‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’- তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমনাত্মক শুভেন্দু্র স্লোগান

Main দেশ রাজ্য
শেয়ার করুন

‘গর্ভধারিনী মা আর ভারত মাতা ছাড়া অন্য কাউকে মা বলতে পারব না’-শুভেন্দু অধিকারী

Published on: ডিসে ১৯, ২০২০ @ ১৮:১২

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ১৯ ডিসেম্বর:  প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুভেন্দু অধিকারী ভারতীয় জনতা পার্টিতেই যোগ দিলেন। যোগ দিয়েই মেদিনীপুরের সভা মঞ্চ থেকেই পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমনাত্মক বক্তব্য রাখলেন। আর এও জানিয়ে দিলেন যে তিনি বিজেপি পার্টিতে মাতব্বরি করার জন্য আসেননি। দলের নির্দেশ মতোই তিনি কাজ করবেন।তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানোই এখন তাঁর মূল উদ্দেশ্য। আর সেই কথা উল্লেখ করে দল ছেড়ে আসার কারণ ব্যাখ্যা করেন। সেই সঙ্গে তিনি সভা মঞ্চ থেকে স্লোগান তোলেন – ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।’

অমিত শাহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

বক্তব্য রাখতে উঠে শুভেন্দু বলেন-‘যে দল দেশপ্রেমের কথা বলেন যে দল বহুত্ববাদে বিশ্বাস করে যে দল গীতার- ‘বহুজন সুখায় বহুজন হিতায়’, বসুদেব কুটুম্বকম’ -এ মেনে চলে আমাকে সেই ভারতীয় জনতা পার্টিতে একজন প্রাথমিক সদস্য পদ দেওয়ায় আমি গর্বিত। আমি কৃতজ্ঞ আমার বড় ভাই দেশের আন-বান-শান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি।

কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সেইসময় কেউ খোঁজ নেয়নি

শুভেন্দু বলেন-“আমি যখন কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলাম সেইসময় আমি তৃণমূল কংগ্রেসেই ছিলাম। তখন দলের কেউ আমার খোঁজ নেয়নি। যে দলের হয়ে আমি ২১টা বছর কৃতদার হয়ে কাজ করে গেছি সেই দলের একজনও খোঁজ নেননি। অথচ আমার বড় ভাই এই অমিতশাহজি কিন্তু দু’বার ফোন করে আমার খোঁজ নিয়েছেন।

বহিরাগত ইস্যুতে সরব হলেন শুভেন্দু

“ইদানীং একটা কথা খুব শোনা যাচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস বলছে অমিত শাহজি বহিরাগত, কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত, শিবপ্রকাশজি বহিরাগত, অমিত মালব্য বহিরাগত? আরে কাদের আপনারা বহিরাগত বলছেন? আমি কয়েকদিন আগেই বলেছিলাম যে আমরা প্রথমে ভারতীয় তারপর বাঙালি। এই বহুত্ববাদ নষ্ট হতে দেব না। আমি মনে করি – বাংলা ও ভারতে এক সরকার থাকুক। অর্থিনীতি শেষ হয়ে গেছে। চার হাজার, দুই হাজার টাকার চাকরি নিয়ে ঘুরছে।এসএসসি-র নিয়োগ নেই। টেটের দুর্নীতি। এসবের থেকে বেরিয়ে আসতে হলে যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে বাংলাকে তুলে দিতে হবে। না হলে বাংলাকে বাঁচানো যাবে না।”

আমাকে বিশ্বাসঘাতক বলছে!ক্ষোভ উগরে দিলেন শুভেন্দু

“আমাকে বলছে বিশ্বাসঘাতক! যারা ‘৯৮ সালে ওতলজির আশির্বাদ না নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন না। তারা তাহলে কি? এই তৃণমূল কংগ্রেস ১৯৯৮ সালে তো এন্ডিএ জোটের শরিক ছিল। সেইসময় কাঁথি থেকে নীতিশ সেনগুপ্তকে জেতানোর ক্ষেত্রে আমাদের কোনও ভূমিকা ছিল না।” বলেন শুভেন্দু।

এবারেও আপনি দ্বিতীয় হবেন- শুভেন্দু

এদিনের সভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন- “কয়েকদিন আগে এই মেদিনীপুরের মাঠে দাঁড়িয়ে নেত্রী বলেছেন যে ‘আমরা কাঁথিতে লড়েছিলাম। দ্বিতীয় হয়েছিলাম। উদ্দেশ্য অধিকারীদের বাদ দিয়ে দ্বিতীয় হয়েছিলাম।’ আপনাকে বলে রাখি যে এবারেও আপনি দ্বিতীয় হবেন। প্রথম হতে পারবেন না।

‘গর্ভধারিনী মা আর ভারত মাতা ছাড়া অন্য কাউকে মা বলতে পারব না’

“তৃণমূলে থেকে অনেক কাজ করতে পারি নি। কেন্দ্রের একাধিক প্রক্লপ চালু করেনি। নাম বদলে নিজেদের নামে চালাচ্ছে। যেখানে আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই, সম্মান নেই সেখানে তাহকব না। এটাই আমাদের মেদিনীপুরের গৌরব। বলছে, মায়ের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আরে কে মা? মা তো একজন যিনি আমার জন্ম দিয়েছেন গর্ভধারিনী জন্মদাত্রী মা। গায়ত্রী অধিকারী হলেন আমার মা। অন্য কেউ আমার মা নয়। আর একজঙ্কে আমি মা বলে জানি। তিনি আমার দেশ। ভারত মাতা হলেন আমার আর এক মা। স্বামী বিবেকানন্দ সেকথা বলে গেছেন। তাই গর্ভধারিনী মা আর ভারত মাতা ছাড়া অন্য কাউকে আমি মা বলতে পারব না।” বলেন শুভেন্দু অধিকারী।

শুভেন্দু বলেন, এখন বলছি -‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’

বক্তব্যের একেবারে শেষে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন- “তৃণমূলের এক সহকর্মী গতাকাল তাকে একটা ভিডিও পাঠান। সেখানে আমি ২০১৯ সালের ভোটের সময় স্লোগান তুলেছিলাম- বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও। তা আমি তাকে বলেছিলাম যে আজ মেদিনীপুর কলেজ মাঠে সভা আছে। সেখানে আমি বিজেপি যোগ দেব। এখন আমি তৃণমূলে ছিলাম। এতা তখনকার সময়ের। শুভেন্দু অধিকারী যে দলে থাকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে। আজ বলছি- তোলাবাজ ভাইপো হঠাও।”

এদিনের মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে তাদের আশ্বস্ত করে বলেন- “শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে মাতব্বরি করতে আসতে আসেনি। দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের নেতৃত্বকে আশ্বস্ত করছি আগামিকাল থেকে আমি কাজে লেগে পড়ছি। দল যেভাবে আমাকে নির্দেশ দেবে আমি সেই মতোই কাজ করব। দল পতাকা লাগাতে বললে পতাকা লাগাবো। দেওয়াল লিখতে বললে দেওয়াল লিখবো। দলের নির্দেশ মতো কাজ করবো।”


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

77 − = 72