জমে উঠেছে বাঘের ‘কানামাছি’ খেলা, মগডালে বসে পাহারাদার দেখল বাঘ চলে যাচ্ছে অন্যত্র

বন্যপ্রাণ রাজ্য
শেয়ার করুন

সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল                                                                ছবি-রামপ্রসাদ সাউ

Published on: মার্চ ৩১, ২০১৮ @ ২১:০৮

এসপিটি নিউজ, লালগড়, ৩১ মার্চঃ রোজই একঘেয়ে বিষয় হয়ে যাচ্ছে। তাই এই একঘেয়ে বিষয়কে একটু অন্যভাবে পরিবেশন করার চেষ্টা করলাম। রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার বুঝে গেছে বনকর্মীদের দম। তাই এবার সে ঠিক করেছে ওদের সঙ্গে কখনও ‘টুকিটুকি’ খেলবে আবার কখনওবা ‘কানামাছি’। শুক্রবারের পর থেকে এই কানামাছি খেলা বেশ জমে উঠেছে। বাঘের উপর নজরদারি চালাতে বন দফতর বন সুরক্ষা কমিটির লোকজনকে কাজে লাগাতে শুরু করে দিল। জঙ্গলের ভিতর উঁচু গাছের মগডালে বসে তারা এ কাজ করল। দেখতেও পেল তারা বাঘটিকে। ব্যাস, ঐ পর্যন্ত।কারণ, বাঘটি তাদের দেখা দিয়েই দূরের জঙ্গলের ভিতর চলে গেল। তারা যখন বন দফতরকে ফোনে বাঘের খবর জানায় তখন বাঘটি ‘বাই বাই’ করে সেখান থেকে গায়েব হয়ে গেছে।

এখনও পর্যন্ত বন দফতরের সমস্ত পরিকল্পনাই ভেস্তে গেছে। এরমধ্যে শুক্রবার বাঘটি যেভাবে তাদের বোকা বানিয়েছে তারপর তো বন দফতরের দিকে প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। এ পর্যন্ত তাদের সব পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার পর তারা আবার এক নতুন পন্থা নিয়েছে। এবার তারা ঠিক করেছে বন সুরক্ষা কমিটির লোকজনকে বাঘের গতিবিধির উপর নজর রাখতে জঙ্গলে পাঠাবে। তাদের হাতে থাকবে সেল ফোন। জঙ্গলে    উঁচু গাছের মগডালে দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সেখানেই অপেক্ষা করবে। বাঘ আসলেই ফোনে তারা বন দফতরকে সেই খবর জানাবে।

সেই মতো শনিবার জঙ্গলের গাছের মগডালে বসে পাহারা দিচ্ছিলেন সুনির্মল মাহাতো, কমল মাহাতো সহ আরও অনেকেই। এদিন তারা বাঘও দেখেন। তারা লালগড়ের রাঙামেটার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়ে গাছের উপর অপেক্ষা করছিলেন।শুকনো পাতার উপর খসখস আওয়াজ শুনে তারা সতর্ক হয়ে যান। তারা দেখতে পান বাঘটি তাদের গাছের নিচে অনেক কাছে চলে এসেছে। কয়েক সেকেন্ড সেখানে থেকেই বাঘটি এক লাফে রাস্তার উপর গিয়ে দাঁড়ায়। তারপর বাঘটি ধীরে ধীরে চলে যায় পডিহার জঙ্গলের দিকে।

এখানে মজার বিষয় হল, বন দফতর যাদের দায়িত্ব দিয়েছে তারা তো নিজেরাই ভয়ে জুবুথুবু হয়ে পড়েছে। তারা বন দফতরকে খবর দেবে কি নিজেরাই তো বাঘের গতবিধি সচক্ষে দেখছে। বাঘটি আসছে, মানে পাতার খসখস শব্দ। এরপর বাঘটি ধীরে ধীরে গাছের নিচে এসে দাঁড়াল। তারপর বাঘটি লাফ মেরে পডিহার জঙ্গলের দিকে চলে গেল। এবার বন দফতরের কাছে ফোনটা গেল। এদের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে, ওই বাঘটি বোধ হয় ঐ লোকগুলির সঙ্গে কথা বলে নিয়েছে যে তোমরা আমাকে দেখো, আমি কি করছি। কোথায় যাচ্ছি। কিভাবে যাচ্ছি। কিভাবে হাঁটছি। আমি চলে গেলে তোমরা ফোনটা দিও।

আসলে এও এক ধরনের কানামাছি খেলা। বাঘটি যা ভালোই উপভোগ করছে তা কিন্তু বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর যদি এই বাঘটি আরও ভয়ানক হয়ে ওঠে তাহলে কিন্তু কারো কিছুই করার থাকবে না। তাই বন দফতরকে এখনই এই বাঘটি ধরার জন্য আরও বেশি দক্ষ লোকের সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। তেমনটাই মনে করছে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

Published on: মার্চ ৩১, ২০১৮ @ ২১:০৮


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

91 − = 82