সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-রামপ্রসাদ সাউ
Published on: ফেব্রু ১২, ২০১৮ @ ১৫:১৮
এসপিটি নিউজ, বেলদা, ১২ফেব্রুয়ারিঃ সময় যে থেমে থাকে না। এটা যে মানুষ কবে বুঝবে! শুধু তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ঘটে গেল কত বড় বিপদ। তা সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে কন্যাহারা পিতাকে।চলন্ত ট্রেন থেকে লাফ মেরে নিজে নেমে গেলেও পারল না তার মেয়ে। চলে গেলে চাকার তলায়। খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে গেল ১৬ বছরের এক তরতাজা কিশোরীর দেহ।
ওড়িশ্যার বালেশ্বরে বাবার সঙ্গে আত্মীয়ের বাড়ি গেছিল ১৬ বছরের রুমি ভুঁইয়া। কে জানত, তার জন্য এমন বিপদ অপেক্ষা করে আছে। এই বিপদ যদিও নিজে থেকে আসেনি। ঐ কিশোরীই কিন্তু বিপদ জেনেও ঝুঁকি নিয়েছিল। আর তারপর সব তো অন্ধকার।
ঐ কিশোরীদের বাড়ি জলেশ্বরের কোমরদাতে। বাড়ি ফেরার জন্য বাবার সঙ্গে চেপে বসেছিলেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে। কিন্তু তারা না জেনেই উঠে পড়েছিলেন এই দূরপাল্লার ট্রেনে।যখন উঠে জানতে পারলেন ট্রেন জলেশ্বরে দাঁড়াবে না, তখন তাদের চিন্তা শুরু হয়ে যায়।তাহলে কি হবে? মনের মধ্যে শুরু হয়ে যায় এক অস্থিরতা। যে অস্থিরতা থেকে শুরু হয় বিপদের হাতছানি। ফলে রুমি ও তার বাবা ঠিক করে ফেলে সামনে যদ কোথাও ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়ে তাহলে সেখানেই তারা নেমে পড়বে। কিন্তু ট্রেন তো ছুটছে।
বেলদা স্টেশনের কাছে আসার পর ট্রেন তখন সবে মাত্র গতি কমিয়েছে। তাও খুব অল্প সময়ের জন্য। রুমিরা ভাব ল এটাই তাদের কাছে শেষ সুযোগ। যেমন ভাবা তেমন কাজ। প্রথমে রুমির বাবা ঝাপ মেরে নেমে পড়লেন। এরপর রুমির পালা। সে ভাবছে কিভাবে নামবে। ভাবতে ভাবতেই গতি বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে ট্রেনটি। রুমি দেখল, বাবা নেমে গেছে আমি নামতে না পারলে কি হবে। এই ভেবে মারল ঝাঁপ।কিন্তু সেই ঝাঁপ হয়ে উঠল রুমির জীবনের মরণ ঝাঁপ। চোখের সামনে বাবা দেখল নিজের মেয়ের মুর্মান্তিক এক মৃত্যু।
দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে সেই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। সবই চলছে তার নিজস্ব নিয়মে। শুধু নিয়মের বাইরে চলে গেছে একটি তরতাজা জীবন। শুধু সময়ের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পারার খেসারত। দিতে হল তাড়াহুড়ো করার কঠিন মাশুল।
মুহূর্তের মধ্যে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে গেল বাবার প্রিয় কন্যাসন্তানের দেহটি। বাবার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে জলের ধারা। ডাকছে মেয়ের নাম ধরে।নির্জন বেলদা স্টেশন সাক্ষী হয়ে রইল এক মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটনার।
Published on: ফেব্রু ১২, ২০১৮ @ ১৫:১৮