়।
2) এই সময় বিজেপি নেতা নরেশ ঘোষ, বলতে থাকেন তাকে মিথ্যা অভিযোগে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এইসময় মেজাজ হারান বোলপুর থানার আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী। তিনি ওই বিজেপি নেতা নরেশ ঘোষকে উদ্দেশ্য করে হুমকির সুরে বলতে থাকেন- “শোনো! তুমি যত বড় পার্টি করো, তুমি কোন পার্টি করো আমি জানি না। পুলিশ অফিসার চেস করে টাকাটা পেয়েছে। আবার মিথ্যে কথা। তোমার কাছে কি কি পাওয়া গেছে, মিথ্যে কথা বলো না। দিলীপ ঘোষও বাঁচাতে পারবে না।তুমি জানো না, শোনো! ৩৮ বছর ডিউটি করছি। ইউনিফর্মটার দাম আছে। তোমার কাছ থেকে টাকা পাওয়া গেছে। শোনো, আমার এই অফিসারটা তাহলে মিথ্যা কথা বলছে! ফালতু ঝামেলা করবে না। দিলীপ, প্রদীপ, সুদীপ, রাম্বা,শাম্বা, জাম্বা কেউ বাঁচাতে পারবে না।”
এখানেই থেমে থাকেননি আইসি সঞ্জীব চক্রবর্তী। এরপর তিনি আরও সুর চড়িয়ে বলে ওঠেন- “টাকাটা তোমার কাছ থেকে পাওয়া যায় নি তো! ঠিক আছে, তোমার কাছ থেকে গাঁজাও পাওয়া যায়নি, তোমার কাছ থেক মদও পাওয়া যায় নি। কিছুই পাওয়া যায়নি। কিন্তু আমার অফিসারকে তুমি মেরেছো, এজন্য তোমাকে আমি অ্যারেস্ট করছি।” পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সেই তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে পুলিশ সহর্কর্মীদের জিজ্ঞাসবাদ করেন- “এই তো মেরেছে না!”
আইসি-র কথায় সম্মতি দিলেন তৃণমূল নেতা
3) আইসি তখন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক তৃণমূল নেতা থেকে শুরু করে আরও কয়েকজনকে সাক্ষী করেন। সেইসময় পাশে থাকা তৃণমূল নেতাকে বলতে শোনা যায় “তুমি মেরেছো, তুমি কেন মিথ্যে কথা বলছো। সেখানে উপস্থিত অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা চুপ থাকলেও সেই তৃণমূল নেতাকে সমানে উচ্চস্বরে বলতে শোনা যায়- তুমি অফিসারকে মেরেছ্ আবার মিথ্যা কথা বলছো। বিজেপি নেতাকে তখন পালটা বলতে শোনা যায়-আমি মারি নি স্যার। আমাকে কেন গ্রেফতার করছেন? এইসময় বিজেপি নেতাকে ধাক্কা মেরে গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায় পুলিশ।
Published on: এপ্রি ২৬, ২০১৯ @ ২২:০৭