তালিকা প্রকাশ হতেই মেদিনীপুর-ঘাটালে দেওয়াল লিখনে হাত লাগালেন তৃণমূল কর্মীরা

রাজ্য লোকসভা ভোট 2019
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা– বাপ্পা মন্ডল

ছবি-বাপন ঘোষ

এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ১২ মার্চঃ একদিকে শক্ত চ্যালেঞ্জ। আর একদিকে জয়ের ব্যবধান কত হবে তা নিয়ে ভাবনা- এ সব নিয়েই শুরু হয়ে গেল তর্ক-বিতর্ক। সেই সঙ্গে দেওয়াল লিখন। মেদিনীপুর এবং ঘাটাল লোকসভা আসন দুটি নিয়ে অন্য সব দলের অনেক আগেই প্রচার শুরু দিল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের দামামা বাজার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবারই অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়ে, এবারেও তার ব্যতিক্রম ঘটলো না।

গতবার এই দুটি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিলেন। মেদিনীপুর আসনটিতে অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায় এবং ঘাটাল লোকসভা আসনে জিতেছিলেন দীপক অধিকারী ওরফে দেব। এবার ঘাটালের প্রার্থী অপরিবর্তিত থাকলেও পরিবর্তন হয়েছে মেদিনীপুরে। সেখানে এবার দাঁড় করানো হয়েছে বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ডা. মানস ভুঁইয়াকে।

মানস ভুঁইয়ার কাছে এবার নয়া চ্যালেঞ্জ

১) এবারের লোকসভা ভোটের লড়াই সব দিক থেকেই খুব তাৎপর্যপূর্ণ। যেখানে গতবার খুব সহজেই জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী সন্ধ্যা রায় সেখানে এবারে মানসবাবুর কাছে লড়াই কিন্তু অত সহজ হবে না। কারণ এই লোকসভার মধ্যেই পড়ছে খড়্গপুর শহর ও গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্র। যেখানে বিজেপির প্রভাব ইদানীং বেড়েছে। যদিও অন্য ছ’টি বিধানসভা আসন-মেদিনীপুর, খড়্গপুর শহর, খড়্গপুর গ্রামীণ, নারায়নগড়, দাঁতন, কেশিয়াড়ি ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা বিধানসভা আসনে তৃণমূলের সংগঠন খুবই মজবুত। তাই তৃণমূল কর্মীদের বিশ্বাস এবারেও এই আসনটিতে তাদের জয় নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই।

২) আর তাই ডা. মানস ভুঁইয়ার নাম নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করতেই দলের কর্মী-সমর্থকরা রং-তুলি হাতে রাস্তায় নেমে পড়েন। শুরু করে দেন দেওয়াল লিখন। এদিন মেদিনীপুর শহরে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মৌ রায়ের নেতৃত্বে দলীয় কর্মী-সমর্থরা দেওয়াল লিখন শুরু করেন। এই কেন্দ্রের অন্য ছ’টি আসনেও কর্মীরা  দেওয়াল লিখন শুরু করে দেন।

৩) মেদিনীপুর লোকসভা আসনে তাঁকে প্রার্থী করার জন্য মানসবাবু নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী বলে জানান। তবে এই আসনটিতে যে এবার তৃণমূল প্রার্থীকে বিজেপির শক্ত চ্যালেনগজের মুখোমুখি হতে হবে সেটা এক প্রকার নিশ্চিত মনে করছে এলাকার বাসিন্দারাই।

দেব বলেছিলেন- “দিদি প্রার্থী করলে আমি ফের ভটে দাঁড়াব”

১) ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে ঘাটাল আসনটিতে সিপিআই প্রার্থী সন্তোষ রানাকে সহজেই হারিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এখানে খাতা খুলেছিল। সেইসময়ের সঙ্গে এখনকার সময়ের অনেক পরিবর্তন ঘটে গেছে। সেবার লড়াই হয়েছিল বাম প্রার্থীর সঙ্গে। তবে এবার রাজ্যে নয়া শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। যদিও ঘাটাল লোকসভা আসনের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই বিজেপির তেমন একটা শক্তি নেই। তাই সেক্ষেত্রে লড়াই যে বামেদের সঙ্গেই হবে সেটা নিশ্চিত হয়ে গেছে মানুষের কাছে।

২) গত পাঁচ বছরে ঘাটালের জন্য দেব কাজ করে গেছেন। এমনকী মানুষের পাশে এসেও দাঁড়িয়েছেন। নানা ধরনের অনুষ্ঠানে তিনি হাজিরও থেকেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থেকে রাজনীতির পাঠ শিক্ষাও নিয়েছেন। শিখেছেন অনেক কিছু। সেই জন্য দলের কর্মীরাও পছন্দ করেন তাঁকে। সকলের সঙ্গে মেশেন খুব সহজে। তাই দেব প্রার্থী হওয়ায় খুশি ঘাটালের মানুষ।

৩) বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা প্রদান অনুষ্ঠানে এসে দেব সেদিন বলেছিলেন- “দিদি যদি আমায় প্রার্থী করেন তবে আমি ফের ঘাটালের মানুষের জন্য লড়ব। অসমাপ্ত কাজ শেষ করব।” তাই দেবের প্রার্থী হওয়ায় খুশি সকলে। দলের কর্মীরা তালিকা প্রকাশ হতেই দেওয়াল লিখন শুরু করে দেন।

৪) ঘাটালের বিধায়ক শংকর দলুই বলেন-গতবারের চেয়ে দেব এবার আরও বেশি ভোটে জয়ী হবেন।সেখানকার সাংসদ হিসেবে দেব সাতটি বিধানসভা এলাকাতেই ভাল কাজ করেছেন। কেশপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সঞ্জয় পান বলেন-“কেশপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দেব বেশি ভোট পাবেন। এখানে বিজেপি ফ্যাক্টর হবে না।”


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

+ 7 = 9