কলকাতায় সংক্রান উৎসব উদযাপন করল ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড, অতিথিদের অভিনব অভ্যর্থণা

Main দেশ বিদেশ ভ্রমণ রাজ্য
শেয়ার করুন

Published on: এপ্রি ৮, ২০২২ @ ২৩:৫৩
Reporter:Aniruddha Pal

এসপিটি নিউজ, কলকাতা, ৮ এপ্রিল:  আর ক’দিন বাদেই আমাদের মতো থাইল্যান্ডেও বর্ষবরণ উৎসব। আজ তারই সূচনা হল সংক্রান উৎসব উদযাপনের মধ্য দিয়ে। আমন্ত্রিত অতিথিদের শুদ্ধ জল দিয়ে হাত ধুইয়ে দিয়ে জুইঁ ফুলের মালা পরিয়ে থাই ফুড দিয়ে অভ্যর্থণাও জানানো হল। একই সঙ্গে থাইল্যান্ড পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিল কোভিড পরিস্থিতির পর ধীরে ধিরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে থাইল্যান্ড। ইতিমধ্যে ভারতও তাদের আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবার দুয়ার খুলে দিয়েছে। এর ফলে পর্যটনের সম্ভাবনা দুই দেশের মধ্যে বেড়ে গিয়েছে।

কলকাতায় ওবেরয় গ্র্যান্ড হোটেলে আয়োজিত সংক্রান উৎসব

শুক্রবার কলকাতায় ওবেরয় গ্র্যান্ড হোটেলে আয়োজিত সংক্রান উৎসব উদাযপন ঘিরে আগ্রহহ ছিল তুঙ্গে। কোভিড পর্বর্তী সময়ে পর্যটন শিল্প নতুন করে মাথা তুলে দাঁড়াতে শুরু করেছে। দুই বছর আগেও যেখানে কলকাতা থেকে বহু পর্যটক ব্যাঙ্কক গঝুরতে কিংবা কাজে যেতেন সেই সেই প্রবণতাকে বজায় রাখতে কিংবা ফিরিয়ে আনতে সব রকমের প্রয়াস নিচ্ছে থাইল্যান্ড। এদিনের অনুষ্ঠানে থাইল্যান্ডের পক্ষে সকলেই সেকথা স্মরণ করেন।পর্যটনে উৎসাহ দিতে এদিন এক লাকি ড্র-এর আয়োজনও করা হয়।তবে দিনের অনুষ্ঠানে মূল আকর্ষণ ছিল সংক্রান উৎসব উদযাপন। যেখানে তারা অতিথিদের শুদ্ধ জলে হাত ধুইয়ে ফুলের মালা গলায় পরিয়ে বরণ করেন। এরপর সব শেষে দুপুরের আহারের ব্যবস্থা করেন। যা ছিল সত্যিই অভিনব।

খাবারের আয়োজনেও ছিল অভিনবত্ব

এদিনের অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য খাবারের বিপুল আয়োজন, যেখানে ছিল থাই খাবারের ছোঁয়া।সবার প্রথমে ছিল ‘টম ইয়াম’ যা কিনা স্পাইসি স্যুপ- যাতে ছিল লেমনগ্রাস, লাইম, লঙ্কা দিয়ে তৈরি ভেজ ও নন-ভেজ। এরপর ছিল ‘পর পিয়া ফ্যাক’-ভেজিটেবল স্প্রিং রোল, ‘মন হরোপ্পা’-আলু ভাজা, ‘নাম প্রিক প্ল্যা’-মাছ ভাজা, ‘স্তায় কই’-চিকেনের আইটেম, ‘ফ্যাক ক্র্যাথিয়াম’, ‘ফ্যাক বুং’, ‘তাও হু ইয়াং’, ‘কায়েং কিউ ওয়াং ফ্যাক’, ‘বান থাই প্ল্যা লুয়াং’, ‘ক্র্যাপৌ কই’, ‘ফ্যাড থাই’, ‘স্টিম রাইস’, ‘ট্যাব তিম সামসি’, সব শেষে আইস্ক্রিম স্যান্ডউইচ।

সংক্রান উৎসবে জলের তাৎপর্য

ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড-এর পক্ষে অনুষ্ঠানের শুরুতে পিঙ্কি অরোরা সংক্রান উৎসবের তাৎপর্য তুলে ধরেন। বলেন- “সংক্রান থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত উৎসব। বৌদ্ধ ক্যালেন্ডারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, এই জল উৎসব ঐতিহ্যবাহী থাই নববর্ষের সূচনা করে। সোংক্রান নামটি একটি সংস্কৃত শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘উত্তীর্ণ হওয়া’ বা ‘কাছে যাওয়া’।“ তিনি আরও বলেন- “জল  সংক্রানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে যখন জল নিক্ষেপ বার্ষিক উদযাপনের একটি বিশাল অংশ হয়ে উঠেছে। আপনি যদি এই সময়ের মধ্যে থাইল্যান্ডে যান, স্প্ল্যাশ হওয়ার জন্য প্রস্তুত! মানুষের ভিড়ে বালতি ভর্তি জল ছুঁড়ে, জলের পিস্তল ব্যবহার করে এবং আশেপাশের যে কাউকে সাধারণত ভিজিয়ে দেয়। পরিবারের প্রশংসা উৎসবের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, অনেক থাই মানুষ বয়স্ক আত্মীয়দের সাথে সময় কাটানোর জন্য তাদের নিজ শহরে চলে যায়। বৌদ্ধরা সোংক্রান জুড়ে মন্দিরগুলিও পরিদর্শন করে যেখানে শ্রদ্ধার চিহ্ন হিসাবে বুদ্ধের মূর্তি এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদের হাতে জল ঢেলে দেওয়া হয়।“

থাইল্যান্ড পর্যটনের ক্ষেত্রে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবে-থাই কনসাল জেনারেল

এদিন কলকাতায় র‍্য্যাল থাই কনস্যুলেটের কন্সাল জেনারেল অচরাপন ইয়াভাপ্রাপাস থাইল্যান্ড সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন- আজ আমরা এখানে মিলিত হতে পেরে খুবই আনন্দিত। বিশেষ করে দুই বছর পর ফের নতুন করে আমরা এই উৎসব উদযাপন করতে পারছি। ইতিমধ্যেই ভারত সরকার গত ২৭ মার্চ থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা পুনরায় চালু করেছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে পর্যটনের যোগসূত্র পুনরায় সুদৃঢ় হচ্ছে। আমরা মনে করি যে কোভিড পর্বর্তী সময়ে পর্যটন শিল্পে ফের গতি আসবে। েটা আমাদের দেশের পক্ষেও এক শুভ লক্ষণ। বহু দেশ ইতিমধ্যে বুস্টার ডোজ চালুন করেছে যার মধ্যে অবশ্যই থাইল্যান্ড ও ভারত রয়েছে। ২০১৯ সালে ২ মিলিয়ন ভারতীয় ভ্রমণার্থী থাইল্যান্ড গিয়েছিলেন। কলকাতা বিমানবন্দরও এক বড় ভূমিকা পালন করেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি ভিজিট করেছে ফুকেট, ব্যাঙ্কক। আমি খুশি যে এখন ভ্রমণার্থীদের আর দীর্ঘ সময়ের জন্য কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে না, শুধু আরটি-পিসিআর টেস্ট করালেই হবে। কলকাতায় রয়্যাল থাই কন্স্যুলেট ও ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড সবসময় আপনাদের পাশে রয়েছে। থাইল্যান্ড সম্পর্কে যে কোনও রকমের প্রশ্নের জবাব পেতে পাওনারা অবশ্যই যোগাযোগ করতে পারেন। আমি আশা করব, এভাবেই থাইল্যান্ড পর্যটনের ক্ষেত্রে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবে।”

পর্যটনের ক্ষেত্রে আরও সুযোগ হবে

ভারতে ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ডের ডাইরেক্টর ভাচিরাসাই সিরিসুমপান বলেন- “আমরা খুশি যে থাইল্যান্ড আবার আগের মতো পর্যটনের জায়গা তৈরি করছে।আগামী মাস থেকে পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। পর্যটনের ক্ষেত্রে আরও সুযোগ হবে।”

Published on: এপ্রি ৮, ২০২২ @ ২৩:৫৩


শেয়ার করুন