সংবাদদাতা-বাপ্পা মণ্ডল ছবি-বাপন ঘোষ
Published on: জুন ৬, ২০১৮ @ ২২:১১
এসপিটি নিউজ, মেদিনীপুর, ৬জুনঃ আগামিদিনে তিনি মানুষের সেবা করবেন। রোগীর প্রতি যে কর্তব্য যে দায়িত্ব থাকা উচিত তা তিনি এখন থেকেই পালন করা শুরু করে দিয়েছেন। “সবার উপর মানুষ সত্য তাহার উপর নাই” এই কথাকে তিনি নিজের জীবনেই পালন করে দেখালেন-এটাই আমাদের দেশ ভারতের প্রকৃত ছবি। এক মুমূর্ষু মহিলাকে রক্ত দিয়ে মানবতার এক অনন্য নজির গড়লেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাজির হাসান।
রক্ত দান করে সেই মহিলার জীবন বাঁচালেন তিনি এমন এক সময় যখন তিনি রোজা পালন করছিলেন। মুমূর্ষু ওই মহিলার জন্য রোজা ভেঙে রক্ত দিলেন। তাঁর এমন কাজকে সকলেই তারিফ করছেন। অনেকেই বলছেন এটাই ভারতের আসল ছবি। সারা পৃথিবীতে ভারত একমাত্র দেশ যেখানে বৈচিত্র্যের মধ্যে আছে ঐক্য। নাজির সেই নজির গড়ে তারই প্রমাণ দিলেন।
জানা গেছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সৌভিক সিংহের মা বুলু সিংহ জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু ক্রমেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিস্থিতি জটিল আকার নিতে থাকায় চিকিৎসকরা চটজলদি তাঁকে সিসিইউ-তে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। দেখা যায় তাঁর রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমান কমতে শুরু করেছে।সেই সময় দুই ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়।রোগীর রক্তের গ্রুপ আবার বি নেগেটিভ। যা পাওয়া খুব সমস্যা। এই গ্রুপের রক্ত সচরাচর মেলে না।
শুরু হয়ে যায় রক্তের গ্রুপের খোঁজ। এই কথা কানে যায় চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাজির হাসানের।এক মুহূর্ত না ভেবে রক্ত দিতে এগিয়ে আসেন নাজির। তিনি এক ইউনিট রক্ত দেন। আর এক ইউনিট রক্ত দেন নাজিরের বন্ধু নির্মাল্য রায়।রক্ত দেওয়ার পর পুষ্টিকর খাবার খেতে হয়। স্বাভাবিকভাবেই নাজিরকে তাই রোজা ভাঙতে হয়।
নাজির নিজে অবশ্য বিষয়টিকে একদমই গুরুত্ব দিতে রাজি নন l বললেন, “এ আর এমন কি, মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়ে ডাক্তারি পড়ছি। রক্ত দেওয়া আমার সামাজিক দ্বায়িত্বের মধ্যে পরে। তাই রক্ত দিয়েছি, মঙ্গলবার রক্ত দেওয়ার জন্য রোজা ভাঙতে হয়েছে। বুধবার থেকে আবার রোজা রেখেছি l”
তিনি বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিতে না চাইলেও কলেজের প্রতিটি মানুষ তাঁর এই মানবিক কাজের প্রশংসা করছেন। কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ পঞ্চানন কুন্ডু বললেন, “নাজির সম্প্রীতি ও মানবতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল l” সত্যিই যে নজির গড়লেন নাজির।
Published on: জুন ৬, ২০১৮ @ ২২:১১