একটি দুর্ঘটনা বদলে দিল জীবন, মাত্র ২০ বছর বয়সেই বিশ্বের ‘দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটর’ ভানুপ্রকাশ

Main দেশ শিক্ষা
শেয়ার করুন

সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াডের ২৩ বছরের পুরানো ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় এবং স্বর্ণজয়ী প্রথম এশিয়ান হয়ে উঠলেন হায়দ্রাবাদের ২০ বছর নীলকণ্ঠ ভানুপ্রকাশ।

Published on: আগ ২৭, ২০২০ @ ১২:০১

এসপিটি নিউজ ডেস্ক:  শুনলে মনে হবে এ এক গল্প ছাড়া আর কিছুই নয়।তবে গল্প হলেও তা সত্যি। একটি ছেলে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হল। পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক আকার নিয়েছিল যে তার বাঁচার আশা নিয়েও দেখা দিয়েছিল সংশয়। ট্রমাজনিত পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। সেই জায়গা থেকে একটি ছেলে ফিরে এল শুধু নয় সারা বিশ্বে রীতিমতো এক অনন্য রেকর্ড স্থাপন করে ফেলল। সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াডের ২৩ বছরের পুরানো ইতিহাসে প্রথম ভারতীয় এবং স্বর্ণজয়ী প্রথম এশিয়ান হয়ে উঠলেন হায়দ্রাবাদের ২০ বছর নীলকণ্ঠ ভানুপ্রকাশ। অর্জন করলেন বিশ্বের ‘দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটরে’র সম্মান।

রূপ নয় গুনেই বাজিমাত

জীবন মানুষকে কোথায় নিয়ে যায় কেউ তা বলতে পারে না। আজ যা আছে কাল তা নাও থাকতে পারে। আর তেমনই এক পরিচয় মিলেছে হায়দ্রাবাদের এই যুবকের মধ্যে।যখন তার মাত্র পাঁচ বছর বয়স, ভানুপ্রকাশের পরিবারের সদস্যরা নিশ্চিত করেছিলেন যে ছেলে যেন আয়নার মুখোমুখি না হয়। সন্তানের বিকৃত চেহারা যেন তাকে হতাশায় ফেলে না দেয় তা নিশ্চিত করার জন্য এটি করা হয়েছিল। সারা বছর বাচ্চাকে ঘরে আটকে রাখার জন্য, তারা আরও একটি কাজ করেছিল, তারা তাকে ধাঁধা জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। অথচ পরিণতি কেমনভাবে আজ ভানুপ্রকাশের পক্ষে চলে গেল দেখুন- পনেরো বছর পরে সেই ভানুপ্রকাশ স্বর্ণপদক জিতেছে এবং বিশ্বের দ্রুততম মানব ক্যালকুলেটর খেতাবও ‘অর্জন করেছে।

দুর্ঘটনায় বেঁচে না থাকলে আজ আমি আমি এখানে থাকতাম না-ভানুপ্রকাশ

এখানেই শেষ নয়, আরও আছে। খোদ ভানুপ্রকাশ নিজে বলেছেন- “দুর্ঘটনার জন্য যদি আমি বেঁচে না থাকতাম তাহলে আজ আমি আমি এখানে থাকতাম না।”

এরপর সেই কথা নিজের মুখেই জানিয়েছেন তিনি। তাঁর নিজের কথায়,  বাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় একটি বাসের সাথে সংঘর্ষে তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন। সে সময় তিনি একটি ট্রমাজনিত পর্যায়ে চলে গিয়েছিলেন। মাথার বড় আঘাতের চিহ্ন নিয়ে রক্তাক্ত খুলি নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। সত্তরটি সেলাই হয়েছিল মাথায়।এরপর তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেদিনের সেই দুর্ঘটনায় আহত হওয়া ভানুপ্রকাশ রচনা করলেন বিশ্বে এক নয়া ইতিহাস। সম্প্রতি লন্ডনে অনুষ্ঠিত মাইন্ড স্পোর্টস অলিম্পিয়াডে মেন্টাল ক্যালকুলেশন ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জিতেছেন ভানুপ্রকাশ, যা কোনও ভারতীয় হিসেবে তো বটেই এশিয়ান হিসেবেও প্রথম।

বাচ্চাদের গণিতের প্রতি প্রেম তৈরি করাই লক্ষ্য

গণিতবিদ প্রয়াত শ্রীনিবাস রামানুজামের অনুসারী, ভানুপ্রকাশ তাঁর দক্ষতা প্রয়োগ করে দেশের লক্ষ লক্ষ শিশুদের কাছে পৌঁছানোর মহৎ লক্ষ্য নিয়েছেন।তিনি বলেন- “আমি দেশে গণিত ফোবিয়া নির্মূল করতে চাই।” হায়দরাবাদে ৩০ টি দল নিয়ে ভানুপ্রকাশ একটি স্টার্টআপ চালান, ইনফিনিটিগুলির অন্বেষণ করেন। এই স্টার্টআপটির লক্ষ্য হল পরীক্ষামূলক পদ্ধতি এবং ভিজ্যুয়ালাইজেশন ক্রিয়াকলাপগুলির মাধ্যমে বাচ্চাদের গণিতের প্রতি প্রেম তৈরি করা।

অল্প বয়সে অনেক শিশু গণিতকে ভয় করে। এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জবাব দেন, “স্কুলে স্কুলে প্রথম অঙ্কিত পাটিগণিত পড়ানো হয় এবং যেহেতু প্রচুর হিসাব-নিকাশ হয়, তাই শিক্ষার্থীরা এটি ঘৃণা করে।” কিছুটা হলেও বিষয়টির প্রতি অপছন্দের জন্য তিনি বর্তমান পাঠ্যক্রমকে দায়ী করেন।

Published on: আগ ২৭, ২০২০ @ ১২:০১


শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

56 − = 55