চার রাজ্যে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গেল বিরোধীরা, পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টির কাছে ধরাশায়ী বিজেপি-কংগ্রেস

Main দেশ
শেয়ার করুন

Published on: মার্চ ১০, ২০২২ @ ২২:২০

এসপিটি নিউজ ব্যুরো:   রীতিমতো গেরুয়া ঝড়। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফলে চার রাজ্যেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল বিজেপি। সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল উত্তরপ্রদেশের ফলাফল। প্রায় ৩৫ বছর পর উত্তরপ্রদেশে কোনও দল টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এল- যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বে ফের ক্ষমতায় এল বিজেপি। একই সঙ্গে গোয়ায় টানা তিনবার ক্ষমতায় এসে জয়ের হ্যাটট্রিক করল তারা।একই সঙ্গে এবারের বিধানসভা ভোটে নিরাশ হতে হয়েছে কংগ্রেসকে। একমাত্র রাজ্য পাঞ্জাবে ক্ষমতায় থাকলেও নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে তাও হাতছাড়া হল। সেখানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় এল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।

উত্তরপ্রদেশ

এই রাজ্যের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়েছিল গোটা দেশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বাধীন বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে গত পাঁচ বছরে মানুষ সত্যিই কতটা কি পেয়েছে তারও একটা ফলাফল দেখতে চেয়েছিল রাজনৈতিক মহল। সমাজবাদী পার্টি এবারের নির্বাচনে খুবই আশাবাদী ছিল। কিন্তু বিজেপিও চুপ করে ছিল না। তারাও প্রধানমন্ত্রী মোদির জনপ্রিয়তা আর তাঁর উন্নয়ন্মুখী কাজকর্মের উপর ভরসা করে জনগণের উপর ভরসা করেছিল। অবশেষে আজ সকাল থেকে ছবিটা ধীরে ধীরে পরিষ্কার হতে শুরু করে। ৪০৩টি আসনের মধ্যে তারা ২৫০টিরও বেশি আসনে জয়ী হয়েছে। অখিলেশ যাদবের নেতৃত্বাধীন সমাজবাদী পার্টি ১০০টির বেশি আসন পেয়ে দ্বিতীয় আসনেই থেমে থাকতে হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদি উত্তরপ্রদেশের জয়কে অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য মনে করছেন। তিনি বলেছেন- উত্তরপ্রদেশে টানা দুইবার ক্ষমতায় কোনও দল আসে না, এমন ট্রেন্ড রয়েছে। কিন্তু এবার সেই ট্রেন্ড ভেঙে দিয়েছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী যোগীর কাজকর্ম মানুষকে ভরসা দিয়েছে। তাই তারাই বিজেপিকে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এনেছে।

উত্তরাখণ্ড

দেবভূমি উত্তরাখণ্ড নিয়েও বিজেপি আশাবাদী ছিল। তবে কংগ্রেসও এখানে ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে হাল ছাড়েনি। এখানেও খুব ভালো লড়াই হয়েছে। এই রাজ্যে বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মূলত কংগ্রেস। কিন্তু তারা এখানেও রীতিমতো ধরাশায়ী হয়েছে। মোট ৭০টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছে ৪৭টি। সেখানে কংগ্রেসেকে ১৯টি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। এখানেও বিজেপি টানা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এল।

গোয়া

এই রাজ্য নিয়েই বিরোধী দলগুলির উচ্ছ্বাস প্রথম থেকেই ছিল। বিশেষ করে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রথম গোয়া থেকে প্রার্থী দিয়েছিল। তারা শুধু বিজেপির বিরোধিতা করেনি একই সঙ্গে কংগ্রেসেরও বিরোধিতা করে। প্রার্থী দিয়েছিল শিবসেনাও। বিজেপি বিরোধীদের এই লড়াইয়ের সম্পূর্ণ সুযোগ নিয়েছে। বলা যেতে বিরীদের লড়াইয়ে পুরো ফল মিলেছে বিজেপির। টানা দ্বিতীয়বার গোয়ায় ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি। আর তৃণমূল কংগ্রেস কিংবা শিবসেনার মতো দলকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে।এখানে বিজেপি ২০টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে।এখানেও ১১টি আসন নিয়ে কংগ্রেসকে দ্বিতীয় স্থানেই থাকতে হয়েছে।

মণিপুর

উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য বিজেপির দখলেই ছিল। এবারের নির্বাচনে বিজেপি ফের তাদের ক্ষমতা ধরে রাখতে পেরেছে। এখানেও তারা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। এই রাজ্য নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি আশাবাদী ছিল। অবশেষে এই রাজ্যের মানুষ প্রধানমন্ত্রীকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। এখানেও মোট ৬০টি আসনের মধ্যে বিজেপি একাই পেয়েছে ৩২টি আসন। কংরেসের জুটেছে মাত্র পাঁচটি আসন।

পাঞ্জাব

এই রাজ্য নিয়ে বিজেপি, কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির ত্রিমুখী লড়াই ছিল প্রধান আকর্ষণ। এই একমাত্র রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। কিন্তু নির্বাচনের আগে এই রাজ্যে কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবিদার নিয়েও শুরু হয় মন কষাকষি। বিজেপি এখানে প্রথম থেকেই পিছিয়েছিল। কৃষক আন্দোলন নিয়ে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিল বিজেপি। এই আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কংরেসের ভূমিকায় সন্তুষ্ট ছিল না পাঞ্জাবের কৃষকরা। তবে আপ অর্থাৎ আম আদমি পার্টি এই আন্দোলকে সমর্থনই করেনি পাঞ্জাবের কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আর ভোটে এটাই ক্লিক করে যায়। পাঞ্জাবের মানুষ সম্পূর্ণ নতুন দল হিসেবে আপ-কে বেছে নেয়। ১১৭টি আসনের মধ্যে ৯২টি আসনে জয়ী হয়ে একক সংখ্যাগইরিষ্ঠতা নিয়ে প্রথমবার ক্ষমতায় এল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি।

Published on: মার্চ ১০, ২০২২ @ ২২:২০


শেয়ার করুন