
Published on: আগ ২৭, ২০১৮ @ ১৬:০৯
এসপিটি নিউজ ডেস্কঃ জর্জ ও এমিলি ব্র্যাডম্যানের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান।অপর ভাই-বোনেরা হলেন ভিক্টর এবং ইসলেট, লিলিয়ান ও এলিজাবেথ মে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়ালসের কুটামুন্ড্রায় ১৯০৮ সালের ২৭শে আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। গুগল আজ তাঁর ১১০তম জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলী জানাল।
ছোট থেকেই ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং অনুশীলন বাড়তে থাকে। নিজে একাকি ক্রিকেট খেলা তিনি আবিস্কার করেছিলেন। গলফ বল আর ব্যাট এবং স্ট্যাম্প দিয়ে খেলা শুরু করেছিলেন। জলের ট্যাঙ্ক, দাঁড়িয়ে থাকা ইটের স্তূপাকৃতি পাহাড় বিশেষ, বাড়ির পিছনের জায়গাই ছিল তাঁর ক্রিকেট খেলার জায়গা।এইভাবেই তিনি ক্রিকেট অনুশীলন করেছেন ছোটবেলায়। মাত্র ১২ বছর বয়সেই জীবনের প্রথম সেঞ্চুরি করেন ব্র্যাডম্যান।বাউরাল পাবলিক স্কুলের হয়ে মিট্টাগং হাই স্কুলের বিরুদ্ধে অপরাজিত ১১৫রান করেছিলেন তিনি।
১৯২০-২১ সালে ব্র্যাডম্যান স্থানীয় বাউরাল দলের হয়ে খেলেন। ১৯২০ সালের অক্টোবরে কাকা জর্জ হোয়াটম্যানের অধিনায়কত্বে অভিষেক ম্যাচে অপরাজিত ৩৭ ও ২৯ করেছিলেন।সেইসময় বাবার সঙ্গে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পঞ্চম অ্যাসেজ টেস্ট ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন। বাবাকে বলেছিলেন-” যতক্ষণ পর্যন্ত আমি এই মাঠে খেলতে পারছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমি নিশ্চিত হব না।” ১৯২২ সালে ব্র্যাডম্যান স্কুল ছেড়ে একজন স্থানীয় রিয়াল স্টেট এজেন্টের হয়ে কাজ করেন যিনি ব্র্যাডম্যানকে খেলের প্রতি উৎসাহিত করে গিয়েছেন।
বাউরাল টিমে ব্র্যাডম্যান নিজের জায়গা পাকা করে নিয়েছে। একের পর এক নজরকাড়া পারফরম্যান্স করে এই বিস্ময়কর বালক। নজরে এসেছে সিডনি ডেইলি প্রেসের। বোরাল তখন গ্রামীণ এলাকায় বের্যিমা প্রতিযোগিতায় খেলছে। উইঙ্গেল্লোর বিরুদ্ধে ম্যাচ। যে টিমে খেলছে ভবিষ্যতের টেস্ট বোলার বিল ওরিলি।ব্র্যাডম্যান করলেন ২৩৪। মোজ ভেলের বিরুদ্ধে ফাইনাল ম্যাচ। রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচ। কি হবে? সবাই তাকিয়ে ব্র্যাডম্যানের দিকে। মাঠে নামলেন ব্র্যাডম্যান। তাঁর নামের পাশে জ্বলজ্বল করছে স্কোর ৩২০ নট আউট।
১৯২৬ সাল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যাসেজ সিরিজ হেরে পর্যুদস্ত অস্ট্রেলিয়া। একের পর এক খেলোয়াড় অবসর নিচ্ছেন। নিউ সাউথ ওয়ালস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন নতুন প্রতিভা খোঁজার কাজ শুরু করল। তাদের বাউরালের হয়ে ব্র্যাডম্যানের বড় স্কোরের কথা মাথায় আছে। তারা চিঠি লিখল। ব্র্যাডম্যানকে সিডনিতে অনুশীলনে যোগ দিতে বলা হল। তিনি পছন্দ করতেন “কান্ট্রি উইক” প্রতিযোগিতায় খেলতে। সেন্ট জর্জের হয়ে তিনি ১৯২৬-২৭ সালে সিডনিতে খেললেন।অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি ১১০। সেইসময় প্রতি শনিবার ব্র্যাডম্যান বাউরাল থেকে সিডনি পর্যন্ত ১৩০কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেন্ট জর্জের হয়ে খেলতে আসতেন। এতটাই ক্রিকেট খেলার প্রতি তাঁর ভালোবাসা, টান ছিল।
পরের মরশুমে নিউ সাউথ ওয়ালসে আনফিট আর্কি জ্যাকসনের জায়গায় নিয়ে আসা হয় ব্র্যাডম্যানকে। অ্যাডিকেড ওভালে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় তাঁর। শুরুতেই সেঞ্চুরি করে ব্র্যাডম্যান নিজের জাত চিনিয়ে দেন। ১১৮ রানের ইনিংসে তাঁর অসামান্য ফুটওয়ার্ক, আত্মবিশ্বাস, সমানে রান নেওয়ার খিদে বুঝিয়ে দিয়েছিল এই ছেলে লম্বা রেসের ঘোড়া। ক্রিকেটের ময়দানে কিছু করার জন্য এসেছে। ফাইনালে সেফিল্ড শিল্ড চ্যাম্পিয়ন ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি হাকান।
১৯ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে একের পর পারফর্ম করে যাচ্ছিলেন বাউরালের বিস্ময় বালক। ১৯২৮-২৯ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ দলে ডাক পান ব্র্যাডম্যান। কিন্তু ম্যাচ হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। ব্র্যাডম্যান করেন ১৮ ও ১। পরের ম্যাচে দল থেকে বাদ দেওয়া হয় তাঁকে। দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি দলে থাকেন। দ্বিতীয় টেস্টেও হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। তৃতীয় টেস্টে ফের ডাক পান ব্র্যাডম্যান। স্কোর ৭৯ ও ১১২। সবেছে অল্পবয়সী খেলোয়াড় হিসেবে সেঞ্চুরি করার অনন্য নজির গড়েন তিনি। চতুর্থ টেস্টও হারে অস্ট্রেলিয়া।
Published on: আগ ২৭, ২০১৮ @ ১৬:০৯